বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কোয়েল পালনে স্বাবলম্বী শতাধিক বেকার যুবক

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : জয়পুরহাটে প্রায় শতাধিক বেকার যুবক বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বেরিয়ে এসে চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে নিজ এলাকায় কোয়েল পাখির ফার্ম করে কোয়েল পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে বেকার যুবকরা। অনেকে পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে কোয়েল পাখি পালন করে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা এনেছে সংসারে। এক সময় শখের বসে জয়পুরহাট সদর উপজেলার পৌর এলাকার পূর্ব ধানমন্ডি এলাকার মামুনুর রশিদ বকুলের ছেলে মো. আব্দুল মোমিন ২০০২ সালে অন্যরে পাখি পালন দেখে উৎসাহিত হয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি মাত্র ৭০টি কোয়েল পাখির বাচ্চা নিয়ে ঘরোয়াভাবে বাসায় প্রতিপালন শুরু করে। এখন তার বাসায় সে রীতিমত একটি পোল্ট্রি ও হ্যাচারি খামার গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে সেখানে ৬ হাজার কোয়েল পাখি লালন-পালন করা হচ্ছে। আগে শুধু বাচ্চা লালন-পালন করে মাংসের জন্য বাজারে বিক্রয় করত। এখন তিনি মা পাখি উৎপাদন করে সেখান থেকে ডিম নিয়ে হ্যাচারির মাধ্যমে বাচ্চা ফুটাচ্ছেন। সেই বাচ্চা দেশের অভ্যন্তরে খুলনা, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, ঢাকা, দিনাজপুর, বগুড়া, নওগাঁ, পার্বতীপুর, গাইবান্ধা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও জেলার পাঁচবিবি, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর, কালাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বেকার যুবক ও মেয়েরা তার খামার থেকে বাচ্চা নিয়ে লালন-পালন করে বিক্রয় করে সংসারের সচ্ছলতা আনছে বলে তিনি জানান। মোমিন পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারি স্বত্বাধিকারী মোমিন বলেন একটা পাখি বাচ্চা থেকে ডিম দেওয়া পর্যন্ত খরচ হয় ১৮-২০ টাকা সেটি ডিম নেওয়ার পরও বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা এছাড়াও ওই পাখির ডিম ও বাচ্চা বাজারে বিক্রি হয় আলাদাভাবে। বাচ্চা পালন করে মাংস উপযোগী করতে সময় লাগে মাত্র ২৫-৩০ দিন। বর্তমানে আমার খামারের ৫ হাজার ৪শ থেকে ৭শ পর্যন্ত ডিম পাওয়া যায়। এ ডিম থেকে আমার নিজস্ব হ্যাচারিতে প্রতিদিন প্রায় ৪-৫ হাজার বাচ্চা ফুটানো হয় যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়। বাচ্চা, ডিম ও মাংসের পাখি বিক্রি করে খরচ বাদে প্রতি মাসে আমার আয় হয় ৮০-৮৫ হাজার টাকা। এরমধ্যে আমার খামারে ৭ জন শ্রমিক কাজ করে উপযুক্ত পারিশ্রমিক নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। অপরদিকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার ছাওয়ালপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম, আক্কেলপুরের মাতাপুর গ্রামের আব্দুল মতিন, ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া গ্রামের আনিছুর রহমান, কালাই উপজেলার বানাইচ গ্রামের হারুন, পাঁচবিবি উপজেলার ধুরইল গ্রামের জেমি আক্তার ও সদরের বটতলী এলাকার ইয়াসমিন ও রোস্তম আলী, ওই হ্যাচারি থেকে বাচ্চা নিয়ে নিজ এলাকায় খামার করে পাখি প্রতি পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে তারা বলেন, অল্প খরচ ও হাঁস মুরগির মতো রোগবালাই না হওয়ায় খুব সহজে একে লালন-পালন করা যায়। এতে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা আমাদের সর্ব বিষয়ে বেশ সহযোগিতা করেন। জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের প্রিন্সিপাল সায়েন্সটিপি অফিসার ডাক্তার এ কে এম আব্দুর রহমান বলেন, কোয়েল পাখি প্রতিপালন খুব সহজ ও লাভজনক। এর ডিম ও মাংস অত্যন্ত সু-সাদু ও প্রোটিন সমৃদ্ধ। এটি বয়স্কদের চেয়ে বাচ্চাদের শরীরের আমিষের চাহিদা সহজে মিটাই এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। এভাবে প্রতিপালন বা চাষ হলে দাম লাগালের মধ্যে পাওয়া যাবে। জয়পুরহাটের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য জেলায় এর প্রতিপালন শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে এটি প্রতিপালন দ্রæত বিস্তার লাভ করছে। কোয়েল পাখি সম্প্রসারণ ও প্রতিপালনে সার্বিক সহযোগিতা পরামর্শ দিয়ে আসছে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন