রাউজান (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পটিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গার মাটি কেটে দখলের পাঁয়তারা ও সাইনবোর্ড খুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ ভূমিদাতার এক ওয়ারিশের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে দেখা গেছে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়ালের পাশ ঘেঁষে আব্দুল মালেক নামের পটিয়াপাড়ার এক ব্যবসায়ী নিজের জমি দাবি করে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির পাশ ঘেঁষে মাটি কেটে পুকুর তৈরি করার কাজ করছেন। এ সময় কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক মেম্বার, প্রতিবেশী বৃদ্ধ শফিউল আলম, আব্দুর রাজ্জাকের সাথে। তারা অভিযোগ করে বলেন, পটিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ৩৪ শতক জমি দান করেছিলেন এলাকার শোকর আলী। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের নামে আরো ২ গ-া জমি দান করেন শোকর আলীর ছোট ভাই আব্দুল হাকিম। ওই জমির ওপর স্থাপন করা এই জায়গার মালিক পটিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের সাইনবোর্ডটি নামিয়ে ফেলেছেন ভূমিদাতার নাতি পথেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক। কোন মীমাংসা ছাড়া তিনি স্কুলের নামে লাগানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলে আইনের প্রতি অবমাননা করেছেন বলে তাদের অভিযোগ। এছাড়াও তাদের দাবি স্কুলের জমি নিজে দখলের নেয়ার পাঁয়তারা করছেন আব্দুল মালেক। তারা আরো জানান, মালেক যে জায়গায় মাটি কাটছেন সেটি বিদ্যালয়ের নামে দান করেছেন আব্দুল হাকিম নামে এলাকার এক ব্যক্তি। এদিকে ভূমিদাতার ওয়ারিশ আব্দুল মালেক দখলকৃত জমির অংশ বিদ্যালয়ের নয় এবং তা নিজের পৈতৃক জমি দাবি করে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের পুরো জায়গাটি আমার দাতা শোকর আলীর দান করা। বিদ্যালয় কমিটি যে জায়গাটি আব্দুল হাকিম দান করেছেন বলে প্রচার করছে তা সঠিক নয়। আমার দাদা শোকর আলী ৩৪ শতক জায়গা স্কুলকে দান করেছিলেন। আর কেউ কোন পরিমাণ জমি দান করেননি। আমি আমার নিজের পৈতৃক জায়গার ওপর কাজ করছি। বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত কাগজপত্রে যদি আমার দখলে থাকা কোন জায়গা স্কুল পেয়ে থাকেন তাহলে তা আমি বিদ্যালয়কে অবশ্যই ছেড়ে দিতে বাধ্য থাকবো। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি এসএম শফি বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করতে মিথ্যাচার করছেন এলাকার আব্দুল মালেক। জায়টি উদ্ধার করতে আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেছি। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কারো ব্যক্তি মালিকাধীন জায়গা স্কুলের বলে দাবি করবো না। কাগজপত্রে যদি ওই জায়গা স্কুলের হয়ে থাকে তাহলে সেটি উদ্ধার করা হবে কেউ ওই জায়গা দখলে রাখতে পারবে না। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এখন মাটি কাটা বন্ধ আছে। দখলকারীকে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যেন আর মাটি না কাটে। তাছাড়া এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান আলহাজ দিদারুল আলম ও সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন