চট্টগ্রাম ব্যুরো : সেই নবজাতক ‘একুশ’ কার কোলে যাবে এ সিদ্ধান্ত আজ। তাকে জিম্মায় নেয়ার আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে গতকাল (মঙ্গলবার)। শুনানি শেষে আদালত আজ (বুধবার) এই বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন।
চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও শিশু বিষয়ক বিশেষ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌসের আদালতে ১৬ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১২ জনের আবেদনের উপর শুনানি হয়। বাকি চারজন অনুপস্থিত ছিলেন।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও অতিরিক্ত মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট এম এ ফয়েজ আবেদনকারীদের মধ্যে যেসব নারীর মা হবার সম্ভাবনা নেই এবং যেসব দম্পতি নি:সন্তান তাদের কারও হাতে একুশের দায়িত্ব দেয়ার আবেদন জানান। আদালত শুনানির সমাপ্তি ঘোষণার আগে বলেন, শিশুটিকে দত্তক দেয়ার এখতিয়ার আদালতের নেই। আদালত শুধু জিম্মায় দেয়ার এখতিয়ার রাখে, তা-ও ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত। এর মধ্যে যদি শিশুটির প্রকৃত মা-বাবা এসে তাদের সন্তানকে জিম্মায় রাখতে সম্মতি দেয় তাহলে ১৮ বছর পর্যন্ত রাখা যাবে।
পিপি অ্যাডভোকেট এম এ ফয়েজ বলেন, অনেক আবেদনকারী তাদের আবেদন দত্তক শব্দটি উল্লেখ করেছেন। শিশু আইনের ৬৮ ধারায় আদালতকে জিম্মায় দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এজন্য আদালত দত্তক এবং জিম্মায় দেয়ার বিষয়ে একটা ব্যাখা দিয়েছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের আবেদনের উপর শুনানি হয়েছে তারা হলেন, গৃহিণী জেসমিন আক্তার, শিক্ষিকা লুবনা ইয়াসমিন, ডা. শাকিলা আক্তার, আইনজীবী চুমকি চৌধুরী, শাহিদা জাহান, শাহানার আক্তার, ইয়াসমিন আক্তার, শবনম শারমিন, পুলিশের এস আই পারভিন, গৃহিণী জান্নাতুল ফেরদৌস, ইসরাত জাহান এবং গুলশান আক্তার।
আবেদন করেও আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন নাসিমা বেগম, রুকসানা আক্তার, মনসুর আলম চৌধুরী ও এসআই মো. সাইফুল্লাহ। আবেদনকারীদের পক্ষে উপর শুনানিতে অংশ নেন সাবেক পিপি আবুল হাশেম, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, অশোক কুমার দাশসহ শীর্ষ আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, প্রাণবন্ত একটা শুনানি হয়েছে। এটাই প্রমাণ হয়েছে আমাদের সমাজের মানুষের মধ্য থেকে এখনও মানবিকতাবোধ হারিয়ে যায়নি।
গত ২০ ফেব্রæয়ারি রাতে নগরীর কর্ণেলহাট এলাকার লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংলগ্ন আবর্জনার ভাগাড় থেকে নবজাতকটিক উদ্ধার করে কয়েকজন যুবক। জন্মের পর তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়া হয় ওই ভাগাড়ে। এতে রক্তাক্ত জখম হয়ে জীবন সংকটে পড়ে নবজাতকের। কয়েকজন যুবক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এরপর চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডেও চিকিৎসক ও সেবিকাদের পরম মমতায় ছেলে নবজাতকটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে। সে এখন চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে রয়েছে। একুশের প্রথম প্রহরে তাকে কুড়িয়ে পাওয়ায় তার নাম রাখা হয়েছে একুশে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন