রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

অনিয়মে মিলছে না চিকিৎসাসেবা ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামসুল হুদা লিটন, কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘুষ, দুর্নীতি, আত্মসাৎসহ সার্টিফিকেট বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে একমাত্র সরকারি এই হাসপাতালটির প্রশাসনিক কার্যক্রম বেসামাল হয়ে পড়েছে। প্রশাসনিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মটাই যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সীমাহীন দুর্নীতি, নানা অনিয়ম, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে অভিযোগে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ফলে হাসপাতাল প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। আপাতত দৃষ্টিতে তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বরং হাসপাতালের কার্যক্রম গতানুগতিকভাবেই চলছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত এ বিষয়টি ‘টক অব দি কাপাসিয়া’য় পরিণত হয়েছে। সরেজমিনে গত কয়েক দিনের অব্যাহত তদন্তে নানা কৌশলে হাসপাতালের টাকা আত্মসাতের ঘটনা বেরিয়ে আসছে। জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকে ৩ টাকার পরির্বতে ৫ টাকা নেয়া হচ্ছে। গত কয়েক মাসের হিসাবে দেখা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৫ হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। শুধুমাত্র গত ফেব্রæয়ারি মাসের হিসাবে দেখা গেছে, অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এভাবে বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। সংবাদ প্রকাশের পর বদলি হয়ে যাওয়া মেডিকেল আবাসিক ডাক্তার মাছুম বিল্লাহ্ এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজমুল ও সুফিয়া বেগম দীর্ঘদিন যাবত আবাসিক সুবিধা নিলেও তাদের বেতন থেকে নির্ধারিত বাসা ভাড়া কর্তন করা হয়নি। অভিযোগের ফলে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস ডা. মাছুম বিল্লাহর ফেব্রæয়ারি মাসের বেতন-ভাতা স্থগিত রেখেছেন। স্টাফ নার্স নাজমুল ও সুফিয়া জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আ. ছালাম তাদের আবাসিক সুবিধা ফ্রি করে দিয়েছেন। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আ. ছালাম জানান, কমপ্লেক্সের বাসা বাড়িতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টাকা দিয়ে থাকার মতো পরিবেশ নেই। প্রয়োজনে তাদের নামে বাসা বরাদ্দ দেয়া হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আ. ছালাম হাসপাতালের নানা অব্যবস্থাপনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ডাক্তার নেই, পরীক্ষাগারের অপারেটর নেই, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম, অ্যানে্েস্থসিয়া অপারেটর নেই এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে পর্যাপ্ত লোকবল নেই। স্থানীয় এমপি মহোদয় একজন পরিচ্ছন্ন কর্মীর বেতন পরিশোধ করেন। অথচ আমি ব্যক্তিগতভাবে ৫ জন কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করে থাকি। এজন্য আমাকে নানা পথ অবলম্বন করতে হয়। বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মাসোহারা নেয়ার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, হাসপাতালের কাজে ব্যবহারের জন্য আইপিএস ও আসবাবপত্র ক্রয়সহ বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে তাদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নেয়া হয়। হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তাররা নিয়মিত উপস্থিত না হলেও হাজিরা খাতায় উপস্থিতির সুযোগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ডাক্তার জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন