রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পরিত্যক্ত স্কুল ভবন মাদকসেবীদের দখলে, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

| প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের শাপলা কিন্ডারগার্টেনের পুরাতন ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কাসহ শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেই সাথে এলাকার মাদকসেবীরা ভবনটিকে নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে। দুপচাঁচিয়া উপজেলার কোমলমতি শিশুদের শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে প্রশাসন চত্বরে শাপলা কিন্ডারগার্টেন স্কুলটি স্থাপিত হয়। পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ কক্ষবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। কেজি ১ থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তির মাধ্যমে বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। স্বল্পসময়ে বিদ্যালয়টি লেখাপড়ার মান সন্তোষজনক হওয়ায় এলাকার সবার দৃষ্টি কাড়ে। দিন দিন বিদ্যালয়টির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। নিয়মিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে বিদ্যালয়টি তাদের কার্যক্রম সফলভাবে চালাতে থাকে। প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর পূর্বে বিদ্যালয়ের এই ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। ছাদের প্লাস্টার ওঠে রডগুলো কঙ্কালের মতো বের হয়ে পড়ে। ফলে ভবনটি ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এরই মাঝে স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম চলতে থাকে। গত প্রায় ৪ বছর পূর্বে স্কুলের নিজস্ব তহবিল থেকে ভবন সংলগ্ন পেছনেই ৯ কক্ষবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই নতুন ভবনে স্কুলের কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে স্কুলটিতে ৩৭০ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা ৮ জনসহ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী রয়েছে ২ জন। এদিকে নতুন ভবনটির সামনে পুরাতন ভবনটি দীর্ঘদিনেও অপসারণ না করায় পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে নতুন ভবনের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায় না। স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এই পুরাতন ভবন দিয়েই যাতায়াতসহ বিভিন্ন বিধ্বস্ত কক্ষে খেলাধুলা করছে। যে কোনো মুহূর্তে ভবনটি ভেঙে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও বিরাজ করছে। এছাড়াও নতুন নির্মিত ভবনের সামনে জরাজীর্ণ এই ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকায় বাহির থেকে নতুন ভবনের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায় না। ফলে নতুন এই ভবনের সৌন্দর্যও হ্রাস পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোমলমতি শিশুদের সাথে আসা অভিভাবকদের বিড়ম্বনাও কম নয়। এছাড়াও উক্ত পরিত্যক্ত ভবনে এক শ্রেণীর নেশাগস্ত যুবক নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। তারা সুযোগ পেলেই উক্ত ভবনে বসে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য নিরাপদে সেবন করছে। এব্যাপারে স্কুলের অধ্যক্ষ আবুল বাসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত নিতে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় পুরাতন ভবনটি অপসারণে বিলম্ব ঘটেছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় পুরাতন ভবনটি অপসারণে বৈধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অচিরেই ভবনটি নিলামের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে। একই সাথে তিনি জানান, ৯ কক্ষবিশিষ্ট নতুন ভবনে শিক্ষার্থীদের জায়গার সংকুলান না হওয়ায় নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আর একটি ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউএনও শাহেদ পারভেজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি “দৈনিক ইনকিলাব”-কে জানান, দেড় বছরের অধিক সময় ধরে স্কুলের পুরাতন ভবনটি অপসারণের চেষ্টা করে আসছেন। সর্বশেষ প্রায় দেড় মাস পূর্বে ম্যানেজিং কমটির সভায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে পুরাতন ভবনটি অপসারণের জন্য একটি কমিটিও গঠন করেছেন। স্কুলটির অধ্যক্ষ কেন যেন পুরাতন ভবনটি অপসারণে কালক্ষেপণ করছেন। একই সাথে জানান, খুব শিগগিরই জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনটি অপসারণ করা হবে।   

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন