রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

রোগীর স্বজনদের মারধর ও বোনকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

কালিয়ায় রশি দিয়ে বেঁধে চিকিৎসা

| প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : নড়াইলের কালিয়ায় রশি দিয়ে পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় এক গৃহবধূকে চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এই পাষন্ড চিকিৎসক হলো উপজেলার চাঁচুড়ী বাজারের ‘থ্রি স্টার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এর মালিক পল্লী চিকিৎসক রজিবুল ইসলাম মিটু। এই প্রস্তাবিত ক্লিনিকের কোনো অনুমোদন না থাকলেও দেদারছে চিকিৎসা চলছে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে রোগীর বোন শ্লীলতাহানিরও শিকার হয়েছেন। একই সঙ্গে রোগীর মা-বাবা বোনসহ আত্মীয় স্বজনদেরকে দিনভর আটকিয়ে মারপিট করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতরা কালিয়া ও নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জানা গেছে, উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক এখলাছ শেখের মেয়ে মুসানারার (২৭) সঙ্গে ৫ বছর আগে দাদনতলা গ্রামের বাবলু কাজীর ছেলে মামুন কাজীর সঙ্গে বিয়ে হয়। সংসারে টানাপোড়েনের জের ধরে গত ২২ মার্চ সকালে শ্বশুর বাড়িতে মুসানারা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে চাঁচুড়ী বাজারের পল্লী চিকিৎসক রজিবুল ইসলাম মিটুর ‘থ্রি স্টার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ নিয়ে যায়। চিকিৎসক মিটু মুমূর্ষু রোগী মুসানারাকে রশি দিয়ে পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে বেঁধে আত্মহত্যাজনিত রোগের চিকিৎসা দেয়। খবর পেয়ে মুসানারার চাচাতো বোন শাহানারা বেগম (৩০) ওই চিকিৎসকের ক্লিনিকে পৌঁছে চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে চাইলে চিকিৎসক মিঠু রোগীকে না দেখিয়ে কৌশলে অন্য একটি কক্ষের মধ্যে নিয়ে তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। মিঠুর নগ্ন থাবা থেকে বাঁচতে এক পর্যায় শাহানাজ চিকিৎসককে জুতা পেটা করে। এরপর শাহানার মুঠোফোনে খবর পেয়ে রোগীর মা-বাবা বোনসহ আত্মীয়স্বজনরা দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে চিকিৎসক মিঠু রোগীর শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ১৫/২০ জন নিজস্ব সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকদের দিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং বেধড়ক মারপিট করে। এতে রোগীর বৃদ্ধা বাবা এখলাছ শেখ (৬০), মা জরিনা বেগম (৫০), বোন সুলতানা (২৫), আফসানারা (২২) ও দুই চাচী আহত হয়। এরপর আহতদের একটি কক্ষে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আটকিয়ে রাখে। পরে বিকালে চিকিৎসক মিটু নিজেই থানায় ফোন করে পুলিশে খবর দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়। এ সময় রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আত্মীয়-স্বজনদের না জানিয়ে মিটু নিজেই মুমূর্ষু অবস্থায় রোগী মুসানারাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় নির্যাতিতরা একটি লিখিত অভিযোগ করলেও অদ্যাবধি মামলা রেকর্ডভুক্ত হয়নি। এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন আমিন আহম্মেদ খান বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে অবৈধ ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কালিয়া থানার ওসি শেখ গণি মিয়া বলেন, ওই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। সত্যতা প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে মতামত জানতে মুঠোফোনে পল্লী চিকিৎসক রজিবুল ইসলাম মিটুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোগী ছোটাছুটি করছিল তাই রশি দিয়ে বেঁধে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল। এ সময় রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ক্লিনিকে এসে হট্টগোল করছিল। তাই বাজারের লোকজন এসে পুলিশে খবর দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়। শ্লীলতাহানির কোন ঘটনা আমি ঘটাইনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন