আবদুল আউয়াল ঠাকুর : ভাষার মাস বলে পরিচিত ফেব্রুয়ারির আজ শেষ দিন। বলতে দ্বিধা নেই, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর এ মাসটি ব্যতিক্রমী আলোচনার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। এসব আলোচনায় জাতীয় সংস্কৃতি রক্ষার তাগিদ,ভাষার উৎকর্ষের প্রয়োজনীয়তা এবং সর্বোপরি দেশ পরিচালনার মৌলিক প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা ভাষার সমৃদ্ধির বিবেচনায় অনুবাদ সাহিত্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। অন্য অনুষ্ঠানে তিনি ভাষার উন্নয়নের প্রতি এবং ভাষার বিকৃতি রোধে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রাসঙ্গিক আলোচনায় তিনি বলেছেন, বাংলাকে বিকৃত করে ইংরেজি অ্যাকসেন্টে বাংলা বলাকে কেউ কেউ গৌরবের মনে করেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভাষা বিকৃত করা যাবে না। এদিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দলীয় আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী ১/১১-এর সূত্র ধরে বলেছেন, ...ডিজিএফআইয়ের লিখে দেয়া মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে সে সময়ে রাজনীতি থেকে আমাকে এবং খালেদা জিয়াকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের চামচাদের বিচারের আওতায় আনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের মতো গণতন্ত্র ও সংবিধান ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার জন্য তাদেরও একদিন বিচার হবে। এছাড়াও ওয়ান-ইলেভেনের সময় দেশবিরোধী কর্মকা-ে জড়িতদের বিচারের ভার তিনি জনগণের উপর অর্পণ করেছেন। মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের পথিকৃত সংগঠন তমদ্দুন মজলিশের বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন শীর্ষক আলোচনা সভায় বর্তমান সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা বলেছেন, দেশের প্রতিটি পরিবার আজ সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার। চলমান সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ধরন ও প্রকৃতি বিষয়ক এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে দৈনিক ইনকিলাবে বলা হয়েছে, বাংলা ভাষার উপর হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে কেউ কোন রা করছেন না। আমাদের বাংলাভাষার উপর বর্তমানে ইংরেজির আগ্রাসন বেশি না হিন্দির...। এখন আকাশ সংস্কৃতির বদৌলতে হিন্দি কার্টুনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। তমদ্দুন মজলিশের আলোচনা সভায় বিশিস্ট বিজ্ঞানী ড. শমশের আলী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঘরে ঘরে প্রতিরোধ শুরু করা আহ্বান জানিয়েছেন।
ভাষার উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং একে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণের কথা প্রথাগতভাবে কেবলমাত্র ফেব্রুয়ারি মাসেই শোনা যায়। এই লক্ষ্য অর্জনে সারাবছরে কার্যকর কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় না। অতীত বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে একই ধরনের রিপোর্ট পত্র-পত্রিকা বা মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। একসময়ে এ মাসে দেশের তরুণ শিক্ষার্থী ও সচেতন রাজনৈতিক কর্মীরা মাঠে নামতেন বিদেশি ভাষায় লিখিত সাইন বোর্ডসহ অন্যান্য লিখন ভাঙতে, মুছতে। এখন আর সে ধরনের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় না। রাস্তার দু’পাশে বিজ্ঞাপনী সংস্থার বদৌলতে যে ধরনের বিজ্ঞাপনের সাথে জনগণ পরিচিত হচ্ছে একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, তার সাথে আবহমান সংস্কৃতির কোন সম্পর্ক নেই। নামকরণ এবং লিখনে পর্যন্ত বাংলা হরফের প্রকৃত ব্যবহার অনুপস্থিত। এ ক্ষেত্রে ইংরেজি শব্দ বাংলায় লিখিত হচ্ছে অনেকটা হিন্দি হরফে। এমনকি বাংলাদেশের কোন কোন টিভি চ্যানেলও তাদের নাটকের বিজ্ঞাপনে বাংলা বর্ণমালা হিন্দি ফর্মে লিখছেন। এসব সবার চোখের সামনেই হয়ে আসছে। কেউ দেখছেন বা এটা কোন অপরাধ সেরকম মনে হয় না। অবশ্যই ভাববার রয়েছে ভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিষয়টি কার্যত কোন বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। যে ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য আমাদের পূর্ব পুরুষেরা প্রাণ দিলেন, যাদের আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করি তাদের চেতনাকে অপমান করার এই প্রবণতা কেন? ’৫২ থেকে ২০১৬ অনেক সময় আমরা পেরিয়ে এসেছি। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদান করেছি। ২১ ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরেও বাংলা বিশ্বের দরবারে কতটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বা হতে পেরেছে সে বিষয়টি যে প্রশ্নাতীত নয়, সেকথাই ফুটে উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। মূল ভাবনা এখানেই। বিশ্বের পরাশক্তিসমূহের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের বক্তব্য শোনার জন্য বা অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলোতে কর্ম সংস্থানের জন্য আমরা সেসব দেশের ভাষা অনায়াসে শিখছি। এমনকি জাপান-কোরিয়ার ভাষাও দেশে বিজ্ঞাপন দিয়ে শেখান হচ্ছে। সে বিবেচনায় বলা যায়, বাংলাদেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের ভাষণ শোনা বা বাংলাদেশে আসার জন্য বিশ্বের কতভাগ লোক বাংলা শিখছে। এখানেই বোধহয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সফলতার প্রসঙ্গ বড় হয়ে দেখা দেয়। এই আলোচনায় প্রাসঙ্গিক দু’য়েকটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। অফ্রিকার কিছু দেশে শান্তি মিশনের হয়ে বাংলাদেশের বাহিনী কাজ করছে। ঐসব দেশে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মিশনও নেই। অথচ অনেক দেশ বাংলা ভাষাকে যেমনি সম্মান দেখাচ্ছে তেমনি দেশের অনেক সড়কের নামও বাংলদেশের নামে রেখেছে। আবার বিশ্ব ইজতেমায় যেসব বিদেশি বাংলাদেশ সফরে আসছেন তারা কমবেশি বাংলা শিখছেন। অন্তত কেমন আছেন, ভালো আছি ,আবার আসবেন, ধন্যবাদ এতটুকু হলেও শিখে নিচ্ছেন। এথেকে বোঝা যায়, বাংলাদেশে যদি অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হতো ব্যবসা বাণিজ্যে যদি ভালো অবস্থা অব্যাহত রাখা যেত এবং সর্বোপরি যদি বাংলদেশ যদি বিশ্ব দরবারে তাকে তুলে ধরতে পারত, বিদেশিদের আকৃষ্ট করার মতো বাস্তবতা তৈরি করতে পারত তাহলে অবশ্যই বিশ্ব দরবারে বাংলার প্রতিষ্ঠা সহজতর হয়ে উঠত। সোজা কথায় বলা বলা যায়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তার ছাড়া ভাষার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠার সহজ কোন পথ নেই।
ভাষার বিকাশে মেধা-মননের বিষয়টি যেকোন বিবেচনাতেই সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কোন পুরস্কার কোন ব্যক্তি বিশেষের খ্যাতি বিশ্ব দরবারে জাতি ও ভাষার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বাংলা সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাহিত্যে তার উপজীব্য ছিল তৎকালীন পূর্ব বাংলা বা আজকের বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশে সেই সৌন্দর্য্য, জীবনবোধ লিখে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে কেন তুলে ধরা যাচ্ছে না? প্রধানমন্ত্রী অনুবাদ সাহিত্যের উপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এটি কোন ভাষা থেকে কোন ভাষায় বাংলা থেকে অন্য ভাষায় না অন্য ভাষা থেকে বাংলায় হবে সেটি কিন্তু ভাষার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির বিবেচনায় ভাবতে হবে। আমাদের দূতাবাসগুলো ভাষার উন্নয়নে কার্যত কোন ভূমিকা রাখছে কিনা সেটিও ভাবতে হবে। বাংলাদেশে এমন অনেক দেশের দূতাবাস রয়েছে যারা তাদের ভাষাকে সাধারণের মঝে প্রচারে অনেক কিছু করছে। বোধকরি এখানে লেখক তথা বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকাকে খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ রয়েছে, আমাদের অনেকেই অনূদিত বইয়ের বাংলা সংস্করণ প্রকাশ করছেন। প্রধানমন্ত্রী ইংরেজি অ্যাকসেন্টে বাংলা বলার যৌক্তিক তীব্র সমালোচনা করেছেন। আজকের বাংলাদেশে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে হিন্দি। আকাশ সংস্কৃতি গেড়ে বসেছে সর্বত্র। মাত্র কিছুদিন আগেও অবস্থা এমন ছিল না। এখানেও রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে আহ্বান জানিয়েছেন তার একটি রাজনৈতিক প্রসঙ্গ রয়েছে। এর সাথে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের যোগসূত্র রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে একথাও ঠিক যে, নানা প্রয়োজনে ইংরেজি ভাষা শিখতে হচ্ছে। তার অর্থ এই নয় যে, বাংলাকে ইংরেজি অ্যাকসেন্টে উচ্চারণ করতে হবে। কার্যত বাংলা ভাষা ও আমাদের সংস্কৃতি ভয়াবহভাবে আজ যে হিন্দি আগ্রাসনের শিকার তার বিরুদ্ধে জনসাধারণকে সচেতন করাই সবচেয়ে জরুরি। সেই ষষ্ঠ শতক থেকে চলে আসা আমাদের বাংলার যে গৌরব-আভিজাত্য স্বাতন্ত্র্য তাকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার বিষয়টিকেই বিবেচনায় নিতে হবে। সে কারণেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব অবদমিত হলে ভাষার এগিয়ে চলার মতো শক্তি থাকে না। এখানেই জনগণের শক্তি সাহস বড় হয়ে ওঠে। যে ভাষার মর্য়াদা প্রতিষ্ঠায় অমরা জিন্নার ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলাম আজ সেই প্রতিবাদ কোথায়?
ভাষা তো জনণের মুখের বুলি। জনগণের চিন্তা প্রকাশের বাহন। বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে মত প্রকাশের ন্যূনতম বাস্তবতা নেই। স্বাধীন চিন্তা করা, চলাফেরা করার অধিকারও বিঘিœত। বইমেলা নিয়ে আমরা অনেক কথা বলি। বাস্তবে এখানে জাতীয় মেধা-মননের কতটা সম্মিলন হচ্ছে সেটাও ভাববার রয়েছে। জাতীয় সংস্কৃতির লালন ছাড়া খ্যাতি অর্জন প্রায় অসম্ভব। এখানে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং নেতৃত্বের মৌলিক ভাবনা রয়েছে। মাতৃভাষার আলোচনায় এবারে প্রধানমন্ত্রী সে প্রসঙ্গও তুলেছেন। তিনি সুনির্দিষ্ট করে ১/১১-এর সময়ে তাকে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার যে প্রসঙ্গ তুলেছেন সেটিকে হালকাভাবে দেখার কোন সুযোগ নেই। তার ভাষ্যে দেশের সে সময়কার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তাতে এক অর্থে নতুনত্ব কিছু নেই। তিনি বিরাজনীতিকরণের যে কথা তুলেছেন তাকে যদি মত প্রকাশ বা জাতীয় প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষিতে বিবেচনা করা যায়, তাহলে বলা যাবে, এটা ছিল জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। তার সাথে বেগম জিয়াকে যুক্ত করে তিনি যে প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন সেটি অবশ্যই জাতীয় সমৃদ্ধির বিবেচনায় নতুন প্রেক্ষিত ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের এখন যে রাজনৈতিক বাস্তবতা হতে এই বক্তব্য প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তিনি বলেছেন, যারা দেশকে বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছে তাদের উদ্দেশ্য আর যাই থাক দেশপ্রেম ছিল না। ঐ সরকার প্রধানত ছিল নাস্তিক্যবাদী। তারা দেশের মৌলিক চেতনায় মারাত্মক আঘাত হেনেছিল। কে বা কারা এর ইন্ধনদাতা ছিল অথবা কোন প্রক্রিয়ায় ঐ সরকার ক্ষমতায়িত হয়েছিল সে আলোচনায় নতুনত্ব কিছু সেই। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশকে সমৃদ্ধ করতে রাজনীতিকরণের দিকে যে দৃষ্টি নিবন্ধ করেছেন তাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করলে অবশ্যই বলতে হবে ঐ সময়কার মামলাগুলো থেকে বেগম জিয়া এবং বিএনপিকে অব্যাহতি দেয়া রাজনৈতিকভাবে সঙ্গত। অন্যথায় তাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যের সাথে বর্তমান সরকারের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের কোন পার্থক্য করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী ঐ সরকারের বিচারের কথা বললেও তার ভার জনগণের উপর ছেড়ে দেয়ার ফলেও কিছু ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে যদি ও কিন্তুর বিষয় থেকে থাকতে পারে। এদিকে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় যারা রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীদের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন সেইসব কুশীলবের বিচারের দাবিতে এক কণ্ঠে বক্তব্য দিতে শুরু করেছে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক মহল। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে কে কি করেছে তা খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠন করার দাবি করেছে। একে এক ধরনের মতৈক্য মনে করা গেলে তা চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক লাঘবে অনেকটা ইতিবাচক মনে করার সঙ্গত কারণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বেগম জিয়ার নাম উচ্চারণের মাধ্যমে যে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং এর মধ্যে যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বহন করছে তার প্রকৃত সুফল নির্ভর করবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর।
ভাষার উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, জাতি গঠন, রাজনীতিÑ এর কোনটিই আলাদা নয়। যে জাতি যত বেশি সমৃদ্ধ তার ভাষাও তত বেশি সমৃদ্ধ। মূলত রাজনীতিকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানো না গেলে অথবা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা না গেলে জাতীয় প্রতিষ্ঠা অর্জন সম্ভব নয়। জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ তথা জনগণের ভোটাধিকার প্রত্যার্পণের কোন বিকল্প নেই। এই সঙ্গে অবশ্যই ভাষার প্রতি অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দৃঢ় হতে হবে। এটা সকলেরই মনে রাখা দরকার, ভাষা সংস্কৃতি না বাঁচলে রাজনীতিও টিকবে না।
awalthakur@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন