বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দুপচাঁচিয়া হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা

| প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে বগুড়া-নওগাঁ সড়কের পাশে অবস্থিত দুপচাঁচিয়া সরকারি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসকের চরম সংকটের ফলে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা। রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। হাসপাতালে কোটি টাকার এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনসহ বৈদ্যুতিক জেনারেটর অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়ক সংলগ্ন দুপচাঁচিয়া সিও অফিস বাসস্ট্যান্ডের পাশে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি এই হাসপাতালে বিগত কয়েক বছর অবকাঠামোগত বেশ কিছু উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না পাওয়ায় হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালটিতে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ২১ জনের স্থলে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৬ জন। এদের মধ্যে আবার ৩ জন জিয়ানগর, তালোড়া ও গুনাহার ইউনিয়ন সাব সেন্টারের মেডিকেল অফিসার রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কারণে উক্ত ৩টি ইউনিয়ন সাব সেন্টার চিকিৎসকদের হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে উক্ত ৩ ইউনিয়নের চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়েছে। এ দিকে কর্মরত এই ৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে থেকে ২ জন চিকিৎসক উচ্চতর শিক্ষার কোর্সে সুযোগ পাওয়ায় আগামী মার্চ মাসে হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছে। ফলে হাসপাতালটি চরম চিকিৎসক সংকটে পড়ছে। এ ছাড়াও উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৬ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছে মাত্র ১ জন। একইভাবে স্বাস্থ্য সহকারি ৩০ জনের স্থলে কর্মরত হয়েছে মাত্র ১৪ জন। এতে করে মাঠে মাঠ পরিদর্শন বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে টিকাদান, গর্ভবতী মাদের সেবা, রেজিস্ট্রেশন, যক্ষা কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণ কাজসহ ইপিআই-এর কাজে চরম বিঘœ ঘটছে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণও যথাসময়ে যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত না করায় হাসপাতালে কোটি টাকা মূল্যের এক্স-রে মেশিন, জেনারেটর বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান আল্টাসনোগ্রাম মেশিনটি বরাদ্দ হলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে তাও অচল। এ ব্যাপারে গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল ওয়াদুদ-এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, কর্মরত ৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে থেকে ২ জন চিকিৎসক উচ্চতর শিক্ষা কোর্সে সুযোগ পাওয়ায় তারা চলে গেলে হাসপাতালটি চরম চিকিৎসক সংকটে পড়বে। বিষয়টি তিনি কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। এ ছাড়াও বিকল এক্স-রে মেশিন ও বৈদ্যুতিক জেনারেটরটি মেরামতসহ আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি চালানোর দক্ষ টেকশিয়ান-এর জন্য একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন। তিনি আরো জানান, মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারি ও সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদ শূন্য থাকায় মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার চরম বিঘœ ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলেও জানান। এ দিকে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটসহ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানে স্বাস্থ্য বিভাগকে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না। এতে এলাকার চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়া সহ সরকারের গৃহীত “সবার জন্য স্বাস্থ্য” চিকিৎসা সেবা কর্মসূচির মারাত্মক বিঘœ ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন