বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

তানোরের বাধাইড় ইউপিতে এলজিএসপি প্রকল্পে নয়ছয়

| প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোরের বাধাইড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপির) অনুক‚লে ৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ‘লোকাল গর্ভন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট’ (এলজিএসপি)-এর বরাদ্দকৃত ৯ লাখ ২৮ হাজার ৮৩৮ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ‘লোকাল গর্ভন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট’ (এলজিএসপি)-এর মূল উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্য হচ্ছে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সর্বনি¤œ প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদকে ‘ইউপি’ শক্তিশালি ও স্বাবলম্বী করে তোলা। এই লক্ষ্যে প্রকল্প তহবিল থেকে প্রতি বছর দুই কিস্তিতে ইউনিয়ন পরিষদকে সরাসরি থোক থেকে বরাদ্দ প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যেজনক হলেও সত্য এসব অর্থ ব্যয়ে অস্বচ্ছতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। এদিকে চলতি বছরের গত ২০ মার্চ এলাকাবাসি একটি লিখিত অভিযোগ ডাকযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের দফতর বরাবর প্রেরণ করেছেন। এলাকাবাসি বাধাইড় ইউপিতে এলজিএসপির প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, তানোরে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে (এলজিএসপি) ২য়-এর আওতায় বাধাইড় ইউপিতে ৭টি প্রকল্পের বিপরীতে ৯ লাখ ২৮ হাজার ৮৩৮ টাকার বরাদ্দ দিয়েছে। নিয়মানুযায়ী বরাদ্দের টাকা দিয়ে ৩০ জুনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্যানিটেশন, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শেষ করতে হবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে রেজুলেশন করে ওই টাকা উত্তোলন করা যাবে। আর ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করতে না পারলে ওই টাকা সংশ্লিষ্ট বিভাগে ফেরত যাবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাধাইড় ইউপির ৭টি প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১ নম্বর প্রকল্পের নাম, ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের গাল্লা হঠাৎ পাড়া গ্রামের নওশাদের বাড়ির নিকট পানির পাইপ লাইন সরবরাহ, সাবমার্শেবুল পাম্প স্থাপন, ভূমি থেকে ১৫ ফিট উঁচু স্ট্যান্ড নির্মাণ ও ট্যাংকি সরবরাহ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। ২ নম্বর প্রকল্পের নাম-গাল্লা গাল্লা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উঁচু-নিচু বেঞ্চ সরবরাহ ও বৈদ্যপুর দাখিল মাদরাসায় উঁচু-নিচু বেঞ্চ সরবরাহ লো বেঞ্চ ৬ ফিট দ্ধ চওড়া ১ ফিট ৩ ইঞ্চি, উচ্চতা ১ ফিট ৬ ইঞ্চি এবং হাই বেঞ্চ ৬ ফিট দ্ধ চওড়া ১ ফিট ৩ ইঞ্চি, উচ্চতা ৩ ফিট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার টাকা। ৩ নম্বর প্রকল্প ছয় নম্বর ওয়ার্ডের হাপানিয়া কৃষন মাহাতো-এর বাড়ির নিকট পানির পাইপ সরবরাহ, সাবমার্শেবুল পাম্প স্থাপন, ভূমি থেকে ১৫ ফিট উঁচু স্ট্যান্ড নির্মাণ ও ট্যাংকি সরবরাহ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। ৪ নম্বর প্রকল্প সাত নম্বর ওয়ার্ডের জুমারপাড়া গ্রামের তোফাজ্জুলের বাড়ির নিকট পানির পাইপ লাইন সরবরাহ, সাবমার্শেবুল পাম্প স্থাপন, ভূমি থেকে ১৫ ফিট উঁচু স্ট্যান্ড নির্মাণ ও ট্যাংকি সরবরাহ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। ৫ নম্বর প্রকল্প আট নম্বর ওয়ার্ডের জোতগোকুল দীঘিপাড়া জহুরুলের বাড়ির নিকট পানির পাইপ লাইন সরবরাহ, সাবমার্শেবুল পাম্প স্থাপন, ভূমি থেকে ১৫ ফিট উঁচু স্ট্যান্ড নির্মাণ ও ট্যাংকি সরবরাহ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। ৬ নম্বর প্রকল্প বাধাইড় ইউপির তথ্য সেবা কেন্দ্রে একটি ‘ল্যাপটপ কম্পিউটার’ ও একটি প্রিন্টার সরবরাহ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। ৭ নম্বর প্রকল্প সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিডডে চালু করণের লক্ষ্য বাধাইড় ইউপির সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে টিফিনবক্স সরবরাহ ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য মেম্বার বলেন, বাধাইড় ইউপিতে এলজিএসপি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে, সরেজমিন প্রকল্প পরিদর্শন করলেই অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া যাবে বলে তিনি দাবি করেন। এব্যাপারে বাধাইড় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, এলজিএসপি প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। তিনি বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ এখানো শেষ হয়নি, কাজেই অনিয়মের প্রশ্ন আসছে কেনো। এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ শওকাত আলী বলেন, এলজিএসপি প্রকল্প বাস্তবায়নে কারো বিরুদ্ধে অনিয়মের সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, এলজিএসপির টাকাগুলো স্ব-স্ব ইউনিয়ন পরিষদ অনুক‚লে বরাদ্দ আসে আমি সমন্বয় কমিটির সভাপতি মাত্র।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন