মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

বন্যায় ফসলহানি, মানবিক বিপর্যয় এবং নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি

উপ-সম্পাদকীয়

| প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুনশী আবদুল মাননান : পত্রিকান্তরে কবি ও সাবেক সচিব মোফাজ্জুল করিমের একটি অসাধারণ লেখা প্রকাশিত হয় গত ৩১ মার্চ। ওই লেখায় হাকালুকি হাওরের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন; এই শুকনো মৌসুমে আমাদের বাড়ির মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে পূর্ব দিকে তাকালে ওপারে সীমাহীন আকাশ আর নিচে শুধু মাঠ আর মাঠ। মাঠের বুকজুড়ে মাইলের পর মাইল বোরো ধানের ক্ষেত। যেন ধূসর আকাশের গম্ভুজটির প্রান্তছোঁয়া এক দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ গালিচা। এই ধানের কাব্য, গানের কাব্য শেষ হলে বর্ষায় হাকালুকির আরেক রূপ সে তখন প্রমত্তা এক মিনি বঙ্গোপসাগর। উত্থাল-পাতাল তার ঢেউ। তখন যে দিকে চোখ যায় পানি আর পানি, যে পানি থেকে আহরণ করা হয় লক্ষ-কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ।
শুধু হাকালুকি নয়, প্রতিটি হাওরের শুকনো ও বর্ষা মৌসুমের এটাই স্বাভাবিক ও চিরাচরিত চিত্র। এবার এই চিত্র অন্যরকম হয়ে গেছে। আশা করা হয়েছিল, এবার হাওর অঞ্চলে বাম্পার উৎপাদন হবে বোরো ধানের। কৃষকরা অপেক্ষায় ছিল কিছুদিন পরই ধান ঘরে তোলার জন্য। সেই আশা তাদের পূরণ হয়নি। সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা ঢলে ডুবে গেছে হাওর অঞ্চলের ধানের ক্ষেত। ধান হারিয়ে, গান হারিয়ে তারা এখন নিরালম্ব। ধানের কাব্য, গানের কাব্য শেষ। এখন চলছে বানের কাব্য।
হাওর এলাকা বলে পরিচিত সুনামগঞ্জ, মৌলবীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোনো হাওরই ভারত থেকে ধেয়ে আসা বিপুল পানিরাশির এই অপ্রতিরোধ্য আগ্রাসন থেকে রেহাই পায়নি।  সব হাওর তলিয়ে গেছে। এক মাত্র ফসল বোরো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ধানই কেবল নয়, একই সঙ্গে মাছ ও হাঁস মরে সাফ হয়ে গেছে। হাওর এলাকায় এমন বন্যা নতুন নয়। কিন্তু এবারের মতো মাছ, হাঁস ও অন্যান্য জলজপ্রাণীর এরকম মড়ক কখনো দেখা যায়নি। হাওর এলাকায় মানুষের একমাত্র ফসল বোরো ধান শেষ হয়ে গেছে। অর্থের দ্বিতীয় ও তৃতীয় উৎস মাছ ও হাসও গেছে। এখন তারা কি করবে? কিভাবে কাটবে তাদের ভবিষ্যতের দিনগুলো? ফের ধান পাওয়া যাবে এক বছর পর। এই এক বছর লাখ লাখ কৃষক পরিবার কিভাবে জীবন ধারণ করবে? ধানের মৌসুমের শুরুর আগে স্বাভাবিককারণেই ঘরে ধান থাকে না। এবারও তার ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। বাস্তবতা তো  এই ঃ ঘরে ধান নেই; এত কষ্ট ও শ্রমের ধানও ডুবে মিসমার হয়ে গেছে। এখন তারা কি করে বেঁচে থাকবে?
হাওর এলাকার মানুষের এই দুর্দিনে সরকার যথাসময়ে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারেনি। রাজনীতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সেবা সংস্থাও এগিয়ে যায়নি। এটাও একটা ব্যতিক্রম। আগে বন্যা বা কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে সরকার, রাজনৈতিক দলসমূহ এবং বিভিন্ন সংগঠন-সংস্থা দ্রুতই সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে দুর্গত-বিপন্ন মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াত। এবার সেটা হয়নি। আশ্চর্যের কথা, সরকারের একজন সচিব রীতিমত তামাশা করেছেন। হাওর এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে প্রয়োজনীয় মানবিক ও অন্যান্য সহায়তা দেয়ার গণদাবী বা অভিমতের প্রেক্ষিতে তিনি নাকি বলেছেন, যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা যায় না। কোনো এলাকায় অন্তত অর্ধেক মানুষ মারা গেলে তবেই নাকি দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা যায়। হাওর এলাকাকে দুর্গত এলাকার তকমা পেতে কি তাহলে অর্ধেক মানুষ মরা লাগবে? অন্যভাবেও কথাটি বলা যেত। কিন্তু ওই সচিব এমনভাবে কথাটা বলেছেন, যা তার শিক্ষাদীক্ষা ও পদমর্যাদার সঙ্গে খাপ খায় না।
বলা হয়েছে, শতভাগ হাওরই ডুবে গেছে। সেই সঙ্গে ডুবেছে ধানও। হাওর এলাকাকে ধানের ভান্ডার বলা হয়। সেই ভান্ডার এবার শূন্য। এতে বার্ষিক বোরো উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়া অবধারিত। জানা গেছে, এবার ১৪২টি হাওরে ২ লাখ ২৪ হাজার হেক্টরে বোরোর আবাদ করা হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৯ লাখ ৩০ হাজার টন ধান। এই ধান এবার পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু হাওর এলাকাই নয়, উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চলে আগাম বন্যা হানা দিয়েছে। আত্রাই ও চলনবিল এলাকায় হাজার হাজার হেক্টরের ধান ডুবে গেছে। পাবনা, বগুড়া, ফরিদপুর, শরীয়তপুর প্রভৃতি জেলায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নিম্নাঞ্চল ও বিলের ধানও ডুবে গেছে। কৃষকরা অনেকে বন্যার আশঙ্কায় আধাপাকা ধান কেটে নিতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক এলাকায় প্রশাসনের তরফ থেকে ধান কাটার জন্য উৎসাহ বা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এরই পাশাপাশি আরও একটি বিপদ দেখা দিয়েছে। উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক এলাকার বোরো ধানে ছত্রাক রোগ দেখা দিয়েছে। মাটির ওপর ধান গাছের বিভিন্ন অংশে এই রোগ দেখা দিতে পারে এবং একবার দেখা দিলে সেই গাছ থেকে ধান পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বলা বাহুল্য, আগাম আকস্মিক বন্যায়, ছত্রাক রোগে কিংবা অন্যান্য কারণে বোরোর উৎপাদন কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তা এখনো নির্ণয় করা যায়নি। সঙ্গতকারণেই ক্ষয়ক্ষতির ধারা অব্যাহত আছে এবং ধান কাটা ও মাড়াই পুরোদমে শুরু হতে এখনো কিছুটা সময় বাকি আছে।
স্বীকার না করে উপায় নেই, এবার বোরো উৎপাদনে মারাত্মক একটা আঘাত এসেছে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে এমন উৎপাদন বিপর্যয় দেখা যায়নি। ওয়াকিবহাল মহলের অজানা নেই, বোরো, আউশ, আমন- এই তিন ধান মৌসুমের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ধান উৎপাদিত হয় বোরো মৌসুমে। এবার সেই বোরো মৌসুমে আগাম বন্যায় ব্যাপক উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তরফে শুরুতে ধারণা দেয়া হয়েছিল, সুনামগঞ্জ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য এলাকায় উৎপাদন ক্ষতি ৬ লাখ টন হতে পারে। পরবর্তীতে আরো হাওরে ও উত্তর, মধ্য, দক্ষিণাঞ্চলেও বিভিন্ন এলাকায় বন্যা সম্প্রসারিত হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। অনেকের মতে, ইতোমধ্যে অন্তত ১০-১২ লাখ টনের উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে। এর সঙ্গে ছত্রাক রোগের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে বা হতে পারে তা যোগ করলে ক্ষতির পরিমাণ ও মাত্রা আরও বেশী হবে।
চলতি অর্থবছরে ৪৫টি জেলায় ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এসব জমিতে মোট ১ কোটি ৯১ লাখ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করে। আগাম বন্যার আগে পর্যন্ত আবহাওয়ার আনুক‚ল্য প্রত্যক্ষ করে ধারণা করা হয়, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু মাত্র ক’দিনের ব্যবধানে সব কিছু ওলট-পালট হয়ে গেছে। এখনো যেভাবে বর্ষণ ও ঢল অব্যাহত আছে এবং নতুন নতুন এলাকা ও ধানক্ষেত প্লাবিত হচ্ছে তাতে এ আশঙ্কা প্রবল যে, উৎপাদন ক্ষতি আরো বড়বে। সেটা যে শেষ পর্যন্ত কবে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এখনই আন্দাজ করা সম্ভব নয়।
এমন এক সময় এই ব্যাপক ফসলহানি ঘটলো, উৎপাদন ক্ষতি হলো যখন গত ৬ বছরের মধ্যে সরকারি খাদ্যগুদামে খাদ্য মজুদের পরিমাণ সবচেয়ে কম। মোট খাদ্যশস্য মজুদের পরিমাণ ৫ লাখ ৪৬ হাজার টনের মতো। খাদ্যশস্য সংগ্রহে ব্যর্থতা এই নিম্নতম মজুদের কারণ। এরপর সরকারের খাদ্যশস্য বিতরণের কর্মসূচির ফলে দেশের মজুদ এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ লাখ ৫৯ হাজার টনে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, সরকার ১ দশমিক ১ মিলিয়ন টন চাল বিতরণ করেছে আগের বছরের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে। বাস্তবতার এই প্রেক্ষাপটে আশংকা করা হচ্ছে, হাওর এলাকার বন্যা দুর্গত লোকদের জন্য খাদ্য-ত্রাণ ও  খোলাবাজারে চাল বিক্রির কর্মসূচি বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। সরকার আগামী মাস থেকে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন চাল ও ধান সংগ্রহে নামবে। বোরোর এখন যে সার্বিক হাল তাতে এই সংগ্রহলক্ষ্য অর্জিত হবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। আলামত যে মোটেই সুবিধাজনক, সেটা বলাই বাহুল্য।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য মতে, আগাম বন্যায় হাওর এলাকার ৬ জেলায় মোট ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ৮ লাখ ৫০ হাজার ৮৮টি পরিবার ক্ষতির শিকার হয়েছে। এর বাইরে আরো উৎপাদন ক্ষতি হয়েছে। তাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাখ লাখ পরিবার। এই পরিবারগুলোর বিশেষ করে হাওর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ত্রাণ ও সহায়তার ওপর নির্ভর করা ছাড়া বিকল্প নেই। এক খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, ৯০ লাখ হাওরবাসী খাদ্যঝুঁকির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ৫০ লাখ তীব্র খাদ্য সংকটে পতিত। অনেকেই নিরুপায় হয়ে শহরমুখী হতে শুরু করেছে।
এদিকে চালের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। আগে থেকেই দাম বাড়ছিল। অকাল বন্যায় হাওরের ফসল বিপর্যয়ের পর দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আর কোনো লাগাম নেই। গত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সব ধরনের চাল কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে। এই বৃদ্ধি কোথায় গিয়ে থামবে, কেউ জানে না। সর্বমহলে এ নিয়ে এক ধরনের শংকা দেখা দিয়েছে। পর্যবেক্ষকের অভিমত, দেশে খাদ্য মজুদ ও সরবরাহ এমন পর্যায়ে এখনো যায়নি, যাতে চালের দাম এভাবে বাড়তে পারে। তাদের মতে, দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলারদের কারসাজি। তারা চাল আটকে দিয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা এই বন্যা ও ফসলহানিকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করছে। এর মধ্যেই খবর পাওয়া গেছে, ব্যবসায়ী ও ডিলাররা চাল আমদানির ওপর থেকে আরোপিত শুল্ক কমানোর জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ দিতে শুরু করেছে। তারা অনেক দিন ধরেই এই দাবি জানিয়ে আসছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিকে তারা তাদের দাবি আদায়ের হাতিয়ার হিসাবে এখন ব্যবহার করেছে। সরকার এখনো পর্যন্ত আমদানী শুল্ক কমানোর বিপক্ষে। শেষপর্যন্ত সরকার তার অবস্থান অটল থাকতে পারবে কিনা, সেটা দেখার বিষয়।
এক মাস পর মাহে রমজান শুরু হবে। অতীতে দেখা গেছে, রমজানকে উপলক্ষ করে ব্যবসায়ীরা আগে ও রোজার সময় খাদ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এবার ব্যতিক্রম হবে, মনে করার কারণ নেই। নিত্যপণ্যের বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ অনেক দিন ধরেই নেই। সরকার রমজানের আগে ব্যবসায়ীদের শরণাপন্ন হয়ে দাম না বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। ব্যবসায়ীরা কথা দেয়; কিন্তু কোনো বছরই কথা রাখে না। আরেকটি উদ্বেগজনক খবর হলো, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমদানী পণ্যের দাম বেড়েছে। ছোলার দাম মণপ্রতি প্রায় ৬শ’ টাকা বেড়েছে। অন্যান্য পণ্যের দাম একইভাবে বেড়েছে বা বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই। মনে করা হচ্ছে, ডলারের দাম বাড়ার পেছনে একটি চক্রের কারসাজি রয়েছে। সেই চক্রের কারসাজি সরকার ঠেকাতে পারেনি, যার খেসারত জনসাধারণকে দিতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি সরকারের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। এখন হাওর এলাকাসহ অন্যান্য এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের রক্ষা করা, তাদের কর্মের ব্যবস্থা করা, আগামী ফসল উৎপাদনের জন্য সহায়তা প্রদান করা, চালসহ পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা, যাবতীয় পণ্যের দাম ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা এবং খাদ্যের একটি নিরাপত্তামূলক মজুদ গড়ে তোলার দিকে সরকারকে মনোনিবেশ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে কোনো ব্যর্থতা আরো মানবিক বিপর্যয় অনিবার্য করে তুলবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন