আফতাব চৌধুরী : সৃষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখতে স্রষ্টা নারীকে শারীরিক গঠনশৈলী ও হৃদয়বত্তার দিক দিয়ে কিছুটা নমনীয় ও কমনীয় করে গড়েছেন। কিন্তু মেধাশক্তির দিক থেকে কোনো পার্থক্য রাখেননি। অথচ সভ্যতার চরম শিখরে পৌঁছেও দেখা যাচ্ছে নারীর ধীশক্তি ও সুকুমার প্রবৃত্তিকে ছাপিয়ে সেই শারীরিক নমনীয়তাই তার অনিরাপত্তার কারণ। এ যুগে নারীর নিরাপত্তার বলয়টি একেবারে সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। তার প্রমাণ প্রতিদিনের সংবাদপত্রের পাতায় ধর্ষণ, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, নারী পাচার, যৌতুকের দায়ে হাজার মামলার চিত্র। বাকি রয়ে যাচ্ছে আরও প্রচারের আলোয় না-আসা অজানা হাজারো নারী নির্যাতনের ঘটনা। অহরহ ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নারীর নিরাপত্তার প্রশ্নকে তাড়া করে। ইসলাম নারীকে পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন নারীকে অনেক কিছু দিলেও বাইরের পোশাকি স্বাধীনতার নেপথ্যে রয়েছে অনেক কদর্য ও কণ্টকাকীর্ণ চিত্র। নারীর সমস্যা এখনও যে তিমিরে ছিল, সে তিমিরেই আছে। রাতের গভীর অন্ধকারে একা পথ চলতে যে কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে গৃহ পরিচারিকার পর্যন্ত একই অবস্থা। সেখানে জাতি-ধর্ম, ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবারই একদর। রক্তচক্ষু হায়েনারা নারীদেহের জন্য ওত পেতে আছে। নারী নিজের বুদ্ধিবলে অনেকটা স্থান করে নিলেও কোনও এক সময়ে নিতান্ত ভীত, সঙ্কুচিত ও সন্তস্ত্র। পর্বতারোহিণী, মহাকাশচারিণী থেকে করণিক পর্যন্ত সবার মনেই এক গোপনভীতি তাড়া করে।
আজকাল নি¤œবিত্ত, মধ্যবিত্ত, প্রায় সব পরিবারেই কম বেশি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে। দিন দিন নারী ওপর হিংসাত্মক তথা নিষ্ঠুর অত্যাচার বেড়েই চলেছে। কারও ওপর বিয়ের আগে তো কারও বিয়ের পরে। আমাদের সমাজে সাধারণ বিয়ের আগে অনেক মেয়ের ওপর তাদের পরিবারের সদস্যরা ও অভিভাবকরা নানা প্রকার খবরদারি করে থাকেন। মেয়েরা নিজেদের মনের মানুষটি খুঁজে নিক বা নিজেদের পচ্ছন্দ মতো একটু চলাফেরা করুক তা তাদের পরিবারের পছন্দের বাইরে। আর এর প্রতিবাদ করতে না পেরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে তারা মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। আবার কোনও কোনও মেয়েকে অভিভাবকদের নিজেদের পছন্দের ছেলেটির সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। এতে সেই মেয়েটির বিবাহ-পরবর্তী জীবন অনেক কঠিন হয়ে পড়ে এবং কষ্টে অতিবাহিত হয়। মেয়েটির সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে তাকে কষ্টের সমুদ্রে ফেলে দেন পিতা-মাতা বা অভিভাবক।
আজকাল বেশির ভাগ পরিবারে বউদের ওপর অত্যাচার চলে যৌতুকের কারণে এবং তাদের গর্ভে মেয়ে জন্মের পর থেকে। আমরা যদি যৌতুক নেওয়া বা দেওয়া যে আইনত অপরাধ, সে বিষয়ে সচেতন হই এবং যৌতুকের বিরুদ্ধে আইনকে যথোপযুক্ত উপায়ে প্রয়োগ করি তাহলে যৌতুকের অভিমাপ সমাজ থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হবে। সেই সঙ্গে যৌতুকের জন্য কোনও নারীকে অত্যাচার ভোগ করতে হবে না বা আত্মাহুতিও দিতে হবে না। আবার অনেক পরিবারে মেয়ে জন্ম নেওয়ার পর নির্যাতন বেড়ে যায়। এর কারণ হলো, প্রায় পরিবারের সদস্যরাই চান যে তাদের পরিবারের প্রথম সন্তানটি ছেলে সন্তান হোক বা দু-চারটি ছেলে সন্তান তাদের পরিবারে জন্ম নিক যাতে তাদের বংশ দীর্ঘস্থায়ী হয়। কিন্তু যখন কোনো কোনো পরিবারে মেয়ে শিশুর জন্ম হয়, তখন সেই পরিবারের বউয়ের ওপর নেমে আসে অমানুষিক অত্যাচার। এই অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অনেক গৃহবধূ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। আমাদের জানা একান্ত দরকার যে, আসলে এ ব্যাপারটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আল্লাহর ওপর। কিন্তু কিছু পুরুষরা তা স্বীকার না করে ঘরের বউয়ের ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালান।
আসলে এখানে কারো কিছু করার নেই। আল্লাহর ইচ্ছায়ই সব হয়। কিন্তু আজকাল প্রায় সকলেই কন্যা সন্তানের জন্মের জন্য মহিলাদের দায়ী করে থাকেন এবং তাদের ওপর অত্যাচার চালান। এ ছাড়াও নানাবিধ সমস্যা আমাদের সমাজে দেখা দিয়েছে। আজকাল প্রায় অহরহই নারীদের ওপর যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। আর এর শিকার শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে যুবতী, বিবাহিতা মহিলা এবং প্রৌঢ়ারা। যৌন নিগ্রহের শিকার কেউই চান না যে, যা ঘটেছে তা অন্যরা জানুক। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌন নিগ্রহের শিকার নারীরা ভয়ে মুখ খোলেন না। কারণ, হয়তো ভাবেন যে, তারা আবার দুষ্কৃতীদের শিকার হবেন বা ভবিষ্যতে বিয়েতে সমস্যা হবে। যৌন নিগৃহীত প্রায় ৮০ শতাংশ মহিলা পরবর্তী সময়ে মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। শত শত মহিলা এবং যুবতী ও কিশোরীকে আত্মজ্ঞানহীন রূপে দেখা যায়। ফয়জুননেছা, বেগম রোকেয়ারা ছিলেন বহুবিবাহের বিরুদ্ধে। আর কুলীনের সমাজে বধূর নাম-ঠিকানার তালিকা হাতে ঘুরত যে বিবাহ ব্যবসায়ী পুরুষেরা, তাদের কাছে তো নারীর মূল্য ছিল না। এমনই অজ¯্র তথ্য আমরা পাই সে সময়ের ইতিহাস ঘাঁটলে। বেগম রোকেয়া বলেছিলেন, খানিকটা হাস্যরস লাগিয়ে ‘হুকুর হুকুর কাশে বুড়া হুকুর হুকুর কাশে, বিয়ের নামে হাসে বড়া ফুকুর ফুকুর হাসে।’ অন্যদিকে আবার অনুশীলন ব্রাহ্মণেরা অর্থ দিয়ে পাত্রী জোগাড় করত। অর্থলোভে কন্যার পিতৃপরিবার ও স্বজনরা বৃদ্ধ, রুগ্ন ব্যক্তির সাথে মেয়ের বিয়ে দিত, যা এক কথায় কন্যা বিক্রয়। পাত্র না পেলে কখনো বা কোনো কোনো ধর্মে প্রচলিত প্রথায় বৃক্ষের সাথেও নারীর বিয়ে দিয়ে দিত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে একগামিতা প্রতিষ্ঠিত হয় নবজাগরিত শহরে-সমাজে। আবার গ্রামে বহু পত্মী ও সতিন নিয়ে বাস করেছে নারী অনায়াসে। কিন্তু সেটা একটা যুগের কথা। আদিতে মানুষ ছিল যূথবদ্ধ বিবাহে অভ্যস্ত। মাতৃকেন্দ্রিক সমাজ মানেই মা ও তার সন্তান। পুরুষ নিজের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করতেই একগামিতাকে চাপাতে চেয়েছিল। বেদের যুগ থেকে নারীর বহুবিবাহের ইঙ্গিত পাই কুন্তী, দ্রৌপদী, মন্দোদরী, তরা প্রমুখের জীবন কাহিনী থেকে। দেবরের সাথে বিধবার বিয়ের উদাহরণ প্রচুর। ঋগে¦দে পাওয়া যায় ‘যেখানে স্বামীর মৃত্যুর পর এক নারী তার পাশে শুয়ে থাকে, তখন এক পুরুষ তার হাত ধরে জীবিতের রাজ্যে প্রবেশ করে বংশবৃদ্ধি করতে অনুরোধ করে।’ বংশবৃদ্ধিতে নারী ও পুরুষের ইচ্ছার অবাধ সুযোগ মহাভারতের যুগে বা নিয়োগ প্রথা কবলিত সমাজব্যবস্থায় ছিল যা চিন্তা করা হয়েছিল সমাজ ও প্রকৃতির হিতে। আজকেও দক্ষিণ ভারতের নীলগিরিতে বসবাসরত টোডা জাতির মধ্যে এক নারী সব ভ্রাতাদের পত্মী হন এমন খবরও পাওয়া যায়। পুরুষের বহুবিবাহ নিয়ে প্রাচীন আইনের যুক্তিটি অতি স্বচ্ছ ও স্পষ্ট। ‘প্রথমা স্ত্রী চিররোগী হলে স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারত।’ পুরুষ ও প্রণয়ের সূত্র ধরে সংসার ভাঙার চেয়ে একাধিক বিবাহকে অনেকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। সস্রা নেপোলিয়ান রাজনৈতিক প্রয়োজনে অস্ট্রিয়ার রাজকুমারীর সঙ্গে বিবাহ সম্মত হতে বাধ্য হন। কিন্তু উপায়? তিনি তো বিবাহিতা। তখনও ইউরো ভূ-খন্ডে পূর্ব পতœীত্মকেক্সী ত্যাগ না করে পরবর্তী বিবাহ নিষিদ্ধ। তখন বাধ্য হয়ে পতিপরায়ণা সতী-সাধবী প্রথমা স্ত্রী জোসেফিনকে একান্ত অনিচ্ছা সত্তে¡ও ত্যাগ করে তবেই ক্লিওপেট্রাকে বিবাহ করতে পারেন। একাধিক বিবাহের বিধান থাকলে এত বড় একটা অমানবিক ও নিষ্ঠুর কাজ করতে হতো না। তবে নিউ টেস্টামেন্ট এক বিবাহকে উচ্চ আদর্শপূর্ণ বললেও যাজক ছাড়া কোথাও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করেনি। যদি প্রথমা স্ত্রীর আজীবন বন্ধ্যত্ব, বংশলুপ্ত হওয়ার কারণ হয়, অথচ স্বামী তার বংশলুপ্ত করতে না-চান সেক্ষেত্রে প্রথমা স্ত্রীর বর্তমানে তার কোনও অসুবিধা সৃষ্টি না করে, তার প্রতি অমানবিক আচরণ না করে দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণের দ্বারা তার এই সামাজিক বাসনাকে সার্থক করতে পারেন। একগামিতা তো হিন্দু সমাজে সেদিনের কথা। হিন্দু কোড বিল পাস হওয়ার পূর্বে হিন্দুরা যত খুশি বিয়ে করতে পারত। বহুবিবাহের অধিকার হিন্দু ব্যক্তিগত আইন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে ১৯৫৫ সালে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী সংখ্যালঘুরা চাইলে তাদের ব্যক্তিগত আইন চালু রাখতে পারে। মনে রাখা দরকার, বিধান এক জিনিস ও অনুমোদন দেওয়া স্বতন্ত্র ব্যাপার। আজকের পরিপ্রেক্ষিতে যখন বিবাহ প্রথা মানেই একগামিতা আর বিবাহ বিচ্ছেদ ছাড়া দ্বিতীয় বিয়েতে কারোর অধিকার নেই, তখন মনে হয় পূর্বোক্ত সংহিতাকাররা কি অবিবেচক ছিলেন না, আমরা অবিবেচক? অনেকেই বলেন, বন্ধ্যা, রুগ্ন, পাগল, অনাসক্ত যদি স্ত্রী হয়, সেক্ষেত্রে পুরুষটি কী করবে? অবশ্যই আইনের সহায়তা নেবে। কিন্তু মামলাটি চলবে কতদিন? পাঁচ বা সাত বছর। ততদিনে স্ত্রী বা পুরুষটির মনোবল নষ্ট হয়ে যাবে। নিঃসন্দেহে রাষ্ট্র বহুবিবাহে শর্ত রাখতে পারে। সেক্ষেত্রে অনুমোদনও দিতে বাধ্য। অনেকে বলবেন, আগে যুদ্ধবিগ্রহে পুরুষদের মৃত্যুর হার বেশি ছিল, তাই বহুবিবাহ ছিল। এখন তার কী দরকার? অথবা হয়তো বলবেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রজননের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে বহুবিবাহ ছিল। এখন তার কী দরকার? আবার এমনও বলতে পারেন, সভ্যতার অগ্রগতিতে বহুবিবাহ অসভ্যতার পদচিহ্নবাহী। এখনকার সমাজে বন্ধ্যা, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত বধূ নিয়ে বা বিচ্ছেদকালীন সময়ে পুরুষের একটা কঠোর সামাজিক শৃঙ্খলের জীবন সমাজ ও প্রকৃতির জন্য সুস্থ নয়। এ সমস্ত ক্ষেত্রে মুসলিম বিবাহ আইন পুরুষকে আর একটি দার পরিগ্রহের অধিকার দেয়। হিন্দু আইন তার অতীত ইতিহাসকে তোয়াক্কা না-করে এগিয়ে গেছে সামাজিক কারণে। নারীর ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদকালীন পিতৃগৃহে বসবাস অসম্মানজনক অবস্থা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর একটা প্রসঙ্গ যদি মুক্ত করা যায়, মনে হয় খুব একটা মিথ্যা হবে না। এখনকার এক ধরনের নারীর কাছে বিবাহ একটি ব্যবসায় পরিণত। এর পেছনে থাকে বধূর আত্মীয়-বন্ধুজনেরা বা ক্ষেত্রবিশেষ অবৈধ মদদকারী। দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রে বিবাহের পর নারী স্বীয় বিবাহে আবদ্ধ না থেকে ঘর ছাড়ে।
এমনও দেখা গেছে, বিশেষ ক্ষেত্রে পাগল বা মনোরোগীর সাথে বিয়ে দিয়ে পুরুষের সুস্থ জীবনে কলঙ্ক ডেকে এনে আর দম্পতির জীবনকে পঙ্গু বানিয়ে নারীটির পিতৃ পরিবার অর্থ আদায় করে তাদের মেয়ের পঙ্গু জীবনকে নিশ্চিত করতে চান। অথবা পূর্বতন প্রেমিকের কথায় বা বিবাহকালীন অপর ব্যক্তির জন্যও নারী ঘর ছাড়েন, আবার ক্ষেত্রবিশেষে পুরুষের তরফ থেকেও এমনটা ঘটে থাকে। পাগল, মদ্যপ স্বামী নিয়ে বাধ্যতামূলক জীবনযাপনের উদাহরণে ভরপুর সমাজ। বিবাহের মধ্যে যে প্রজনন বা বংশবৃদ্ধি মূল কথা ছিল তা থেকে সরে যাচ্ছি আমরা, এতে এক অপূরণীয় ক্ষতি সমাজ ও প্রকৃতির জন্য নেমে আসলে আসতেও পারে। সে যুগেও প্রগতিবাদিনী নারী ছিলেন কিন্তু তারা সমাজ ও পরিবার জীবনে নিজ ভূমিকা নিয়ে ভাবতেন। পুরুষের সামাজিক রাজনৈতিক ও দাম্পত্য ভূমিকায় তফাৎ থাকে। শুধু স্ত্রী-কেন্দ্রিক জীবন তার চরিত্রের মনটাকে দুর্বল করে দেয়। এ ধরনের নারীবাদিতার ভুল ব্যাখ্যাকে কেউই সমর্থন করবেন বলে মনে হয় না। এখন নারীদের কেউ চান পুরুষ বিবাহের পর তার হাতের পুতুল হয়ে যাক।
যতদিন না আমাদের দেশে নারী-পুরুষে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত অর্ধেক আকাশের বাসিন্দাদের প্রতি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বৈষম্যমূলক আচরণের খুব একটা হেরফের যে হবে না এবং নারীর ওপর নিষ্ঠুর অত্যাচার যে চলতেই থাকবে, এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন