শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সীতাকুন্ডে এক পশলা বৃষ্টিতেই মহাসড়ক হয় প্লাবিত

নেই নিষ্কাশন ব্যবস্থা, ঝুঁকি নিয়ে চলে যানবাহন

| প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) থেকে : মহাসড়কের উপর এক হাঁটু পানি। তার মধ্য দিয়েই চলছে যানবাহন। হেঁটে যাচ্ছে সববয়সী মানুষ। সীতাকুন্ড পৌরসদরের হাসান গোমস্তা মসজিদ এলাকার সামনের মহাসড়কের সামনের দৃশ্য এটি। না এলাকার মানুষের কাছে এ দৃশ্য মোটেও নতুন নয়। প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিনই এ দৃশ্য দেখতে হয় তাদের। তবে এবার এখনো বর্ষা না এলেও বর্ষণ শুরু হয়ে যাওয়া আবারো সে দৃশ্যটি ফিরে এসেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে হাসান গোমস্তা মসজিদ ও উপজেলা গেইটের মাঝামাঝি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে এর মধ্যে দিয়েই চলতে হয় যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে। যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করলেও এ জলাবদ্ধতা দূরীকরণে কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সরেজমিনে সীতাকুন্ড পৌরসভা থেকে মাত্র আধ কিলোমিটার দক্ষিণের এ সড়কে ঘুরে দেখা গেছে, এ সড়কে অল্প বৃষ্টিতেই প্রচুর পানি জমে যাচ্ছে। এতে দূর থেকে সড়কটি দেখলে জলাশয় বলেই ভুল হয়। কিন্তু এর মধ্যে দিয়েই চলাচল করছে প্রাইভেট কার, ট্রাক, বাস থেকে শুরু করে সব ধরনের যানবাহন। অনেক সময় তারা দুর্ঘটনাও ঘটাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। পরিদর্শনকালে পার্শ্ববর্তী এক দোকানী জানান, তিনি মনে করেন সড়কটির নির্মাণ পরিকল্পনাতেই ভুল ছিলো। তিনি আঙ্গুল দেখিয়ে বলেন, একটু লক্ষ করলেই দেখবেন এ সড়কের এই অংশ কিছুটা নিচু। তার উপর পাশে নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। ফলে হালকা বৃষ্টি হলেই এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তা। মো. আলমগীর নামক ঐ ব্যবসায়ী বলেন, এ অবস্থা দীর্ঘদিনের। প্রতিবছর বর্ষায় এটি নিত্যদিনের চিত্র। এ থেকে পরিত্রাণ পাবার কোন উপায় যেন নেই! এ সড়ক দিয়ে নিত্য যাতায়াতকারী এক কার চালক মো. ইলিয়াছ হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, একসময় এক সড়কটি দিয়েই মহাসড়কের দূরপাল্লার সব যানবাহন চলত। এখন এই সড়কটির লাগোয়া বাইপাস হওয়ায় কিছু গাড়ি ঐ রাস্তা দিয়ে গেলেও এখনো যানজটসহ অন্যান্য সমস্যার সময়ে সব ধরনের যানবাহনকে এ রুট ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া সীতাকুÐ থেকে চট্টগ্রাম যাতায়াতকারী অসংখ্য লোকাল বাস, কার, মাইক্রোসহ নানারকম যানবাহন প্রতিদিন চলছে এ পথে। এ কার চালক জানান, বৃষ্টির সময় আসা যাওয়ার পথে এ জায়গায় আসলেই অত্যন্ত বিরক্ত লাগে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছি। সড়কের এই অংশকে ভেঙে আরো উঁচু করলে অথবা পাশে পরিকল্পিতভাবে ড্রেন তৈরির মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলে শুধু যানবাহন নয়, উপকৃত হবে এ পথে যাতায়াতকারী হাজার হাজার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণী পেশার মানুষ। এদিকে পৌর এলাকার মহাসড়কের এ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সীতাকুÐ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব বদিউল আলম প্রতিবেদককে বলেন, হাসান গোমস্তা রাস্তার মাথা এলাকার ঐ মহাসড়কটি একপাশ উঁচু আর একপাশ নিচু। তারউপর রাস্তার পাশে পানি নামার কোন ব্যবস্থা নেই। এ কারণে অল্প বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। আগে এখান থেকে পানি উপজেলার শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে যেত। কিন্তু ইউএনও সাহেব ঐ পথ বন্ধ করে দেওয়ায় এখন পানি যাবার কোন জায়গা নেই। আমরা সবার দুর্ভোগ দেখলেও সড়কটি হাইওয়ের অংশ হওয়ায় সেখানে ড্রেন নির্মাণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কিছু করতে হলে সড়ক ও জনপদ বিভাগই করতে পারে। এরপরও মানুষজন বেশি দুর্ভোগের স্বীকার হয়ে আমাদের কাছে আর্জি জানানোয় আমি ৭০/৮০ হাজার টাকা খরচ করে একটি পাইপ বসিয়ে মূল ড্রেনের সাথে সংযোগ দিয়েছি। এখন বৃষ্টি হলে পানি জমলেও ধীরে ধীরে পানি নেমে যায় জানিয়ে এলাকাবাসীর স্বার্থে মহাসড়কের ঐ অংশে একটি ড্রেন নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন