আবদুল আউয়াল ঠাকুর : সম্প্রতি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের সব আদালত, বিচারকদের বাসভবন ও আদালতের কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। সার্কুলারে দেশের প্রত্যেক আদালত প্রাঙ্গণ, এজলাস বিচারকদের বাসভবন, বিচারক ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মোতায়েনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নির্দেশক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজাল হোসেন এ সার্কুলারটি জারি করেছেন। সার্কুলারে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে দেশের অধস্তন আদালতের বিচারক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রধান বিচারপতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ উদ্বেগের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
দেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় শুধু প্রধান বিচারপতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ব্যাপারটি সে রকম নয়। এ নিয়ে কথা বলেছেন অনেকেই। অনেকেই চলমান জঙ্গি তৎপরতাকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে বলেছেন, দোষারোপের রাজনীতি করলে ক্ষতি আরো ভয়াবহ হবে। প্রাসঙ্গিক অলোচনায় বিশিষ্ট আইনবিদ মইনুল হোসেন লিখেছেন, যে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান থাকার কথা নয় সেই বাংলাদেশে কীভাবে জঙ্গিবাদ শক্তি অর্জন করতে পারছে তা অনুসন্ধান করে দেখার কথা ভাবা হচ্ছে না। জঙ্গিবাদ চুরি-ডাকাতির মতো অপরাধ নয়। জঙ্গিবাদ শুধু আইনশৃঙ্খলার সমস্যাও নয়। জঙ্গিবাদ যে এক ধরনের মতবাদ সে হিসেবে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে না। তিনি মনে করেন, জঙ্গিবাদও অস্ত্রশক্তিভিত্তিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড। জঙ্গিবাদ আমাদের মতো গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের কাছে গ্রহণীয় নয়। কিন্তু তাদের শুধু সন্ত্রাসী হিসেবে দেখা ভুল হচ্ছে। পুলিশি অস্ত্রের মাধ্যমে জঙ্গিবাদীদের অস্ত্রের মোকাবিলা করা জঙ্গিবাদ অবসানের সঠিক পথ নয়। কারণ অস্ত্র যুদ্ধে যে পক্ষই জিতুক বিজয় হবে অস্ত্রশক্তির বা কোনো না কোনো রূপে জঙ্গিবাদের। সেখানে গণতন্ত্র বা আইনের শাসনের কোনো স্থান থাকবে না।
বস্তুতই দেশজুড়ে এখন বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কেবল সম্প্রতিক ঘটনাবলী নয়, এ যাবৎকাল এ ধরনের যে সব ঘটনা ঘটেছে তার প্রতিটি ঘটনার নানা ধরনের বিশ্লেষণ পাওয়া গেছে। এ যাবৎকালের মধ্যে হলি আর্টিজানের ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশে যেকটি ঘটনার কথা প্রচারিত হয়েছে তার প্রতিটি নিয়েই পাল্টা কথা হয়েছে। প্রতিটি হামলার সরকারি বিবরণ এবং বেসরকারি বিবরণের মধ্যে অনেক গরমিল পাওয়া গেছে। প্রতিটি অভিযান সফলতার সাথে সম্পন্ন হলেও এ থেকে অর্জন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধরা যাক সাম্প্রতিক সময়ে শেষ হওয়া সিলেটের ঘটনার কথা। সিলেটে টানা ৪ দিনের জঙ্গিবিরোধী সেনা অভিযান অপারেশন টোয়াইলাইটের ৮৭ ঘণ্টার অভিযানে সিলেটের শিববাড়ীর আতিয়া মহলে এক নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি তুলে ধরে সেনা সদরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফকরুল আহসান জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে অতিয়া মহলের ভেতরে থাকা ৪ জঙ্গি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নারী। জঙ্গি আস্তানার অদূরে এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ জন নিহত হন। এদের মধ্যে দুজন আত্মঘাতী জঙ্গি বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাবি করেছে। অভিযানে যে চারজন জঙ্গি নিহত হয়েছে এদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। মোরাবাজার থানার ওসি জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা দুটি লাশের মধ্যে একটি আলোচিত নারী জঙ্গি মর্জিনার ও অপরটি তার স্বামী পরিচয়দানকারী কাওসারের। এ আস্তানায় জঙ্গিদের শীর্ষ কোনো নেতা থাকতে পারে বলে ধারণার কথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নিহতদের মধ্যে তেমন কেউ রয়েছে কিনা সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তা পুলিশ ও র্যাব দেখে নিশ্চিত করতে পারবে। তবে যে চারজন ছিল তারা অয়েলট্রেইন্ড। তাদের খুঁজে বের করে যে নিষ্ক্রিয় করা হলো বা হত্যা করা হলো, তা সেনাবাহিনীর জন্য বিশাল সফলতা। এদিকে টানা কয়েক দিন থেকে অতিয়া মহলে জঙ্গিদের পাকড়াওয়ের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে অজানা আতঙ্ক। জঙ্গি ভয়ে সর্বত্র বিরাজ করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। জঙ্গি দমন অভিযান এবং আতিয়া মহলে দফায় দফায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ও গোলগুলির শব্দে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিয়া মহলের আশপাশে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। হামলায় গোয়েন্দা প্রধানও গুরুতর অহত ও পরে মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে থানার ওসিসহ দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। শুধু এই অভিযান নয়, এ ধরনের অভিযান এখনো চলমান। এসব অভিযান সম্পর্কে যেসব বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে তাতে নানা প্রসঙ্গ রয়েছে। সেসব আলোচনায় না গিয়েও এটা বলা যায়, জঙ্গিদের যতটা শক্তিশালী এবং বিপজ্জনক বলে প্রচার করা হয়েছে ব্যাপারটি সেরকম হলে পরিস্থিতি ভিন্নতর হতে পারত। শিববাড়ীর ঘটনাসহ প্রতিটি ঘটনাতেই দেখা গেছে, অভিযানে জঙ্গি নিহত হয়ে যাচ্ছে। ফলে এসবের কোনো সূত্র-উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যাদের বিরুদ্ধে এত বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, হচ্ছে তাদের কার্যত তেমন কোনো পয়-পরিচিতি নেই। অন্যভাবে যদি দেখা যায় তাহলে বলতে হয়, শিববাড়ীর ৪ জন জঙ্গি হত্যা করতে আমাদের প্রশিক্ষিত বাহিনীর কতটা খরচা করতে হয়েছে? হলি আর্টিজান থেকে শুরু করে প্রতিটি ঘটনাকেই যেভাবে দেখা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার আরো একটি বড় কারণ সময়। প্রধানমন্ত্রী যখন ভারত সফরে যাবেন তখন এ ধরনের ঘটনা কি নির্দিষ্ট কোনো বার্তা দিচ্ছে অথবা কোনো বার্তার আলামত বহন করছে ? সোসাল মিডিয়ায় এ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। সেসব দিকে দৃষ্টি না দিলেও এটা বলা যায়, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে সংশ্লিষ্ট সকলেই বলছেন, দেশে কোনো আইএস নেই। আরো বলছেন, জঙ্গিরা এখন নিয়ন্ত্রণে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীলরা বলছেন, জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া হয়েছে। এসবই প্রায় প্রতি দিন কারো না কারো মুখে শোনা যাচ্ছে। অথচ যা ঘটছে তার সাথে প্রকৃত বক্তব্যের কোনো সামঞ্জস্য নেই।
সরকারি মহল যেভাবেই ব্যাখ্যা করুন না কেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে কোনো নির্দিষ্ট বৃত্তে আটকে দেয়া যাবে না। একে কেবল তথাকথিত জঙ্গি আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। অনেকের আলোচনাতেই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রসঙ্গ উঠে আসতে শুরু করেছে। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সচিব আকবর আলি খানের লেখা একটি বই নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে একটি দৈনিকের পক্ষ থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে “আপনি লিখেছেন যে, ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র অনেক টেকসই। ব্যাখ্যা করবেন কি?” জবাবে তিনি বলেছেন, “এদিক থেকে দেখা যায় বাংলাদেশ যদি না থাকে তাহলে কী হবে? হয় এটা ভারতের নয়তো পাকিস্তানের অংশ হবে। আমি মনে করি না ভারতের পক্ষে বাংলাদেশের জনসংখ্যা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশে ১৫ কোটি মুসলমান আছে। ১৫ কোটি মুসলমান ভারতের নাগরিক হলে ভারতের রাজনীতি বদলে যাবে, বর্ণহিন্দুদের প্রভাব ক্ষুণœ হবে। ভারতের কোনো রাজনৈতিক দল সেটা মানবে না। অন্যদিকে ১৬ কোটি বাঙালি ভারতের বাঙালিদের সঙ্গে যোগ হলে ২৩ কোটি বাংলাভাষী অপরাপর প্রদেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে হাজির হবে, অনেকের মধ্যে বিরাট প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।” এই আলোচনায় তিনি আরো বলেছেন, মনে রাখতে হবে, আমাদের বর্তমান জাতীয়তাবাদের প্রধান উপাদান ভাষা হলেও তার সঙ্গে ধর্মেরও কিছুটা ভ‚মিকা রয়ে গেছে। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেছেন, ভারতে বিভিন্ন জাতির মুক্তি সংগ্রাম রয়েছে, তাদের কেউ কেউ সফলও হতে পারে। পাকিস্তানেরও একই অবস্থা। সুতরাং ভারত ভাঙার আশঙ্কা আছে, পাকিস্তানও ভেঙে যেতে পারে কিন্তু বাংলাদেশ ভাঙার কোনো আশঙ্কা নেই। আকবর আলি খানের বক্তব্য থেকে যেমনি উঠে এসেছে তেমনি এটাই বাস্তবতা যে, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সাথে ইসলাম মুসলমানদের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। বাস্তবত এ কথা বর্তমান শাসকরা বুঝছেন কিনা সেটাই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রতিটি ঘটনার পর যেভাবে বলা হয় এবারও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, এই শান্তির কথা বার বার উচ্চারণ করতে হচ্ছে কেন? দেশে কি এমন কিছু ঘটেছে বা ঘটার অবস্থায় রয়েছে যেখানে ইসলামের শান্তি বিনষ্ট হওয়ার মতো কোনো অবস্থা তৈরি হয়েছে? এ কথা পুনর্বার উল্লেখের প্রয়োজন নেই যে, আলোচিত হামলাগুলোর সাথে ইসলামকে যুক্ত করা হচ্ছে। এ নিয়ে নানা ফতোয়াও রয়েছে। সেসব আলোচনার জায়গা এটা নয়। সোজা কথায় যা বলা যায় তা হলো, দেশের মানুষের মধ্যে কার্যতই ইসলামী কৃষ্টি ও কালচার নিয়ে কোনো শঙ্কা তৈরি হয়েছে কিনা সেটি ভাবনার বিষয়। আজকের অবস্থা হচ্ছে দাড়ি-টুপিওয়ালারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের নানা স্তরে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। যারা সাধারণভাবে নামাজ-রোজা করছেন ধর্মীয় অনুশাসন পালন করছেন তারা দেশে অলিখিতভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছেন। এটাই সত্যি যে, এ ধরনের যুবকদের বর্তমান প্রশাসন সন্দেহের চোখে দেখছে। রাষ্ট্র প্রশাসনে কোথায় কী ঘটেছে তা সবটা বলা সম্ভব নয়, তবে এটা বোধহয় বলা যায়, শান্তির অনুসারীরা নিরাপদ নয়। এমনকি ঘরবাড়ি বাস-ট্রেনেও। এই ডিমুসলিমাইজেশনের কথা আকবর আলি খানের আলোচনায় নেই। তবে তার কথার সূত্র ধরে বলা যায়, যদি দেশ থেকে মুসলমানিত্ব তুলে দেয়া যায় তাহলে বোধকরি সীমান্ত তুলে দেয়াও কোনো কঠিন ব্যাপার নয়।
দেশের অবস্থা এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে তার একটা ব্যারোমিটার হিসেবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটির উদ্বেগকে বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, হেফাজতে নির্যাতন, মৃত্যুদন্ডের আধিক্য ও কারাগারে মানবেতর পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি। কমিটি নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতাসহ সব ধরনের মানবাধিকর লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এখতিয়ার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। একই সাথে জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার নিশ্চিত রাখতে নির্বাচনের সময় সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। মূল বিষয় হচ্ছে, জনগণের নিরাপত্তা। আজ দেশে সাধারণ মানুষের বিন্দুমাত্র নিরাপত্তাও নেই। বিচারালয় থেকে ফুটপাত পর্যন্ত সর্বত্রই নিরাপত্তাহীনতা স্থান করে নিয়েছে। যাদের কথিত জঙ্গি দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন, নিহত হচ্ছেন। ফলে দেশের অর্থে গড়ে তোলা বাহিনী দেশের অভ্যন্তরেই প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হচ্ছেন। সর্বত্রই জানমালের ঝুঁকি বাড়ছে বৈ কমছে না। সে কারণেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। বাস-ট্রেন-সড়কে যে যেখানে আছে সব ক্ষেত্রেই অবস্থা একই রকম। রাজনৈতিক অভিযোগে যেমনি কে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে তা বলা যায় না, তেমনি সামগ্রিক বিশৃঙ্খলার মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। এর মূল কারণ দেশে আইনের শাসন, সুশাসনের অনুপস্থিতি। দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনরা এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট অভিমত ব্যক্ত করছেন। কার্যত যাদের এ দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন তারা দেখছেন ভিন্নভাবে।
সরকার নিজের মতো করেই যা কিছু বলছে সেটাই জনগণ শুনতে পাচ্ছে। এভাবে একতরফা কথায় দেশের গুরুতর সমস্যার কোনো সমাধান সম্ভব নয়। এ কথা সত্যি, অভ্যন্তরীণ সংকটের ক্ষেত্রে অস্ত্রকে অস্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করা যায় না। যে কোনো জাতীয় সংকট মোকাবিলায় জনগণের ঐক্যই হচ্ছে প্রধান বিবেচনার বিষয়। জনসাধারণের মধ্যে বিভাজন থাকলে সে সুবিধা সব সময়ই তৃতীয় পক্ষ গ্রহণ করে। এটা পরিষ্কারভাবেই বোঝা যায়, জাতীয় ঐক্য ছাড়া সংকট মোকাবিলার চিন্তা মূলত সংকটকেই প্রলম্বিত করা। প্রকৃতই দোষারোপের রাজনীতির মধ্য দিয়ে আমরা পিছিয়েছি। জাতীয় জীবনে মানুষের উন্নয়ন ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই নয়। সে বিবেচনায় জাতীয় সংকট মোকাবিলায় সকলকে সমন্বিত করার একমাত্র উপায় হলো সুশাসন, আইনের শাসন ও দুর্বৃত্তমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা।
awalthakur@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন