রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

অর্থ সংকট ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে উৎপাদন বন্ধের পথে

কর্ণফুলী পেপার মিলস লি.

| প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কবির হোসেন, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) থেকে : এশিয়া মাহাদেশের দ্বাতীয় বৃহৎ কাগজকল কর্ণফুলী পেপার মিলস লি. (কেপিএম) যা রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এ মিলের যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ বছর যাবত এ প্রতিষ্ঠানটি দেশে কিংবা বিদেশে মানসম্মাত কাগজ উৎপাদন করে সুনাম অক্ষুণœ রেখে চলছে। ক্ষেতনামা মিলটি আজ দীর্ঘ এক বছর যাবত কালো মেঘের ছায়া অর্থসংকট এবং সিন্ডিকেটের লোলুপ দৃষ্টিতে পড়ে দিন দিন তার সুনাম, উৎপাদন এবং কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ হতে চলছে। মিলকে নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, অনিয়ম, দুর্নীতি, সজনপ্রীতির কালোগ্রাসে দিন, দিন তার ইতিহাস ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। মিলের কোটি, কোটি টাকার যন্ত্রাংশ, অযতেœ, অবহেলায় পড়ে আছে। দীর্ঘ বছর যাবত মিলের বিভিন্ন শাখা এবং কাপ্তাই চিপিং এন্ড হ্যান্ডিং প্লান্টে মেনটেনিজ (সংস্কার) কাজ না করার ফলে অনেক যন্ত্রাংশ বছরের পর বছর অকেজো হয়ে জং পড়ে যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে এবং মিলের বিভিন্নস্থানে কোটি টাকার জায়গা সম্প্রতি অন্যরা দোখলে নিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছে। যা দেখার মতো বালাই নেই। কয়েক দফায় শ্রমিক বদলি, বেতন বন্ধ, শ্রমিকদের অবসরজনিত প্রাপ্য টাকা এবং বাঁশ সরবরাহ ঠিকাদারদের কোটি টাকা মিল কর্তৃপক্ষের নিকট বছরের পর বছর পাওনা রয়েছে। বর্তমানে মার্চ মাসের বেতনসহ তিন মাসের বেতন শ্রমিকদের বন্ধ রয়েছে। উৎপাদন ৭০ থেকে ১৮ কিংবা ২০ নেমে আসার ফলে মিলে শ্রমিক/কর্মচারীদের বেতনসহ বিভিন্ন পাওনাদি কর্তৃপক্ষ না দেয়ার ফলে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি-দাবা নিয়ে গত দু’মাস পূর্বে কাপ্তাই বড়ইছড়ি প্রধান সড়কে মানববন্ধন করে এবং বিভিন্ন প্লেকার্ডে লেখা থাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাঁচান, মিল বাঁচান এবং মিলের সম্পত্তি বাঁচান। ১১ ফেব্রæয়ারি ২০১৭ সালে সেই মানববন্ধনে সর্বস্তরের লোকজন মিল বাঁচাও নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং সেই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকার। তিনি বলেন, এ সুনামধন্য মিলটি একটি কালো সিন্ডিকেটের ছায়া পড়েছে এবং মিলের অর্থ সংকট প্রচুর রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিসিআইসির মিটিং এ বিষয়ে কথা বলবে বলে উল্লেখ করেন। এদিকে শ্রমিকদের কয়েক দফা বিসি আইসির বিভিন্ন শাখায় বদলি করায় এবং মিলের উৎপাদন কখনও হয় আবার কখনও বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের মধ্যে মিল বন্ধের আতংক বিরাজ করছে। এ দিকে কাপ্তাই চিপিং এন্ড হ্যান্ডলিং প্লান্টে নদীতে কোটি, কোটি টাকার বাঁশ পানিতে নষ্ট হচেছ। রোদ্রে শুকিয়ে যাচেছ। অনেক ঠিকারদার বলেন, মিল কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের টাকা পরিশোধ না করার ফলে তারাও অতিকষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ঠিকাদার শ্রমিকদের কাজের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অনেক ঠিকাদার পালিয়ে পালিয়ে থাকছে। সকল শ্রমিক/কর্মচারীরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি এ মিলকে অর্থ দেয় এবং কালো সিন্ডিকেট থেকে দূরে রাখে তাহলে মিল আবার ঘুরে দাঁড়াবে। মিলের উৎপাদন পূর্বের মতো ফিরে পাবে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ অতি জরুরি বলে উল্লেখ করেন। এদিকে কাপ্তাই বাঁশকেন্দ্রে স্থায়ীসহ ও মাস্টারুল শ্রমকি আছে মাত্র ৮ জন। কাপ্তাই চিপাড় হাইজ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালেহীন চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ১০/১২ বছর যাবত এ চিপারের সংস্কার কাজ হচ্ছে না। পূর্বে এ শাখায় লোকবল ছিল ৩৬ জন এবং বর্তমানে স্থায়ী, মাস্টারুল ও নিরাপত্তাসহ আছে মাত্র ১৭ জন। মিলের প্রধান শাখায় মাল থাকায় এবং কাপ্তাই শাখায় সংস্কার কাজের জন্য উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার ফলে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে পুনরায় বাঁশ চিপ করা হবে বলে উল্লেখ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন