মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কি এভাবেই ঘটতে থাকবে?

উপ-সম্পাদকীয়

| প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আফতাব চৌধুরী : খবরে  প্রকাশ, গেল ৩ বছরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ হাজার ৭২৯ জন নিহত এবং ২২ হাজার ১৯২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়েই আছেন। তাদের মধ্যে অনেকেরই আবার আয়ের কোন উৎস নেই। তাই বাধ্য হয়ে তারা ভিক্ষা করে পরিবার-পরিজনকে কোন মতে চারটে ভাতের ব্যবস্থা করে চলেছে। কেউবা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
নিরাপদ সড়ক চাই এর স্মরণিকা প্রকাশ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। আলোচনা সভায় তারা ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ, দোষীদের শাস্তি ও চালক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। সমাবেশে আলোচনাকালে ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়,’ স্লোগান সামনে রেখে আলোচনায় বক্তরা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান। তারা বলেন, শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর দেশে যে মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে তা নয় আর্থিক দিক দিয়েও দেশের প্রভুত ক্ষতি হচ্ছে। প্রধান অতিথি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবি দলমত নির্বিশেষে সবার। এখানে বিভেদের সুযোগ নেই। তিনি সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথি বলেন, ২৪ বছর  থেকে নিসচা চিৎকার করছে, আইন তৈরি কর, শক্ত আইন বানাও। ২০১২ সালে আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। কিন্তু চার বছর পরও এর বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি বলেন, ২৪ বছরে একটি দুর্ঘটনা ছাড়া অন্য কোনো দুর্ঘটনার জন্য দোষীরা শাস্তি পাননি। দুর্ঘটনা হ্রাসে তিনি চালকদের প্রশিক্ষণের জোর দেন।
এটা সত্য, দেশের কোন না কোন স্থানে প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। সংবাদপত্রে যেসব দুর্ঘটনার খবর প্রকাশিত হয় তার বাইরেও অনেক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষত প্রত্যন্ত এলাকায় যেসব সড়ক-দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় তার সব কটির খবর সংগ্রহ করা এবং সংবাদপত্রে প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। বস্তুত, দূরপাল্লার সড়ক পথে এবং বিশেষত হাইওয়েতে আর রাজধানী নগরীসহ দেশের বিভিন্ন শহর/বন্দরে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে থাকে, প্রধানত সেসবের খবর সংবাদপত্রে ও অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে প্রচার পেয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ও ছোট-বড় সড়কপথে প্রায় প্রতিদিন যেমন দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে তেমনি অনেক মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। শুধু দূরপাল্লার পথে ও হাইওয়েতে এবং দেশের বিভিন্ন শহর-বন্দরে নয় রাজধানীতে সংঘটিত হচ্ছে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা। নগরীর অভ্যন্তরীণ রাজপথতো বটেই, এমনকি রাজধানীর বুক চিরে বহিরাঞ্চলে চলে যাওয়া এয়ারপোর্ট রোড বা বিমানবন্দরের সুবিস্তৃত ও সুমসৃণ পথে সংঘটিত হচ্ছে দুর্ঘটনা। সারা দেশে জরিপ ও পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, নানা কারণে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা যেমন বিপুল, তেমনি এসব দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত, নিহত ও পঙ্গু হয়ে পড়া লোকের সংখ্যা হাজার হাজার। দেশে প্রতি বছর এই যে হাজার হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান, আহত হন পঙ্গু হয়ে শেষ জীবন কাটানি তার জন্য তাদের উত্তরাধিকাররা ক্ষতিপূরণের খুব কম টাকাই পান। এদিকে চালকের বা দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের সাজাও হয় কম। প্রকৃতপক্ষে, সড়ক দুর্ঘটনা শুধু জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে না, দুর্ঘটনায় আকস্মিক ও অকাল মৃত্যুর শিকার হবার দরুন অথবা মৃত্যুর হাত থেকে আপাত রেহাই পেলেও আহত ও পঙ্গু হয়ে পড়ার কারণে তাদের এবং তাদের পরিবার-পরিজন ও উত্তরাধিকারীদের জন্য বিরাট অর্থনৈতিক ও মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। অনেক পরিবার চিরকালের জন্য পঙ্গু ও নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয় ও উত্তরাধিকারীরা নানা পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ ও বীমার টাকা ইত্যাদি পায় না বলে একেবারে পথে বসে যায়। জরিপ ও পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হতভাগ্য ব্যক্তিদের উত্তরাধিকারীদের মতো, দেশের বিভিন্ন স্থানে যারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন তাদের উত্তরাধিকারীরা বঞ্চনার শিকার।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত, আহত ও পঙ্গুদের হতভাগ্য উত্তরাধিকারীদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ তথা বীমার টাকা পাবার চেয়ে শতগুণ সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো আদৌ তেমন পরিস্থিতির শিকার না হওয়া অর্থাৎ কারো সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত না হওয়া, আহত ও পঙ্গু হয়ে পড়ার মতো দুর্ভাগ্যের শিকার না হওয়া। দৈব দুর্ঘটনার ওপর মানুষের কোন হাত নেই এবং কে, কখন ও কি কারণে দুর্ঘটনার শিকার হবে তা বলা মানুষের সাধ্যাতীত। দৈব-দুর্ঘটনার ওপর মানুষের কোন হাত না থাকলেও পূর্বাহ্নে সতর্কতা অবলম্বন করলে এবং সাবধান হয়ে চললে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো যায়, ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস পায়। এ কথাটি সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য ও সত্য। কেননা, সড়ক দুর্ঘটনার কার্যকারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সড়ক দুর্ঘটনার এবং জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মূলে রয়েছে সংশ্লিষ্টদের অসতর্কতা ও দায়িত্বহীনতা। সড়ক পথের অপ্রশস্ততা ও সংকীর্ণতা, উঁচু-নীচু অবস্থান, দুরবস্থা, ভাংচুর দশা, যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি-বিচ্যুতি, গোলযোগ, যানবাহনের লক্কড়মার্কা অবস্থা, ড্রাইভারের অদক্ষতা, অনভিজ্ঞতা, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতা, ওভারটেক করার প্রবণতা, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, পথচারীদের অসাবধানতা ও দায়িত্বহীনতা, গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাব ইত্যাদি বহুবিধ কারণে সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে।
কি ধরনের বেপরোয়া ও উদ্দাম গতিতে চললে এবং আকস্মিকভাবে ওভারটেক করতে গেলে এমন বিপর্যয় ঘটতে পারে তা সহজে অনুমেয়। অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায় যে, অধিকাংশ যানবাহন চালকের যথেষ্ট অনভিজ্ঞতা, অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতা রয়েছে। একশ্রেণীর ড্রাইভার রাজপথে ও দূরপাল্লার পথে এবং হাইওয়েতে যানবাহন চালাতে গিয়ে বেপরোয়া ও উদ্দাম হয়ে ওঠে, ট্রাফিক নিয়ম-কানুনের প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রƒক্ষেপ করে না, দুর্ঘটনার আশংকা এবং নিজের ও যাত্রীদের নিরাপত্তা কথা বেমালুম ভুলে যায়। সড়ক পথে বিশেষত দূরপাল্লার পথে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চেকিংয়ের ব্যবস্থার অভাব ড্রাইভারদের অবাধ, উদ্দাম ও বেপরোয়া  করে তোলে। প্রতিটি বড় ধরনের এবং মারাত্মক ও মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার পর সংবাদপত্রে যথেষ্ট লেখালেখি হয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করার, দূরপাল্লার পথে ঘন
ঘন চেকিংয়ের ব্যবস্থা নেয়ার, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন এবং অদক্ষ ও দায়িত্বহীন ড্রাইভার যাতে পাড়ি জমাতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয়। যানবাহনের ফিটনেস কড়াকড়িভাবে পরীক্ষা করা, ড্রাইভারের গাড়ির লাইসেন্স, ইন্স্যুরেন্স সার্টিফিকেট ইত্যাদি পরীক্ষা করা, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও অদক্ষ ড্রাইভারকে পথে নামতে না দেয়া ইত্যাদি বহুবিধ ব্যবস্থা কড়াকড়িভাবে গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা সত্ত্বেও প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে এবং ড্রাইভারের অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতা মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে। বস্তুত, অনেক পুরনো এবং লক্কড়মার্কা যানবাহন যে নানা কায়দা কৌশল ও বিভিন্ন উপায়ে ফিটনেস সার্টিফিকেট আদায় করে এবং দূরপাল্লার পথে চলার পারমিশন পেয়ে যায় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এসব ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ পুরনো এবং হরহামেশাই মিলে। বহু যানবাহন বিশেষত বাস, মিনিবাস, ট্রাক ইত্যাদি যে লক্কড়মার্কা অবস্থার জন্য ধুকতে ধুকতে দূরপাল্লার পথ চলে, তাতো যাত্রীদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার অন্তর্গত। শুধু কি তাই? চলার পথে মারাত্মক ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সংঘটিত করে এর জন্য দায়ী ড্রাইভার ও যানবাহন মালিকরা নানা কায়দা-কৌশলে ও দুর্নীতির আশ্রয়ে পার পেয়ে যায়। এমনকি, দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ দানের খেসারত থেকে রক্ষা পায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, মারাত্মক দুর্ঘটনা সংগঠিত হওয়া এবং তাতে বহু লোক নিহত ও আহত হওয়া সত্ত্বে ড্রাইভাররা অক্ষতভাবে পালিয়ে যায়। তাদের টিকির সন্ধান সহজে পাওয়া যায় না। অনেকে মামলা-মোকদ্দমা থেকে সহজে ছাড়া পেয়ে যায়। দৈনিক সংবাদপত্রে এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত অধিকাংশ গাড়ির রুট পারমিট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ব্লু-বুক, লাইসেন্স, ট্যাক্স টোকেন ইত্যাদি ঠিক থাকে না বা পাওয়া যায় না। ফলে মামলা-মোকদ্দমা দাঁড় করাতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় এবং এর ফলে দুর্ঘটনার শিকার নিহত ব্যক্তিদের উত্তরাধিকাররা ফরম পূরণ করে বীমার টাকা পাবার ব্যাপারে হিমশিম খায়, বঞ্চিত হয়।
সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহত, আহত ও পঙ্গু হওয়া মর্মান্তিক ঘটনা। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার না হওয়া এবং সাক্ষীর অভাবে অথবা নানা জটিলতার কারণে মামলা খারিজ হয়ে যাওয়া আরো দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। নিহতের উত্তরাধিকারীদের বীমার টাকা না পাওয়া বিরাট ক্ষতির ব্যাপার। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যাপার ঘটে। অর্থাৎ যানবাহনের চালকরা সাজা পায় না, নিহতদের উত্তরাধিকারীরা ক্ষতিপূরণ ও বীমার টাকা থেকে বঞ্চিত হয় বলে সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হলে অকূলস্থলে জমায়েত জনসাধারণ মারমুখো হয়ে ওঠে, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ড্রাইভারকে নিজেরা হাতে আইন তুলে নেয়ার প্রবণতা পেয়ে বসে। যানবাহন ভাংচুর এবং সড়কপথ অবরোধের ব্যাপার ঘটে। ঘটনা যত বেদনাদায়কও হোক না কেন, নিজের হাতে আইন তুলে নেয়া বাঞ্ছিত নয়, কিছুতেই সমর্থনযোগ্য নয় এবং তা আইনসম্মত নয় বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু দেশের বিভিন্নস্থানে প্রায় যে হারে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনার শিকার হবার দরুন জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া ছাড়া অনেক মূল্যবান ও সম্ভাবনাময় জীবনের অকালে অবসান ঘটছে, তাতে অকুস্থলে সমবেত জনসাধারণের ও নিহতদের আত্মীয়স্বজনের ধৈর্য ধারণ করা কঠিন। দুর্ঘটনার শিকারে নিহত ও আহত ব্যক্তিরা যদি অল্পবয়সী ছাত্র, তরুণ হয় তাহলে ব্যাপারটি হয়ে দাঁড়ায় আরো মর্মন্তুদ। বস্তুত এসব কারণে যানবাহন ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধের প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। অথচ তা বাঞ্ছিত নয়। আমরা মনে করি, সড়ক-দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ লাভ নিশ্চিত করা এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধের ব্যবস্থা ব্যাপক ও জোরদার করার মাধ্যমে দুর্ঘটনাও এ প্রবণতা হ্রাস করা যেতে পারে।
ঠিক, দৈব-দুর্ঘটনার ওপর মানুষের কোনো হাত নেই, সব দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা মানুষের সাধ্যাতীত এ কথাটিও মনে রাখতে হবে। আরো মনে রাখতে হবে যে, সড়ক দুর্ঘটনায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং আহত ও নিহত হবার ব্যাপারটি যত মর্মান্তিক হোক না কেন, এর জন্য সড়ক পথ অথবা যানবাহন ভাংচুরে মনের ক্ষোভ বা দুঃখ শোক লাঘব হলে তাৎক্ষণিক এ ব্যবস্থায় প্রকৃতপক্ষে কোনো লাভ হয় না বরং অন্যের ক্ষতি বা কষ্ট বাড়িয়ে তোলা হয়। যানবাহন ভাংচুরে সেসব যানবাহন সরকারি হোক বা বেসরকারি হোক ক্ষতি হবে দেশের, জনগণের। যানবাহনের সংখ্যা কমে গেলে যাতায়াত আর যোগযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়। সুতরাং সড়ক দুর্ঘটনাজনিত বিরাট ক্ষতি আর শোক-দুঃখের মুহূর্তে আমাদের ধৈর্য ধারণ এবং যুক্তির পথ অবলম্বন করা শ্রেয়। কেননা, সড়ক পথ অবরোধ যানবাহন ভাংচুরে কোনো ক্ষতিপূরণ হবে না, নিহতদের ফিরে পাওয়া যাবে না, আহতরা নিরাময় হবে না। তাই এ জাতীয় বিপদে ধৈর্য ধারণ করে আইন সঙ্গতভাবে মোকাবেলা করাই উচিত।  
লেখক: সাংবাদিক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন