মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

শততম টেস্ট ভেন্যুতে আপ্লুত হাতুরুসিংহে

| প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী, কলম্বো (শ্রীলঙ্কা) থেকে : শ্রীলংকার অভিষেক টেস্ট ভেন্যুতে বাংলাদেশের শততম টেস্টের মঞ্চ প্রস্তুত। ৩৫ বছর আগে টেস্ট অভিষেক হওয়া এই ভেন্যুর সঙ্গে শ্রীলঙ্কানদের আবেগ আছে জড়িয়ে। সেই আবেগটা একটু বেশিই আপ্লুত করছে বাংলাদেশ কোচ হাতুরুসিংহেকে। কারণ, এই ভেন্যুটিই তার ঘর-বাড়ি। শ্রীলঙ্কার প্রথম বোর্ড প্রেসিডেন্ট পাইকিয়াসাথি সারাভামাত্তুর সংক্ষিপ্ত হয়ে পি সারা ওভাল, সেই পি সারার হোম টিম তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট এন্ড অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে কাটিয়েছেন হাতুরুসিংহে ১৫টি বছর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০৭ ম্যাচে ১০ হাজার ৮৬১ রান এবং ৪২৫ উইকেটের স্মৃতিচারণ করতে গেলেও পি.সারার নামটি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতে হবে হাতুরুসিংহেকে। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৫, এই ১৫ বছরে তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট এন্ড অ্যাথলেটিক ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করা হাতুরুসিংহের নেতৃত্বে ট্রফি জয়ের রেকর্ড আছে। মুরালী, দিলশান, হেরাথ খেলেছেন তারই নেতৃত্বে। ২০০৫ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বিদায়ী ম্যচ খেলেছেন হাতুরুসিংহে এই মাঠেই। বার্জার রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফেয়ারওয়েল ম্যাচে ৭৭ ও ১৩ রানের ইনিংসও আছে তার। টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৬ ম্যাচে পি সারায় খেলার অভিজ্ঞতা হাতুরুসিহের ২টি, ওয়ানডেতে সেখানে ৩৫ ম্যাচের মধ্যে একটি খেলেছেন হোম ভেন্যুতে। এই ২টি টেস্ট (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৯৩ সালে ৬ ও ২২ রান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১ রান) কিংবা একটি ওয়ানডেতে (১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ বলে ১৪ রান) বলার মতো পারফরম্যান্স নেই হাতুরুসিংহের।
তবে সেই ১২ বছর বয়সে বাবার হাত ধরে এসেছিলেন মাঠে খেলা দেখতে, সেই থেকে পি সারার মাঠটি একান্ত নিজেরই হয়ে গেছে এই লঙ্কানের। সেই মাঠে বাংলাদেশ খেলবে শততম টেস্ট, এমন আবেগটাই স্পর্শ করেছে তাকে। এই ভেন্যুর সব কিছুই তার আপন, সেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে পা রেখে নস্টালজিয়ায়ই ফিরে গেছেন হাতুরুসিংহে। স্টেডিয়ামে ঢুকেই ছুটে গেছেন পিচ দেখতে, সঙ্গে বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ, ব্যাটিং পরামর্শক সামারাবিরা এবং ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও ছিলেন।
তবে নিজের হোম গ্রাউন্ডের এই ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের অতীত মোটেও ভাল নয়। এমনকি বাংলাদেশের অতীতও দু:সহ। এই ভেন্যুতে তিন টেস্টের তিনটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হেরে যাওয়ার অতীত আছে বাংলাদেশ দলের (২০০২ সালে ইনিংসও ১৯৬ রান, ২০০৫ সালে ইনিংস এবং ৬৯ রান, ২০০৭ সালে ইনিংস এবং ৯০ রান)। এই ভেন্যুর সর্বোচ্চ স্কোরটি (২০০২ সালে ৫৪১/৯ডি.) শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশের বিপক্ষে। এই ভেন্যুর সর্বনিম্ন স্কোরও বাংলাদেশের (২০০৭ সালে ৬২/১০)। শ্রীলঙ্কার অভিষেক টেস্ট ভেন্যুতে শততম টেস্ট খেলতে নেমে তাই পেছনের দুঃসহ স্মৃতিও মাথায় রাখতে হচ্ছে হাতুরুসিংহে।
গল এ বড় ব্যবধানে হেরে হাতুরুসিংহে নিজেও তাই সতর্ক। কলোম্বো পৌঁছে শততম টেস্টের ভেন্যুতে ঐচ্ছিক অনুশীলনেও সিরিয়াস দেখিয়েছে তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের। শনিবার রাতে দলের সঙ্গে যোগ দেয়া ইমরুল কায়েসকে কাছে পেয়ে হাতুরুসিংহের সমীকরণ মেলানোর পথ একটু সহজই যেনো হয়েছে। গল টেস্টে একাদশের বাইরে থাকা পাঁচ ক্রিকেটারের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন ইমরুল। পি সারা ওভালের পিচ অতীতে কথা বলেছে বোলারদের পক্ষেই। এটাই ভাবাচ্ছে। বোলিংয়ে তিন পেস বোলারের কম্বিনেশনের পক্ষেও আপাততঃ অবস্থান অনড় তার। শততম টেস্টে বাংলাদেশ দলের কম্বিনেশনে পরিবর্তন আসছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হাতুরুসিংহে নিজেও গতকাল দিয়েছেন সে আভাস ‘পরিবর্তন ১০০ টেস্টের জন্য নয়, কন্ডিশনের জন্য করতে হবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন