শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দলীয় প্রতীক পেতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল দখলে মরিয়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা

প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) থেকে : ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই ফটিকছড়ির ইউনিয়নগুলোতে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়েছে। এবারই প্রথম পৌরসভার পর রাজনৈতিক দলের প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হচ্ছে বিধায় দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ দলীয় মনোনয়ন পাবার জন্য ইতোমধ্যে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ধারে-কাছে ধর্ণা দিয়েই যাচ্ছে; পাশাপাশি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে বেড়িয়ে নিজেদের পক্ষে সমর্থন আদায়ে প্রাণ-পণ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কেউ আবার উপরি দিয়ে কিংবা শক্তি প্রয়োগ করে তৃনমূল ভোট ক্রয়ে প্রভাব বিস্তার শুরু করেছে। অনেকে তৃণমূল দখলে মরিয়া হয়ে উঠছে। অবশ্য দলের বাইরেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে ভোটারদের মন জয় করতে আগে-ভাগেই গণসংযোগসহ বিভিন্ন সমাজিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করে নিজের সরব উপস্থিতির জানান দিচ্ছে। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী আবার ডিজিটাল ব্যানার টাঙ্গিয়ে ভোটাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। তবে সরকারদলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা দিব্যি এ প্রচারণায় ব্যস্ত থাকলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হয়রানির ভয়ে আগে-ভাগে প্রচারণা চালাতে পারছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ফটিকছড়ি উপজেলাধীন ১৫টি ইউনিয়নে (তৃতীয় ধাপ ২৩ এপ্রিল) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। ৬টি ধাপে যেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে তা ইসির কাছে প্রেরণ করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। ইসি পর্যালোচনা করে সবক’টি ধাপেই চট্টগ্রামে ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে বলে জানা গেছে। ফটিকছড়ি উপজেলার যে ইউপিগুলোতে নির্বাচন হবে; তা হচ্ছে- ১নং বাগান বাজার, ২নং দাঁতমারা, ৩নং নারায়ণহাট, ৪নং ভুজপুর, ৫নং হারুয়ালছড়ি, ৬নং পাইন্দং, ৭নং কাঞ্চননগর, ১নং সুন্দরপুর, ১৩নং লেলাং, ১৫নং রোসাংগিরী, ১৬নং বখত্পুর, ১৭নং জাফতনগর, ১৮নং ধর্মপুর, ১৯নং সমিতিরহাট, ২০নং আবদুল্লাহপুর। গত ১১ ফেব্রুয়ারি ইসির পক্ষ থেকে প্রথম ধাপে ৭৫২ ইউপি নির্বাচন তালিকায় ফটিকছড়ি উপজেলার ১৪নং নানুপুর ইউপি নির্বাচন হবার কথা ছিল। কিন্তু গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই তালিকা থেকে অন্যান্য ১৩ ইউপির সাথে ফটিকছড়ির নানুপুর ইউপিও সরিয়ে ফেলেন। নানুপুর থেকে খিরাম ইউনিয়ন পৃথকীকরণ সংক্রান্ত (সীমানা) মামলা হাইকোর্টে চলমান থাকায় ওই ইউপি নির্বাচন তফসিলে স্থগিত করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ইসি থেকে নানুপুর ইউপি নির্বাচন স্থগিত সংক্রান্ত চিঠি উপজেলা নির্বাচন অফিসে পৌঁছে। একইভাবে ১১নং সুয়াবিল ইউপির কিছু অংশ এবং ১২নং দৌলতপুর ইউপির বৃহদাংশ নিয়ে গেল বছর ‘নাজিরহাট পৌরসভা’ ঘোষিত হওয়ায় ওই দু’টি ইউপির বাদপড়া এলাকাগুলোর ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না দেয়ায় হাইকোর্টে চলমান রিটের কারণে (সীমান্ত জটিলতায়) ওই ইউনিয়নদ্বয়ে আপাতত নির্বাচন হচ্ছে না। ফটিকছড়িতে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, বাগানবাজার ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুস্তম আলী (জেলা আ.লীগের সদস্য), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন সাজু, বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান একরামুল হক বাবুল, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহাম্মদ খুরশিদ আলম, বিএনপি নেতা আব্দুল ওয়াদুদ সওদাগর, যুবদল নেতা মনিরুজ্জামান লায়েছ। দাঁতমারা ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জানে আলম (আ.লীগ), আ.লীগ নেতা মোহাম্মদ নুরুল আলম, ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি মজিবুল হক মজুমদার, সেক্রেটারি মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, বিএনপি থেকে ইদ্রিস মিয়া ইলিয়াছ, গোলাম রব্বানী চৌধুরী মানিক, আবুল খায়ের সওদাগর, শফিউল আজম চৌধুরী, শেখ মোহাম্মদ মনির হায়দার, মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, স্বতন্ত্র মুহাম্মদ জিয়াউল হক, প্রবাসী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। নারায়ণহাট ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু জাফর মাহমুদ (জাসদ), সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম (আ.লীগ), ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, যুবলীগ নেতা খোরশেদুল আলম মামুন, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, বিএনপি থেকে অ্যাডভোকেট আবছার উদ্দীন হেলাল, খোরশেদ আলম বাবুল, স্বতন্ত্র ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার। ভুজপুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা শফিউল আলম নূরী (জামায়াত), ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ (আ.লীগ), আওয়ামী লীগ নেতা এসএম হারুন মিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ মাহাবুল আলম, মোহাম্মদ সেকান্দার, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সেলিম জাহাঙ্গীর টিপু, বিএনপি থেকে নূরুল ইসলাম তালুকদার, নাজিম উদ্দীন বাচ্চু, মুহাম্মদ নুরুল ইমলাম, স্বতন্ত্র মাওলানা নিজাম উদ্দিন। হারুয়ালছড়ি ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী (বিএনপি সমর্থিত), সাবেক চেয়ারম্যান হাসান সরোয়ার আজম চৌধুরী (আ.লীগ), আ.লীগ নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টু, বিএনপি থেকে মাস্টার মোহাম্মদ মুছা, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, ইমতিয়াজ আলম চৌধুরী। পাইন্দং ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম ছরওয়ার হোসেন স্বপন (স্বতন্ত্র), সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম সিকদার (উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক), আ.লীগ নেতা তসলিম বিন জহুর, ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী সাবু, জানে আলম কোম্পানি, বিএনপি থেকে নুরুল হুদা চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল বশর নবী, মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুল আলম চৌধুরী, নাজিম উদ্দীন শাহীন। কাঞ্চননগর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান রশিদ উদ্দিন চৌধুরী কাতেব (আ.লীগ), ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি মুহাম্মদ দিদারুল আলম, এটিএম আমান উল্লাহ, বিএনপি থেকে বদিউল আলম তালুকদার, স্বতন্ত্র থেকে মুহাম্মদ লোকমান চৌধুরী। সুন্দরপুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শহিদুল আজম (বিএনপি), সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী (কৃষকলীগ), উপজেলা আ.লীগ নেতা মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ, দিদারুল বশর চৌধুরী দুদু, বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান আরশাদ হোসেন সেলিম, সুজা উদ্দীন চৌধুরী। লেলাং ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন মুহুরী (আ.লীগ), সাবেক ছাত্রনেতা সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীন (আ.লীগ), বিএনপি থেকে হোসেন আহমদ মিয়াজী, প্যানেল চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন। রোসাংগিরী ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিউল আলম (আ.লীগ), কৃষকলীগ নেতা সোয়েব আল ছালেহীন, বিএনপি থেকে মোহাম্মদ হানিফ সওদাগর, মুহাম্মদ জানে আলম। বখ্তপুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুকুল আজম (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান এসএম সোলায়মান (উপজেলা আ.লীগ সেক্রেটারি), ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি খুরশেদুল আলম ভাসানী, বিএনপি থেকে মুহাম্মদ নুরুল হুদা, খালেদ মাহমুদ বাবুল, জাহেদুল আলম জাহাঙ্গীর। জাফতনগর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল হালিম (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন নাজু (আ.লীগ), বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যানপুত্র মোহাম্মদ নুরুদ্দীন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. নুরুল ইসলাম। ধর্মপুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুল হক (আ.লীগ), আ.লীগ নেতা আবদুল কাইয়ুম, বিএনপি থেকে নুরুল আলম কন্ট্রাকটার, মুহাম্মদ ইউসুফ। সমিতিরহাট ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরী (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ (আ.লীগ), আ.লীগ নেতা হারুনুর রশিদ কালু, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান জানে আলম বাবুল, সাংবাদিক সৈয়দ জাহেদ উল্লাহ কুরাইশী। আবদুল্লাহপুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান হোসেন আলী তালুকদার (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুল আলম, আ.লীগ নেতা মোহাম্মদ অহিদুল আলম, বিএনপি থেকে আবুল কাসেম মেম্বার প্রমুখ। সরেজমিন জানা গেছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় বিভেদে অনেকাংশে নতুন চমকও আসতে পারে। মূলত গ্রাম এখন নির্বাচনী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তবে তারা সন্দিহান এজন্য যে, সরকার আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেবে কি-না? না-কি পৌরসভা স্টাইলে জনবিচ্ছিন্ন নির্বাচন হবে। এটাই তাদের শঙ্কা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন