বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : আজ সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সমাবর্তনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছে তারা। ৫০তম এ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও-এর প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর অমিত চাকমা। তিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
এ বছর সমাবর্তনে ৯৪টি স্বর্ণপদকের জন্য ৮০ জন পদকপ্রাপ্ত, ৬১ জন পিএইচ.ডি., ৪৩ জন এম.ফিল. এবং ১৭ হাজার ৮৭৫ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে গ্রাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি মিলবে তাদের। তার আগেই হাতে মিলছে কালো গাউন, কালো ক্যাপসহ গিফট ব্যাগ। তাই বন্ধুদের নিয়ে এ সময়ের মধ্যে স্মৃতিটুকু ক্যামেরাবন্দি করছেন তারা। ছেলেদের মাথায় সমাবর্তন ক্যাপ, গায়ে কালো গাউন, ইন করা শার্ট-প্যান্টের সঙ্গে গলায় ঝুলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত টাই। মেয়েরা পরেছেন শাড়ি কিংবা কামিজ, উপরে কালো গাউন, মাথায় সমাবর্তন ক্যাপ। এতসব কিছু পরে ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গা চষে বেড়াচ্ছেন তারা। কখনো হলের বন্ধুদের সঙ্গে, কখনো বিভাগের বন্ধু, আবার ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয়া বন্ধুদের সঙ্গে পৃথক পৃথক দলে বের হচ্ছে নব্য গ্রাজুয়েটরা।
সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবর্তন ক্যাপ আকাশে ছুঁড়ে বাঁধভাঙা উচ্ছাসে মেতেছেন তারা। সব জায়গায় হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠতেও কোনো বাধা নেই। কোনো নিয়মনীতিও নেই এখন। স্বপ্নের কালো গাউন আর ক্যাপ পরে আনন্দের জোয়ারে যেন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাজুয়েটরা। আর স্বপ্ন বুনছে দেশ মাতৃকার জন্য ভালো কিছু করার। গত দুইদিন ক্যাম্পাসের টিএসসি থেকে কার্জন হল, কলা ভবনের অপরাজেয় বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, কখনো সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ কিংবা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ। চিরচেনা সিনেট কিংবা মল চত্বর, স্মৃতি চিরন্তনের নান্দনিক সৌন্দর্য কিছুই যেন বাদ যেতে দেয়া যায় না। তাই তারা সব জায়গায় ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত।
অপরাজেয় বাংলার সামনে কথা হয় বাংলা বিভাগের জুয়েল রানা সাথে। তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করবো। আজ আমি সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। এ আনন্দের মাত্রা বোঝানো যাবে না। এখান থেকে বের হয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করতে চাই। দেশের মানুষের সেবা করতে চায় বলেও তিনি জানান।
সমাবর্তন সংস্কৃতি প্রচলনের ওপর গুরুত্বারোপ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, সমাবর্তন দিবস শিক্ষার্থীদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিবসটির জন্য শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা একাডেমিক সার্টিফিকেট ও পদক গ্রহণ করে থাকেন। অথচ স্বাধীনতা পূর্ব ও উত্তরকালে দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। বর্তমানে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এই সংস্কৃতি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন