রাজাপুর (ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা : ঝালকাঠির রাজাপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করে গত ১৮-০৮-২০০৯ সালে উদ্বোধন করা হলে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে। এমনিতেই তো চিকিৎসক সংকট চরমে তারপরেও যে ক’জন চিকিৎসক রয়েছেন তারাও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ে ক্লিনিকে সেবা দিতে বেশি উৎসাহী বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফলে উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা এখন ক্লিনিকনির্ভর হয়ে পড়েছে। যেন দেখার কেউ নেই। এসব কারণে উপজেলার ৭৪টি গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। জানা গেছে, মাঠকর্র্মী ৫০টি পদের ৫টি শূন্য, সাপোর্ট স্টাফ ১৯টির ৬টি ও অন্যান্য কর্মচারীর ১৬টির ৩টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ৫০ শয্যার শুরু থেকে ডাক্তারের ২২টি পদের ১০ জন বিশেষজ্ঞসহ ১৬টি পদ শূন্য রয়েছে। এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩৩তম বিসিএসর ডেন্টাল চিকিৎসকসহ ৬ জন ডাক্তার কাগজ-কলমে থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মো. মাহাবুবুর রহমান এবং সিভিল সার্জন ডাঃ মো. আঃ রহিমের যোগসাজসে গত ২০১৫ সাল থেকে ডাঃ রাফি আক্তার, ডাঃ ইশিতা দাস, ডাঃ শিউলি আক্তার ও ডেন্টাল ডাঃ মো. তোফাজ্জেল হোসেন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ডেপুটিশনে রয়েছেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অফিস সূত্রে জানা গেছে, মেডিকেল টেকনোলজি ল্যা এর ২টি পদ ৫ বছর ধরে শূন্য থাকায় ল্যাব ব্যবহার না করায় ল্যাবের যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ইতোমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। এক্সরে মেশিন অপারেটর ২ বছর না থাকায় ভালো এক্সরে মেশিনটি আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক্সরে মেশিন ও ল্যাব চালু না থাকায় বাহিরের অনানুমদিত অবৈধ ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলোর পোয়াবারো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মো. মাহাবুবুর রহমান এবং ৮ জন স্বাস্থ্য সহকারীর ৪ জন নিজেদেরকে ডাক্তার হিসেবে জাহির করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বাহিরে বিভিন্ন ক্লিনিকেই সময় দিচ্ছেন বেশি। ভালো কোন ডাক্তার রাজাপুরে থাকলে তার কদর কমে যাবে বিদায় সিভিল সার্জন ডাঃ মো. আঃ রহিম যোগসাজসের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ডাক্তার স্বল্পতার অজুহাতে রাজাপুরের ডাক্তার সেখানে ডেপুটিশন দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে বাধ্য হয়ে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষ বিভিন্ন ক্লিনিকে চড়া মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ মো. মাহাবুবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ডাক্তার সংকটের কারণে এখানের ঝালকাঠিতে কর্মরত আছে। ঝালকাঠি সদর হাসপতালে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৪ জন ডাক্তার ডেপুটিশনে রয়েছে, সেখানে ডাক্তার সংকট তো আছেই, তাছাড়া তারাও এখানে আসতে চাচ্ছে না। এছাড়া বর্তমানে তিনিসহ রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৪ জন থাকলেও একজন ট্রেনিংয়ে থাকায় তিনি বাদে মাত্র ২ জন চিকিৎসক রয়েছে। সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি জানান, একটু সমস্যা তো হচ্ছেই, এখন তিনিই আউটডোরেও রোগী দেখছেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন