মোহাম্মদ আবদুল গফুর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছে এপ্রিলে ভারত সফরে যাচ্ছেন। এ সফরে দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয়ে আলোচনা, সমঝোতা বা চুক্তি হতে পারে সেসব নিয়ে দুই দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার মন্তব্য প্রকাশিত হয়ে চলেছে। ভারত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ এ মুহূর্তে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতায় রয়েছে সেটি যে কোনো কারণেই হোক, জনগণের কাছে ভারতের প্রতি দুর্বল তথা ভারতপন্থি সংগঠন হিসেবে পরিচিত। সঙ্গত কারণেই ভারত চাইছে এই সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা হলে ভারত তাতে সর্বাধিক লাভবান হতে পারবে।
এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ভারতীয় নেতৃত্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ ভারত সফরকে মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে চাইছেন। শুধু মনে মনে গুরুত্ব দিতে চাওয়া নয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তারা তাদের বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, তাকে তারা কত অধিক মর্যাদা দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তারা শুধু সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংবর্ধনাই দেবেন না, সফরকালে তাঁর অবস্থানের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বাসভবনও স্থির করে রেখেছেন। এখানে উল্লেখযোগ্য, ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী হওয়ায় নৃতাত্তি¡ক ও ভাষাগত পরিচয়ে তিনিও একজন বাঙালি তথা ভারতীয় বাঙালি। সেখানে দুই রাষ্ট্রনেতা তাদের মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলে অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠার সুযোগ পাবেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এ আয়োজনকে সমালোচকরা সম্ভবত পোষ-মানা হাতি দিয়ে বন্যহাতি শিকার-প্রয়াসের সাথে তুলনা করতে চাইবেন। তবে এতটুকু চতুরতা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কখনও গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয় না।
দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের মধ্যে যখন আলোচনা হয় তখন নিশ্চয়ই নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি থাকে। থাকে আলোচ্যসূচিকে উপলক্ষ করে দুই রাষ্ট্রের কিছু লক্ষ্য। এ লক্ষ্য যাদের যতটা সুপরিকল্পিত থাকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় তাদের সাফল্য অর্জনের সম্ভবনা তত বেশি। এ ব্যাপারে যদি বাংলাদেশের জনগণের মনোভাবের প্রশ্ন ওঠে, তা হলে বলা যায়, এদেশের জনগণ ভারতের সাথে সকল অমীমাংসিত সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান চায় এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে। বাংলাদেশের জনগণের এতটুকু বাস্তবতা-চেতনা রয়েছে, পৃথিবীতে বিধাতা যে দেশকে যাদের প্রতিবেশী করে দিয়েছেন দেশত্যাগ না করে তার পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এবং যাকে ইচ্ছে করলেই পরিবর্তন করা যায় না, সেই প্রতিবেশী দেশের সাথে সকল অমীমাংসিত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রশ্ন ওঠে, কোন-কোন বিষয় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অদ্যাবধি অমীমাংসিত সমস্যা হিসেবে বিরাজ করছে? এখানে উল্লেখ্য, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের দু-দুবার স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। একবার ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসকদের নিকট হতে, আরেকবার ১৯৭১ সালে তদানীন্তন পাকিস্তানের সামরিক সরকারের হাত হতে। দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম যা মুক্তিযুদ্ধ নামে ইতিহাসে পরিচিত হয়ে আছে সেসময় ভারত একপর্যায়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য দানে এগিয়ে এসেছিল এবং সে সাহায্য দানের সুযোগে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারকে ভারতের সঙ্গে এমন এক অসম চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করে। যা পর্যন্ত কার্যকর থাকলে বাংলাদেশ হয়ে পড়ত ভারতের আশ্রিত রাষ্ট্র। সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি জেলে অধিক ছিলেন। ভারতীয় নেতৃত্বের সম্ভবত ধারণা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু কোনো দিনই জীবিত বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবেন না। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তিনি জীবিত অবস্থায় পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তার এ অভাবিত প্রত্যাবর্তনের ফলে বাংলাদেশ ভারতের চাপিয়ে দেয়া অসম চুক্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরুর সুযোগ পায়।
আমরা এখানে ১৯৭১ সালের সেই অসম চুক্তির দুঃখজনক বিষয়সমূহ ইচ্ছা করেই এড়িয়ে যেতে চাই। আমরা বরং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বন্ধুসুলভ সাহায্য দানের জন্য ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ থাকতে চাই। কিন্তু পরবর্তীকালে ভারতের অমিত্রসুলভ আচরণের ফলে যেসব সমস্যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক নির্মাণের পথে অদ্যাবধি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে সেসবের শান্তিপূর্ণ সমাধান কামনা করি। আমরা বিশ্বাস করি, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে।
এ পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয় এখনও অমীমাংসিত সমস্যা হিসেবে বিরাজ করছে, সেগুলোর উল্লেখ করা যেতে পারে। তবে সেসব বিষয়ে উল্লেখ বা আলোচনা অর্থহীন হয়ে পড়বে যদি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের মূল ভিত্তি সার্বভৌম সমতার ওপর স্থাপিত বিবেচনা না করা হয়। পৃথিবীতে কোনো দুটি দেশ বা রাষ্ট্রই কখনও সব দিক দিয়ে সমান শক্তিশালী হয় না বা থাকে না। তার পরও জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী সকল স্বাধীন রাষ্ট্রই সমান মর্যাদার অধিকারী। এই বাস্তব সত্যটা যদি প্রতিবেশী দেশ স্মরণে রাখে, তা হলে বাংলাদেশের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা মোটেই কঠিন নয়।
দুঃখের বিষয়, প্রতিবেশী দেশ ভারত তার বৃহৎ হওয়ার কথাটা যত বেশি স্মরণ রাখে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত, যে সৌভাগ্য ভারতের হয়নি, সেই বাস্তবতাটাকে এতটা গুরুত্ব না দেয়া এটা তার এক বড় ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার কারণেই ভারতের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের প্রতি আধিপত্যবাদী মনোভাবের পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিকামী সংগ্রামী জনগণের কাছে নিজেদের অপ্রিয় অশ্রদ্ধেয় করে তুলেছে, যা তাদের করার কথা ছিল না। ভারতের নেতৃবৃন্দের সকলকে আমরা এ জন্য দোষী সাব্যস্ত করব না। নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে এখন অনেকে আছেন যারা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি সমভাবে শ্রদ্ধাশীল। যারা পৃথিবীর সকল মানুষকেই মহান স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে সমান মর্যাদা দানে বিশ্বাসী এমন লোক ভারতে নিশ্চয়ই আছেন। কিন্তু মনে হয় তাদের সংখ্যা সে দেশে ক্রমেই কমে আসছে। দ্রুত বেড়ে চলেছে এমন সব মানুষের ও এমন সব নেতার সংখ্যা যারা তাদের বিশ্বাস ও ধর্মীয় মতামতকে অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেবার লক্ষ্যে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কীভাবে দ্রæত বিষাক্ত হয়ে উঠছে, তার একটা সংক্ষিপ্ত চিত্র আমরা গত সোম ও মঙ্গলবার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে পেতে পারি। এখানে এমন কয়েকটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো : গত সোমবার দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ : আদিত্যনাথকে নিয়ে মোদির প্রত্যাশা’। বিবরণীতে বলা হয়, ‘ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গতকাল রোববার শপথ নিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ উত্তর প্রদেশকে উত্তম প্রদেশে পরিণত করবেন।... তবে আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করায় অনেকের আশংকা, বিজেপি হয়তো আগামী দিনে উন্নয়নের বদলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে বেছে নেবে।’
সোমবারের দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল : ‘পুরো পৃথিবীতে গেরুয়া ঝান্ডা উড়বে’। তথ্য বিবরণীতে ছিল : উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই একদিকে উচ্ছ¡াস অন্যদিকে সমালোচনা। হিন্দুত্বের প্রচারক কোনো ব্যক্তি উত্তর প্রদেশের মতো রাজ্যের মসনদে বসছেন দেখে খুশি হয়েছেন বিজেপি ও সংঘ পরিবারের সমর্থকরা। কিন্তু পাশাপাশি চলছে নানা সমালোচনাও। কেননা অতীতে অনেক বিতর্কিত ও ভয়াবহ মন্তব্য করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। অতি সম্প্রতি সব থেকে বিতর্কিত মন্তব্য ছিল এটি : ‘যদি অনুমতি পাই তা হলে দেশের প্রতিটি মসজিদে গৌরী গণেশের মূর্তি স্থাপন করে দেব। পুরো পৃথিবীতে গেরুয়া ঝান্ডা উড়বে।’
গত মঙ্গলবারের দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল- ‘বিজেপি ক্ষমতায় আসার দ্বিতীয় দিনেই মুসলিম নেতাকে গুলি করে হত্যা’। প্রতিবেদনের বিবরণীতে বলা হয় : ‘উত্তর প্রদেশে বিতর্কিত নেতা যোগী আদিত্যনাথের ক্ষমতা গ্রহণের দ্বিতীয় দিনেই খুন হলেন প্রভাবশালী মুসলিম নেতা মোহাম্মদ সামি।’
গত মঙ্গলবার দৈনিক যুগান্তরে এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল : উন্নয়নের পরিবর্তে হিন্দুর অংক/গড ইজ ব্যাক তত্তে¡ মোদির। তথ্য বিবরণীতে বলা হয় : ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রচার কৌশল হিসেবে রামমন্দিরকে অগ্রাধিকারে রাখেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কংগ্রেসের নেহেরুবাদী বহুত্ববাদের বিপরীতে এক পাল্টা তত্ত¡ তৈরি করেন তিনি। সাফল্যও পান। যুক্তরাষ্ট্রে কট্টরপন্থি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাফল্য এবং বিশ্বজুড়ে একই ধরনের শক্তির উত্থানের পর মৌদির সামনে এখন এ বিশ্বাস আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে যে, গোটা দুনিয়ায় নতুন এ প্রবণতা এসেছে যাকে বলা হচ্ছে ‘গড ইজ ব্যাক’ তত্ত¡। উন্নয়নের পরিবর্তে ভারতে হিন্দুত্বের চাষের জন্য উর্বর জমি তৈরি করেছেন তিনি। ২০১৪ সালের পর ২০১৯ সালের এই রাজনৈতিক লাইনকে নিয়ে আরও একধাপ এগোতে চান তিনি। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যাঁর সরকারের এ ধরনের কট্টর সাম্প্রদায়িক ভ‚মিকা সেই নরেন্দ্র মোদি অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র মুসলিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে কতটা উদার নীতি অবলম্বন করবেন তা বুঝতে কষ্ট কল্পনার প্রয়োজন হয় না। তাই তো গত মঙ্গলবারের দৈনিক ইনকিলাবের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান সংবাদ প্রতিবেদনের সাত কলামব্যাপী শিরোনাম ছিল : ‘শর্তের জালে তিস্তা চুক্তি’। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যেসব বিষয় অদ্যাবধি অমীমাংসিত সমস্যা হিসেবে বিরাজ করছে তার মধ্যে তিস্তা নদীর পানির হিস্যা সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভবত এক নম্বরে রয়েছে।
তিস্তা নদীর উজানে ভারত গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা নদীর প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ থেকে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করার পর এবং এ সম্পর্কে বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতির পরও এ যাবৎ ভারত যে এ ব্যাপারে বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এটা শুধু দুর্ভাগ্যজনকই নয়, দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নিরিক্ষে চরম দুঃখজনকও বটে। এর ফলে গোটা উত্তরবঙ্গের বিশাল এলাকায় কৃষি বাণিজ্য এবং পরিবেশ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আসন্ন ভারত সফরকালে বাংলাদেশের নিরিখে এই মহাগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এমন কথা উভয় দেশের দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ একাধিকবার বলে থাকলেও সর্বশেষ জানা গেছে, শেখ হাসিনার ভারত সফলকালে তিস্তা চুক্তি আদৌ স্বাক্ষরিত হচ্ছে না ।
বিপরীত ক্রমে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের এক বিবৃতি সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা চুক্তি নয়, শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরকালে গুরুত্ব পাবে দুই দেশের মধ্যেকার কানেকটিভিটি।
এতে কী প্রমাণিত হয়? প্রমাণিত হয় যেসব বিষয় বাংলাদেশের সার্বভৌম অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য, সেসব ব্যাপারে ভারতের উদাসীনতা পর্বত প্রমাণ। অন্যদিকে যেসব বিষয় বাংলাদেশের স্বাধীন-সার্বভৌমত্বকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, সেসব বিষয়ে ভারতের আগ্রহ সীমাহীন। শুধু আগ্রহই নয়, সেসব ব্যাপারে ভারতের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ দেখে মনে হয়, এই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে নিরাপোষ ভ‚মিকা পালন করতে পারে। বলাবাহুল্য, এটা বাংলাদেশের প্রতি ভারতের ন্যূনতম বন্ধুসুলত মনোভাবের প্রমাণ বহন করে না। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন নেতৃবৃন্দ আর কতদিন ভারতের এসব বাংলাদেশবিরোধী নীতিকে চোখ বুজে প্রশয় দিয়ে যাবেন এটাই জনগণের প্রশ্ন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন