শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলেন শেখ হাসিনা

জার্মান চ্যান্সেলর মারকেলের সঙ্গে বৈঠক

প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:২৮ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

বিশেষ সংবাদদাতা : জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের ফাঁকে গতকাল শনিবার মিউনিখের বাইরিশার হফ হোটেলে দুই দেশের নেতাদের এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, মারকেলই এই বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলরকে বলেন, তারা বাংলাদেশে আসার পর থেকে বাজে অবস্থার মধ্যে ছিল। কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার আশ্রয় নেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর প্রভাব ওই এলাকার পরিবেশ ও পর্যটনের উপরও পড়ছে। পরিবেশ ও মানবিক বিভিন্ন কর্মকান্ড ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কক্সবাজারে গাদাগাদি করে থাকা রোহিঙ্গাদের ‘মানবিক কারণেই’ ঠেঙ্গারচরে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, তাদের একটা জায়গা ঠিক করা হয়েছে। তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সাময়িকভাবে রাখা হবে। এজন্য তিনি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানান প্রেস সচিব।
তিনি জানান, জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ‘অত্যন্ত সৌহাদ্যপূর্ণ’ পরিবেশে এক ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক হয়। মারকেল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক আগ্রগতির প্রশংসা করেন। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আগামীতে আরও জোরদার হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন জার্মান চ্যান্সেলর। এ সময় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির নানা দিক তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। লিঙ্গ সমতার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানান ইহসানুল করিম। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের পদক্ষেপ ও সফলতার কথাও জার্মানির চ্যান্সেলরকে বলেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
দারিদ্র্য বিমোচন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানান তিনি বাংলাদেশে জার্মান বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত ও হাইটেক পার্ক স্থাপনের কথাও বলেন। জার্মান কোম্পানিগুলো এর সুবিধা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লে করে শেখ হাসিনা বলেন, এক্ষত্রে দুই দেশ এক সাথে কাজ করবে। শ্রমিকদের উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে ইপিজেডগুলোতে ট্রেড ইউনিয়ন করার অনুমতি দেয়ার কথা বলেন তিনি। ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে মারকেলকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জার্মানির সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। সন্ত্রাসবাদ দমনে এক সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জার্মানির ফেডারেল অফিসের মধ্যে একটি যৌথ বিবৃতি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইউরোপ) মোহাম্মদ খোরশেদ এ খাস্তগীর এবং জার্মানির পক্ষে ডাইরেক্টর জেনারেল ফর ইন্টারন্যাশনাল অর্ডার, দি ইউনাইটেড নেশনস অ্যান্ড আর্মস কন্ট্রোল অ্যাম্বাসেডর প্যাট্রিসিয়া ফ্লোর স্বাক্ষর করেন।
ই-পাসপোর্ট নিয়েও দুইদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ এবং জার্মানির পক্ষে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ভ্যারিডোস জিএমবিএইচ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হ্যান্স-ভুল্ফগ্যাং কুঞ্জ স্বাক্ষর করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Add
মিলন খন্দকার ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৪২ পিএম says : 0
শুধুমাত্র তাদের সরিয়ে নেয়া নয়, মায়ানমারে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ