মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে মাদারীপুরে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে শুরু হয়েছে লবিং-গ্রুপিং। ইতোমধ্যেই সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়ন ও ঝাউদী ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন পাবার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ত্যাগী নেতারা মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও নব্য আওয়ামী লীগের নেতাদের মনোয়ন দেয়ার ব্যাপারে স্থানীয় মনোনয়নবোর্ড ঝুঁকে পড়ায় ত্যাগী নেতাদের বাদ পড়ার আশঙ্কায় তৃণমূল নেতা কর্মীদের ব্যাপক চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান লস্করকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড তার আওয়ামী লীগে সস্পৃক্ততার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ত্যাগ ও সংগ্রামের বিষয় বিবেচনা না করে জাসদ থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকৃত ও ব্যক্তিগত জীবনে বিতর্কিত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে সুপারিশ করায় রাস্তি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হতবাক ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে। গত শনিবার সন্ধায় রাস্তি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী দাবি করে রাজু হাওলাদারের লোকজন শহরে সন্ধ্যায় একটি মিছিল বের করে। অপরদিকে রাস্তি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুল মান্নান লস্কর গত রোববার সন্ধ্যা ৭টায় শহরের হামিদ আকন্দ সড়ক সংলগ্ন তার নিজ বাসভবনে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ত্যাগী নেতা হিসাবে দলীয় মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হলাম। এদিকে সদর উপজেলা ঝাউদী ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগের এক সিনিয়র নেতা ইলিয়াস আহমেদকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দিলেও পরে আওয়ামী লীগের অপর নেতা সিরাজুল ইসলাম আবুলকে পুনঃ মনোনয়ন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। জনমনে আশঙ্কা মনোয়ন দিতে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করা হলেও তৃণমূলে ব্যাপক বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে। এদিকে দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান খানকে নিয়ে বির্তক চরম আকার ধারণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বির্তকিত ভূমিকায় থাকা ওই প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেয়ায় ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধা, তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসী। স্থানীয় একাধিক মুক্তিযুদ্ধা ও এলাকাবাসী জানান, ১৯৭১ সালে মজিবর রহমান খানের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তখন তিনি আল-বদর বাহিনীর সক্রিয় সদস্য থেকে ঘটমাঝি, সিদ্ধিখোলা, মিঠাপুর, মস্তফাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে তার কোনই ভূমিকা নেই। অথচ দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ও মুক্তিযুদ্ধাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী মোজলেম আকন ও নয়ন রশিদ জানান, আমরাও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। অথচ আমাদের আওয়ামী লীগের কেউকে মনোনয়ন না দিয়ে যুদ্ধের সময় বিতর্কিত একজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে আমরা হতাশ হয়েছি। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করা হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তকে পুনঃবিবেচনার নেয়ার জন্যে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। এ ব্যাপারে মজিবর রহমান খান জানান, এই অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। আমার জন্ম ১৯৬৩ সালের ৫ নভেম্বর, তাহলে কিভাবে আমি রাজাকার ছিলাম। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে এক শ্রেণীর লোক এমন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমি রাজাকার প্রশ্নই আসে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন