রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ফুল চাষে ঘুরছে অ্যাপেলোর ভাগ্যের চাকা

| প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ফুল ব্যবসায়ী মবিনুল ইসলাম অ্যাপেলো ফুল বিক্রি ও চাষেও সফল। এই অঞ্চলের চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে ফুলের চাষ ও ব্যবসা করে সফলতা দেখিয়েছেন তিনি। ১৯৯৮ সালে সৈয়দপুর শহরে “পাঁপন ফুল বিতান” নামে একটি ফুলের দোকান দিয়ে অ্যাপেলো প্রথম ফুলের ব্যবসা শুরু করেন। প্রায় ১৬ বছর ধরে কয়েকবার দোকান বদলালেও নিরবচ্ছিন্ন থেকেছেন একই ব্যবসায়। সম্প্রতি নেমেছেন ফুল চাষেও। শুরুর দিকে যশোরের গদখালি থেকে ট্রেনে এবং পরবর্তীতে পিকআপযোগে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গøাডিওলাস, গাঁদা প্রভৃতি ফুল এনে বিক্রি করতেন। নানা কারণে ফুল পৌঁছাতে সময় ও অর্থ ব্যয় হওয়ায় বিকল্প পথ খুঁজতে থাকেন। ৫ বছর আগে অ্যাপেলো ফুলচাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। একটি গাঁদা বাগান দিয়ে যাত্রা শুরু করেন ফুল চাষের। একার পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় সৈয়দপুরের চাষিদের ফুল চাষের জন্য আগ্রহী করে তোলেন। চাষিদের কাছ থেকে বাজার দরে ফুল কেনার প্রতিশ্রæতি দেন তিনি। এরপর ফুলের মোকাম থেকে বীজ ও চারা এনে চাষিদের মধ্যে সরবরাহ করেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে উপজেলার বেশকিছু এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ফুলের চাষ শুরু করা হয়। মাটি পরীক্ষা করে কোন জমিতে কি ফুল লাগাতে হবে এবং পোকামাকড় দমনে কি কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সে কাজটিও তিনি নিজেই করেন। উপজেলার নিয়ামতপুর, সোনাখুলি, নতুন বাবুপাড়ায় প্রায় তিন বিঘা জমিতে গøাডিওলাস, গাঁদা ও রজনীগন্ধা এবং দিনাজপুরের বিরলে গোলাপের বাগান তৈরি করা হয়েছে। এসব জমি থেকে সরাসরি ফুল কিনে নিজের দোকানেই বিক্রি করছেন অ্যাপেলো। গøাডিওলাস হাজার স্টিক ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, রজনীগন্ধা ও গাঁদা তিন হাজার টাকা, গোলাপ প্রতি পিস দুই টাকা হারে চাষিদের কাছ থেকে কিনে থাকেন তিনি। গ্রাহক পর্যায়ে সামান্য লাভ রেখে রকমারি ফুল বিক্রি করেন তিনি। বর্তমানে তার দোকানে ৩ জন লোক কাজ করেন। এ বিষয়ে অ্যাপেলো বলেন, ক্যাটালগ অনুযায়ী রকমারি ফুল দিয়ে বিয়ে বাড়ি, গাড়ি, বাসর ঘরসহ বিভিন্ন সাজসজ্জার কাজ করে থাকি। ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকার বেশি কাজ হয়। অ্যাপেলো জানান, ২০১১ সালে ইএমই সেন্টার ও স্কুলের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ফুলের সাজসজ্জার কাজ করে সকলের কাছে প্রশংসিত হন তিনি। এরপর থেকে মাঝে-মধ্যে তাকে সৈয়দপুরের বাইরের জেলাতে এমনকি ঢাকাতেও গিয়ে কাজ করতে হয়। আরো জানান, ফুলের সাথে দীর্ঘাদিন জড়িত থাকার সুবাদে জন্মেছে এক ধরনের ভালোবাসা। সে কারণে তিনি বাড়ির ছাদেও ৪৫টি টবে বিভিন্ন ফুলের বাগান করেছেন। দৃষ্টিনন্দন এই ছাদ বাগান অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অ্যাপেলো স্বপ্ন দেখেন, সৈয়দপুরের মাটি ফুলের জন্য উপযোগী যদি গ্রিন হাউস করতে পারা যায় তাহলে চাষিদের আর ভয় থাকবে না। বিভিন্ন সময়ে ফুলের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে এর মধ্যে অন্যতম বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এছাড়াও একুশে ফেব্রæয়ারি, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখসহ বিয়ে-শাদীতে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন