সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় লোকসান সোয়া ৩ কোটি টাকা

| প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রাম জেলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাট প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, পেরীফেরির মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ না করা, হাটের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা এবং নিয়ম-নীতি লংঘন করে নতুন নতুন বিট/খাটাল স্থাপনের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরে হাট ইজারাদারকে লোকসান গুনতে হবে প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা। এ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করেও সুফল পায়নি ভুক্তভোগীরা। যাত্রাপুর হাটের ইজারাদার ওমর ফারুক জানান, ভারতীয় গরুনির্ভর এ হাটের ১৪২৩ বাংলা সনের ইজারা মূল্য ছিল (১৫ ভাগ ভ্যাট এবং ৫ ভাগ আয়করসহ) ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩১ টাকা। কিন্তু শুরু থেকে হাটের পেরিফেরি সীমানা নির্ধারণ করে না দেয়ায় প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে হাটের জন্য ৩ একর জমি ভাড়া নিতে হয়। এছাড়া সীমানা নির্ধারণ করে না দেয়ার জটিলতার সুযোগ নিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার দোকানের টোল তোলা সম্ভব হয়নি। একই সাথে স্থানীয় দোকান-পাট থেকে খাজনা আদায় করা যায়নি। এতে গচ্চা গেছে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। একই সাথে গত বন্যায় হাট ডুবে যাওয়ায় এবং ভাঙনে হাটের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ভারতীয় গরুনির্ভর এ হাট হওয়ায় যাত্রাপুর হাটে সরকার বিট চালু করে। অথচ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নতুন করে এ হাটের চারপাশে ভারতীয় আন্তর্জাতিক সীমানা সংলগ্ন দই খাওয়ার চর, নারায়াণপুরে বিট/খাটাল স্থাপন করা হয়। ফলে এসব বিটের গবাদিপশু আর যাত্রাপুর হাটে আসতে দেয়া হয় না। যাত্রাপুর হাটে আসার পথে কালিয়ার চর ও চিতুলিয়া নামক স্থানে শাখা নদী পারাপারে কৃষকদের কৃষি পণ্য ও গবাদিপশু প্রতি টোল আদায়ে বাধ্য করে এবং যাত্রাপুর হাটে যেতে একটি চক্র বাঁধার সৃষ্টি করে। ফলে তারা আর যাত্রাপুর হাটে আসতে পারে না। এ সংক্রান্ত পৃথক পৃথক অভিযোগ গত বছর এপ্রিল মাস থেকে দেয়া হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যাত্রাপুর হাটের অন্যতম অংশীদার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ জানান, স্থানীয় প্রশাসন হাট ইজারার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আয় করলেও ব্যবসায়ীদের ন্যূন্যতম স্বার্থরক্ষা করেনি। বরং সরকারি বিধি-মালা লংঘন করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। নতুন বিট স্থাপনে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এসব নানা কারণে এখন পর্যন্ত হাটে আয় হয়েছ ১ কোটি ২৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে লোকসান দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৯ লাখ ৮ হাজার ৩৩১ টাকা। এ কারণে আমরা যাত্রাপুর হাট ইজারার মেয়াদ বৃদ্ধিরও আবেদন করেছি। তা না হলে এ হাটের সাথে সম্পৃক্ত শতাধিক পরিবার মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। পরিবার পরিজন নিয়ে করতে হবে মানবেতর জীবনযাপন। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন আল পারভেজ জানান, মেয়াদ বৃদ্ধি করার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়াও তিনি জানান, বাজারের পেরিফেরি (সীমানা নির্ধারণ) ও দোকানদারদের খাজনা প্রদানের বিষয়টি দেখা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন