রোববার, ২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শিক্ষক না থাকায় শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীরা খেলে ক্যারামবোর্ড

দুপচাঁচিয়া করমজী মজিদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

| প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের করমজী মজিদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান গ্রহণ না করে খেলছে ক্যারামবোর্ড। এতে লেখাপড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় চলাকালীন দুপুর ১২টায় সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ১৯৭২ সালে স্থাপিত উপজেলার করমজী মজিদিয়া সরকারী এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে। এদের মধ্যে গত ৬ মাস যাবৎ সহকারী শিক্ষিকা তানজিলা আক্তার মাতৃকালীন ছুটিতে রয়েছেন। প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ নাছরিন আক্তার গত ৩ দিন ধরে নৈমিত্তিক ছুটিতে। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১ জন শিক্ষক তোজাক্কের রহমান। বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫৪ জনের স্থলে উপস্থিত রয়েছেন ৩৬ জন ছাত্রছাত্রী। এ দিকে ওই দিন বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক না থাকায় উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণীকক্ষেই ক্যারামবোর্ডসহ মাঠে বিভিন্ন খেলাধুলায় মেতেছিল। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর মুঠোফোনে কর্মরত একমাত্র শিক্ষক তোজাক্কের রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে তিনি বাড়িতে গিয়েছেন। বিদ্যালয়ে টয়লেট থাকা সত্তে¡ও কেন বাড়িতে গিয়েছেন এ প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনছার আলী ‘দৈনিক ইনকিলাব’কে জানান, একজন শিক্ষকের পক্ষে শিশু শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ৬টি শ্রেণীতে পাঠদান করা সম্ভব নয়। বিদ্যালয়ের ২শ’ গজ দূরে অপর আরো একটি করমজী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। তার বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে ছাত্রছাত্রীরা ওই বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। শিক্ষক সংকটের বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অবগত করে শিক্ষকের জন্য একাধিকবার ধরনা ধরে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে দিন দিন তার এই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হ্র্যাস পাচ্ছে। অপরদিকে যারা বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছেন শিক্ষক সংকটের কারণে সেই সব ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষকরা নিয়মিত না আসায় ছাত্রছাত্রীরা ইচ্ছামত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শ্রেণীকক্ষেই ক্যারামবোর্ডসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার যখন শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে তেমনি মুহূর্তে উপজেলা সদরের বিদ্যালয়ের এ দুরবস্থা দেখার যেন কেউ নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমজিএম সারোয়ার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিদ্যালয়টিতে অনুমোদিত শিক্ষকের সংখ্যা ৩ জন। এদের মধ্যে ২ জন ছুটিতে থাকায় শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষক ডেপুটিশেন দেয়ার ক্ষমতা তার হাতে নেই। ডেপুটিশেন দেয়ার ক্ষমতা মন্ত্রণালয় চলে যাওয়ায় তিনি নতুন করে কোন শিক্ষক ডেপুটিশনও দিতে পারছেন না। এর মাঝেও সমস্যাটি নজরে আসায় স্থানীয়ভাবে সমাধানের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন