মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা

প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আলমগীর হোসেন, বুড়িচং (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলার ৮ ইউনিয়ন জনগণের একমাত্র চিকিৎসা সেবা গ্রহণের নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হলেও বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য সেবার মান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল মতিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটি দীর্ঘদিন যাবত বেহাল দশার পাশাপাশি ভেয়ে গেছে হাসপাতালের বিভিন্ন দরজা, জানালা। যে সস চেম্বারে বসে ডাক্তাররা রোগী দেখেন ও স্টাফরা বসে অফিস করেন ওই সমস্ত কক্ষের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ে গেছে। তা মেরামত করা না হলে ডাক্তারা রোগী দেখতে ও স্টাফরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানান। ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উক্ত হাসপাতালের রোগী ভর্তি ও তাদের চিকিৎসা সেবা ও ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগীদের যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে আমরা চেষ্টা করছি। এছাড়া, খাদ্যের মানের ব্যাপারে যাতে আরো উন্নত করা যায় সে ব্যাপারে আমি চেষ্টা চালাবো। হাসপাতালের সামনে অকেজো একটি পুরনো গাড়ি পড়ে থাকতে দেখে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়িটির ব্যাপারে আমরা বিআরটিএ’কে লিখেছি। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা এমন একজনকে চিকিৎসা সেবার মান সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে ২টা ৩০ মিনিটি পর্যন্ত অফিস আওয়ারে বহিরাগত রোগীদের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র বাবদ কোনরূপ ফি না নেয়ার বিধান থাকলেও হাসপাতাল তথা কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তাররা এ নিয়ম মানছেন না। সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র বাবদ অফিস আওয়ারেও ডাক্তাদের ভিজিট দিয়ে রোগী দেখাতে হয় এটা দুঃখজনক। অফিস আওয়ারে ডাক্তারের ফি রাখার বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, অফিস আওয়ারে রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট রাখার বিধান নেই। আর কেউ যদি রেখে থাকে এটা তার নিজ দায়িত্ব। এছাড়া, কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোপাইডার (সিএইচসিপি) তথা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে একটি বড় ভূমিকা রেখে আসলেও বেশিরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো খোলা রেখে স্বাস্থ্য সেবার মান সঠিকভাবে প্রদান করছেন না, বরং সরকার ঐসমস্ত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ভালো মানের ওষুধ প্রদান করে আসছে এ ব্যাপারে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল মতিন বলেন, আমি তাদেরকে কড়া নজরদারির মধ্যে রেখেছি অচিরেই এ সমস্ত সমস্যাগুলোর সমাধান হবে বলে আশা করছি। পরিশেষে বলা যায়, মানুষের মৌলিক মানবিক চাহিদার মধ্যে স্বাস্থ্য একটি অন্যতম উপাদান। মানুষ সুস্থ ও সবল থাকলে কোনক্রমেই ডাক্তার তথা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শরণাপন্ন হন না। শরীর তথা স্বাস্থ্যকে সঠিক ও কর্মঠ রাখার জন্য যুগে যুগে অনেক বড় বড় ডাক্তার ও গবেষকরা অনেক অবদান রেখে গেছেন। তাই ডাক্তাররা যদি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন না করে সেটা হবে জাতির জন্য একটি বড় দুর্ভাগ্যের ইঙ্গিত। আবার ডাক্তাররা এমআরদের মায়ায় পড়ে কোন কোন রোগীকে যদি যথাযথ ওষুধ প্রদান না করে থাকে এটাও জাতির জন্য ভয়াবহ। তবে আশার কথা এই যে- আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভদের একটি বড় আখড়া ছিল যারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে ধপাস করে হাতে প্রেসক্রিপশনটি নিয়ে কি ওষুধ লিখলো তা পড়তে শুরু করে দিতো। অথচ, রোগীর অবস্থার দিকে তারা একবারও নজর দিতো না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন