নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : নওগাঁর রানীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের হামিদপুর এলাকায় শ্রীমতখালী খালের ওপর নির্মিত একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। এতে নওগাঁ-বান্দাইখাড়া সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রানীনগর এলজিইডি অফিস ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি) ও স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) যৌথ অর্থায়নে এই ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২ সালের নভেম্বর স্থানীয় সংসদ ইসরাফিল আলম ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পরই ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। জাকিয়া বিল্ডার্স ও সিদ্ধার্ত কুমার বিল্ডার্স ব্রিজটি নির্মাণের কাজ পায়। গত বছরের জুলাইয়ে ব্রিজটির দুটি ইস্পান ও উপরের বেসমেন্ট (পাটাতন) নির্মাণের কাজ শেষ হয়। কিন্তু চলাচল শুরুর আগেই ব্রিজের বেসমেন্টে ফাটল দেখা দেয়। এ অবস্থায় এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বেসমেন্টটিকে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশ দেন। বর্তমানে বেসমেন্ট পুনঃসংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মিরাট ইউনিয়ন পরিষদের পাশে শ্রীমতখালী খালের ওপর নির্মিত ব্রিজের বেসমেন্টটিকে শক্তিশালী করতে ফাটল দেখা দেয়া অংশে কোনোমতে ইট-সিমেন্ট লাগিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করা হয়েছে। বেসমেন্টের নিচে ইট-সিমেন্ট লাগানো অংশে খুঁটি দেয়া রয়েছে। বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় এবং ব্রিজের দুই অংশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ব্রিজের সঙ্গে বাঁশের চাটাই লাগিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজনকে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য খালে ইট-বালি বিছিয়ে রাস্তা করা হয়েছে। ওই ইউনিয়নের মিরাট গ্রামের বাসিন্দা মাহতাব হোসেন, শাহীন ও মহীর উদ্দিন বলেন, রানীনগরের মিরাট, আত্রাইয়ের হাটকালুপাড়া ও কালকাপুর, মান্দার কশব ও বিষ্ণুপুর এবং নওগাঁ সদরের শিকারপুর ইউনিয়নের ২০-২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতাযাত করে। ব্রিজটি নির্মাণ শেষ হলে এলাকার কৃষি পণ্য পরিবহন ও এলাকাবাসীর যাতায়াতে ব্যাপক সুবিধা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর এলাকার মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণের এত দীর্ঘসূত্রতার কারণে এলাকার লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া ব্রিজের কাজ অত্যন্ত নি¤œমানের হয়েছে। ব্রিজে চলাচল হওয়ার আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কাজ হয়েছে, এতে এই ব্রিজ কত দিন টিকবে বলে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। জানতে চাইলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জাকিয়া বিল্ডার্সের মালিক ময়নুল ইসলাম ভুট্টো বলেন, ‘সময়মতো বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে কাজ করতে দেরি হচ্ছে। তবে আগামী জুন-জুলাইয়ের আগে কাজ শেষ হবে বলে আমার বিশ্বাস।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, ‘ব্রিজের কাজ কোনোভাবেই নি¤œমানের হয়নি। ফাটল দেখার যে কথা বলা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। আমাকে যেভাবে বলা হয়েছিল সেভাবেই কাজ করেছি। তবে উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে বেসমেন্টটা আরও শক্তিশালী কাজ করা হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম বলেন, ‘কাজটি এডিবি ও এলজিএসপির দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে হওয়ায় ধাপে ধাপে বরাদ্দ আসছে। এজন্য কাজটি শেষ করতে সময় লাগছে। ব্রিজের মূল কাজ মোটামুটি শেষ এখন সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলেই ব্রিজটি চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্রিজের কাজ একটু নি¤œমানের হয়েছিল। তবে সেই ঘাটতি পূরণের জন্য ব্রিজের ভিত্তি এবং বেসমেন্টকে শক্তিশালী করার কাজ চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন