পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) উপজেলা সংবাদদাতা : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ১ নম্বর ভেমরাদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও আদালতে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ইং তারিখে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা গ্রহণ করেন। মামলার অভিযোগে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার ১ নম্বর ভোমরাদহ ইউনিয়নের ডাঙ্গীপাড়া এলাকায় গত ১৬ জানুয়ারি সকালে আব্দুল মালেকের বাড়ির কাছে রাস্তার ধারে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর সময় ১ নম্বর ভোমরাদহ ইউপি চেয়ারম্যান হিটলার হক, তার সহযোগী আমিনুল ইসলাম ও মো: মোস্তফা কাজের স্থলে গিয়ে বাধা দেন। তারা এ সময় বিভিন্ন ফন্দি-ফিকির এঁটে অবশেষে ১ লাখ টাকা চাঁদার দাবি করে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা না দিলে খুঁটি বসাতে দেবে না বলে জানায়। একপর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার তৈয়বুর রহমানের ফোরম্যান ওবাইদুর রহমানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা করে এবং বাকি টাকা না দেয়া পর্যন্ত কাজ করতে দেয়া হবে না বলে হুকমি-ধমকি দেয়। সে সময় ওবায়দুর বাকি টাকা দিতে পারবে না বলে জানালে চেয়ারম্যান তাকে ধাক্কাধাক্কি করতে করতে একপর্যায়ে মারধর করে। পরে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে এলে তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওয়াইদুর রহমান বাদি হয়ে গত ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত (খ) অঞ্চল, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ নম্বর ভোমরাদহ ইউপি চেয়ারম্যান হিটলার হক, তার সহযোগী আমিনুল ইসলাম ও মোস্তফার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ মারধর ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে ব্যবস্থা নিতে পীরগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পীরগঞ্জ থানার ওসি আমিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলাটি ছায়া তদন্তে এসআই সোহেল রানাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি চাঁদাবাজির ১ নম্বর আসামি ইউপি চেয়ারম্যান হিটলার হক জানান, চাঁদাবাজি নয় পূর্বের জের ধরে আমার বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। তবে আমার এলাকায় এসব ঠিকাদারি কাজ করলে কিছুর বিনিময়ে কাজ করতে হবে। আমিও তাদের বিরুদ্ধে এমন মামলা আনয়ন করব যাতে মামলার বাদিসহ অন্যরা জেল হাজতে জীবন বাস করে। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে এসব দুই-চারটা মামলা দিয়ে কিছুই হবে না। কারণ তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ঘটনায় মূল রহস্যের তথ্য জানতে গেলে তিনি এ প্রতিবেদকের ওপর মারমুখী হন। তাছাড়া পত্রিকায় প্রকাশ করে তাকে জেল হাজত খাটাতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, তিনি কয়েক দিন ধরে বাইরে ছিলেন, কয়েক দিনে কি হয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে চার্জশিট হলে চেয়ারম্যান ঝামেলায় পড়বেন। এ ব্যাপারে মামলার অপর আসামি মোস্তফা জানায়, পল্লী বিদ্যুতের লাইন দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা আইনি মোকাবেলা করব এবং বাদির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাব। এদিকে মামলার বাদি ওবায়দুর রহমান জানান, মামলার আসামিরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকায় তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন