রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

চনপাড়ায় বসে মাদকের হাট সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি সাধারণ মানুষ

| প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : রূপগঞ্জে ঢাকা ওয়াসার জমিতে চনপাড়া পুনর্বাসন এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট বজলুর অপকর্মে অতিষ্ঠ কায়েতপাড়ার লোকজন। রূপগঞ্জ থানা প্রশাসনও একটি ফাঁড়ি স্থাপন করেও মাদকরোধে কার্যত ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। ফলে রোধ করা যাচ্ছে না ডন হিসেবে পরিচিত বজলু ও তার সহযোগী শমসের মিয়ার অপকর্ম। খোলামেলা মাদক কেনা বেচাতে ও অস্ত্র দেখিয়ে সাধারণ লোকজনকে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন মিটিং মিছিল ও জমি দখলে এ চক্রটির রয়েছে ভয়ানক নানা অপকর্ম। অধিকহারে মাদক কেনা বেচা করায় অনেকে চনপাড়াকে মাদকের হাট বলেই জানেন। সূত্র জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দিনদুপুরে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও হেরোইন নামক বিভিন্ন মাদকদ্রব্য কিনতে আসে। বাদ যায় না রাজধানীসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা মাদকসেবীরা। ডেমরার সারুলিয়ার একটি শক্তিশালী চক্রও ও সন্ত্রাসী বাহীনি নিয়ন্ত্রণ করে তার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সহযোগী সমশের মিয়া। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব নানা অপকর্মের কারণে শুধু চনপাড়ায় একাধিক সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে বজলুর রহমান ও তার সহযোগী শমসের মিয়া। এসব কারণে সব সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। হত্যাকান্ডের মত ভয়ানক কাÐও ঘটেছে এখানে মাদকের নিরাপদ জোন হিসেবে পরিচিত এ চনপাড়ার মাদক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যান রফিকুল ইসলাম রফিকের গোঁপন প্রশ্রয়। সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিছেন চালানো হয় এ মাদক বাণিজ্য। ফলে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে চালানো হচ্ছে এ মাদকের হাট খ্যাত চনপাড়া। অবৈধপথে আয়করা অর্থ দিয়ে আবার স্থানীয় নিরীহ লোকজনকে তার জমি দখল ও রাজনৈতিক কাজে লোকভাড়ার ব্যবসা করেন বলে রয়েছে অভিযোগ। সূত্র আরো জানায়, বজলু মিয়া একাই মাসে ৫ কোটি টাকার মাদক কেনা বেচা করেন। ফলে তার অবৈধ অর্থ কাজে লাগিয়ে তার রামরাজত্ব কায়েম করছে বলে জানা গেছে। এ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন নিয়মিত বখরা পায় বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, তার রয়েছে মহিলা মাদকপাইকার সদস্য। তারা তাদের গোপনাঙ্গে তা বহন করে কাক্সিক্ষত স্থানে নিয়ে যায়। থানা সূত্রে জানা যায়, পুরো রূপগঞ্জ উপজেলার ৮০শতাংশ মাদক বিভিন্ন কৌশলে চনপাড়া থেকে বিভিন্ন স্থানে যায়। শুধুমাত্র একটি বস্তিতেই রয়েছে ২শ টি মাদক পরিবার আর সেবনকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। প্রতিদিন ১০ লাখ টাকা মাদক কেনাবেচায় সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে ডন বজলু মিয়া। এখানে গাজারে বলা হয় রাজা, ফেনসিডিলকে বলা হয় ঠান্ডা, হেরোইনকে বলা হয় স¤্রাট ইয়াবাকে বিচি আর মালিককে বলা হয় ডন। সূত্র জানায় এ ডনই হলেন বজলুর রহমান বজলু। মাদকসেবীদের নিরাপদে মাদকসেবন করার সুবিধা দিতে শীতলক্ষ্যায় সব সময় ভাসমান করে রাখা হয় ট্রলার। এসব ট্রলারের মালিকও সমশের ও বজলু মিয়া। সূত্র জানায়, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনায় এ বস্তির অবস্থান হওয়া রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সাথে সহজে যোগাযোগ করে মাদকবিস্তার চালিয়ে আসছে এ চক্র। আবার ভৌগলিকভাে চনপাড়ার অলিগলির সংখ্যাও অগণিত। পুলিশ বিভিন্ন সময় হানা দিয়েও বজলুর আস্তায় ধ্বংস করতে পারেনি। জেলা প্রশাসন একাধিকবার চেষ্টা করে বন্ধ করলেও কৌশল পাল্টায়ে তা আবার শুরু করে। পূলিশ ও এলাকাবাসীর দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, শমসের আলীর অধীনে রয়েছে শতাশিক মাদকসেবী ও সন্ত্রাসীবাহিনী। তাদের যে কেউ থানা পুলিশ বা গোয়েন্দাদের হাতে আটক হলে বজলু তাদের টাকা দিয়ে ছাড়াতে যান। ফলে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীর কাছে বজলুই হল শেষ ভড়সা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত বজলুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,রাজনৈতিক বিরোধের জেরে আমার সুনাম ক্ষুণœ করতে একটি পক্ষ বারবার নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। এ সময় তিনি দাবী করেন কোনদিন মাদকের সাথে তার সম্পর্ক ছিল না। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, চনপাড়ায় ব্যপকহারে মাদকের উপস্থিতি ছিল। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। অভিযুক্ত বজলুর ও শমসের আলীদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।এ গুলো মাননীয় আদালতে বিচারাধীন রয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন