সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

পরিচ্ছন্ন কর্মীর সাজে মেয়র আনিসুল হক

| প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী শহর ঢাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তুলতে ঝাড়ু হাতে রাজপথে নেমেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। গতকাল শনিবার দুপুরে গুলশান লেক পার্কে সড়ক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধনী ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে ঝাড়ু হাতে রাজপথ পরিষ্কার করেন তিনি। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে গুলশান সোসাইটি ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
এর আগে সোসাইটির সভাপতি ডা. এটিএম নাজমুল হুদার কাছ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পোশাক পেয়ে মেয়র আনিসুল হক বলেন, কেমন লাগছে দেখতে আমায়? পাশের সিটে বসা অনেকেই বলছেন আমায় দেখতে বেশ লাগছে। গুলশান লেক পার্ক সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেয়র আনিসুল হক বলেন, জনগণের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পুরো এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করছি। আগামী দুই বছরে ডিএনসিসিতে ৫ হাজার ২০০ সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। সড়কে এলইডি বাতিও লাগানো হবে। ঢাকা শহরকে বদলে দেব।
আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে ২১টি ইউলুপ নির্মাণ করা হবে। সব কাজ সময় নিয়ে করছি। তাতে একটু দেরি হতেই পারে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা রাজধানীর ৬৩টি এলাকায় ২ হাজার ৫০০ টন বর্জ্য পরিষ্কার করছি। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঢাকা শহরকে সিঙ্গাপুর বানানো হবে। কোনো যানজট থাকবে না, থাকবে না অপরিষ্কার কিংবা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশও। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, মেয়র একা কোনো কাজ করতে পারে না। মেয়রের চারপাশে অনেক হাত। যখন এ হাতগুলো এক হয় তখন মেয়রের শক্তি বেড়ে যায়। তখন সব সমস্যার সমাধান এমনিতেই হয়ে যায়। ঢাকা শহরকে বদলানোর প্রতিশ্রæতি নিয়ে কাজ করছি। অনেক কাজ যে করে ফেলেছি সেটিও কিন্তু নয়। তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি বলে জানান আনিসুল হক।
তিনি বলেন, একটা সময় ছিলো যখন গ্রিন ঢাকার কথা বলতাম। বিলবোর্ডের জন্য আকাশ দেখা যেতো না। প্রেমিকা ডাক দিলে দূর থেকে শোনা যেতো না। এই বিলবোর্ড আমরা সাফ করেছি। শুনেছিলাম একটি বিলবোর্ড সাফ করতে কারো হাত কেটে নেওয়া হয়েছে। অথচ সিটি কর্পোরেশনের সবাই মিলে আমরা ২০ হাজার বিলবোর্ড ঢাকা শহর থেকে পরিষ্কার করেছি। এছাড়া আমরা গত বছর ঢাকা শহরে ৩২ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এ বছর আরো বেশি গাছ লাগাবো। আর গুলশান সোসাইটি যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তাতে আগামী ২-৩ বছর পর বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে মানুষ আসবে ঢাকা শহর দেখতে।
মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশন চাইলে ২-৩ মাসে রাস্তা করতে পারে, তাতে পানিবদ্ধতা দূর হবে না। আগে বৃষ্টি হলে ঢাকা শহরের ২১টি এলাকায় পানি উঠত, এবার ৩টি এলাকায় পানি উঠেছে। আমরা আস্তে আস্তে কাজ করছি। এর চেয়েও বড় কথা, গুলশান ১ থেকে গুলশান ২ এর ৪৯ নম্বর রোড অবিধ যখন কাজ শুরু করি, তখন ১৬টি স্থানে ধনী শ্রেণি রাস্তা দখল করে রেখে ছিলো। সাধারণ হকারকে পুলিশ পিটিয়ে তুলে দিতে পারে, কিন্তু এরা এতোই শক্তিশালী যে আমাদেরকেই পিটিয়ে তুলে দিতে পারে। এরা জায়গা দখল করে বড়বড় বাড়ি তৈরি করেছে। কিন্তু তারা শক্তিশালী হোক, ১ ইঞ্চি জায়গাও ছাড় দেওয়া হয়নি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- রাজউকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এম আব্দুর রাজ্জাক, গুলশান সোসাইটির সভাপতি ডা. এটিএম শামসুল হুদা, সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ডিএনসিসি ও গুলশান সোসাইটির মধ্যে করা সমঝোতা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে গুলশানের ৭০টি অভ্যন্তরীণ সড়কের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
গুলশান সোসাইটির নিযুক্ত ১০০ পরিচ্ছন্নকর্মীর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে সড়কগুলো পরিচ্ছন্ন করা হবে। ডিএনসিসির বর্জ্যবাহী গাড়ি স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সড়ক বর্জ্য পরিবহন করে ল্যান্ডফিলে নিয়ে যাবে। পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে এ উদ্যোগে সহযোগিতা করছে ডিএনসিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন