শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে

দুদক আয়োজিত দুর্নীতিবিরোধী মানববন্ধনে শিক্ষামন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রশ্ন ফাঁসসহ দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পেয়েও তা ঠেকাতে না পারার জন্য কিছু শিক্ষকের ‘অসততাকে দায়ী করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষার সকালে শিক্ষকদের হাতে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেয়ার পর তার ফেইসবুকে তা ফাঁস হচ্ছে। আমরা এমন একটি পরিবেশের মধ্যে আছি যা আমরা সব খুলে বলতেও পারি না, সহ্যও করতে পারি না। কিন্তু আমরা আর সহ্য করব না। সত্যিকার অর্থে আমাদের মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষক বেশি দরকার। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি রুখতে আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। শিগগিরই তা তোলা হবে, জাতীয় সংসদে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্নীতি বিরোধী এক মানববন্ধনে প্রধান অথিতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা মহানগরের উত্তরা থেকে ফার্মগেট-বাংলামোটর-শাহবাগ-মৎস্যভবন-কাকরাইল মোড়-বিজয়নগর হয়ে প্রেসক্লাব পর্যন্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, সুশীলসমাজের প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন। সকাল ১০টা থেকে  বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজপথে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ জানায়।  
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান। প্রতিনিয়ত তাদের তাৎপর্যপূর্ণ কার্যক্রম তাকে মুগ্ধ করেছে। দুদকের কার্যক্রমে সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ছাড়া উন্নয়নের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, দুদকের অগ্রিম সতর্কতামূলক পদক্ষেপের কারণেই এ বছর ঢাকার নামীদামি বিদ্যালয়ে কোনো ভর্তিবাণিজ্য হয়নি। অতীতে প্রতিবছরই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলেও কোনোবারই এবারের মতো স্বচ্ছভাবে ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি। এবার দুদকের কার্যক্রমের প্রত্যাশিত ফল পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, বিজি প্রেসেই কিছু দুর্নীতিবাজ লোক গেঁড়ে বসে ছিল, এরপর দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়, তাদের কারো চাকরি চলে গেছে, আবার কেউ  জেলে আছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত হয়েছেÑ এমন দাবিও নুরুল ইসলাম নাহিদ করছেন না। দুর্নীতির ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স। আমার শিক্ষামন্ত্রণালয়ে হচ্ছে না তা বলছি না, দেশজুড়ে এ মন্ত্রণালয়ের কাজ বিস্তৃত। তবে এইটুকু বলতে পারি, মন্ত্রণালয়ের যে পরিধি আছে সেখানে সরাসরি দুর্নীতি হয় না। অস্বীকারও করি না, তবে আগের মতো অবস্থা নেই।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি কোনো একক দেশের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। প্রবীণদের চেয়ে নবীনদের মানসিকতার পরিবর্তন সহজ। তাই কমিশন তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজপথে নেমেছে। তিনি বলেন, ক্ষমতা কিংবা অর্থের জোরে  কেউ আইন মানবেন না, সে সংস্কৃতি ইতোমধ্যেই ভেঙে দিয়েছি। তিনি বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, কেবল দুর্নীতির কারণেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ২ থেকে ৩ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পাসপোর্ট ও ভূমি সেক্টরে দুর্নীতির প্রকোপ বেশি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের মামলায় সাজার হার ২০ শতাংশে নেমে এসেছিল। ২০১৬ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ৫৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কমিশন দুর্নীতি প্রতিরোধের পাশাপাশি দুর্নীতি দমনে আইনের নিখুঁত প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে।  
ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. সালাহ্উদ্দীন বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চলমান সামাজিক আন্দোলনে ঢাকা জেলা প্রশাসন কমিশনের পাশে থাকবে।
মানববন্ধনে দুদক কমিশনার নাসির উদ্দীন আহমেদ, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল প্রমুখসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ ছাড়া দেশের প্রতিটি জেলা ৬৪টি স্থানে সততা সংঘের সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আড়াই লক্ষেরও অধিক মানুষ এই দুর্নীতি বিরোধী মানববন্ধনে অংশ নেয় বলে দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন