সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শখের বশে টার্কি পালনে জুয়েলের মুখে সাফল্যের হাসি

| প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, ছাগলনাইয়া (ফেনী) থেকে : শখের বসে টার্কি পালন করে এখন সফলতার মুখ দেখছেন ফেনীর পরশুরাম উপজেলার আজমীর হোসেন জুয়েল। টার্কি খামার গড়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। তার টার্কি খামারের কথা জেনে খামার গড়ে তোলার জন্য অনেকেই ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন। পরশুরামের বাসপদুয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলছেন আমেরিকান টার্কি মুরগির খামার। টার্কি মুরগি বিক্রি ও বাচ্চা উৎপাদন করে কোটিপতি হয়ে গেছেন খামারের মালিক আজমীর হোসেন জুয়েল। সরেজমিনে জানা গেছে, বাসপদুয়া গ্রামে ২০১৫ সালের শেষের দিকে ১৬ শতক জায়গার উপর আল্লাহর দান টার্কি ফার্ম নামে টার্কি মুরগির খামার গড়ে তোলেন ফিস ও ফিডস ব্যবসায়ী আজমীর হোসেন জুয়েল। প্রথমে আমেরিকা থেকে ২০০ বাচ্চা এনে খামার শুরু করেন তিনি। বর্তমানে প্রায় ১ হাজার টার্কি মুরগি আছে এ খামারে। ১টি টার্কি মুরগি একটানা ২২টি পর্যন্ত ডিম দেয়। আজমীর হোসেন জুয়েলের ভাই আবদুল হালিম নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করেছেন হ্যাচারি মেশিন। এ মেশিনে ডিম রাখার ২৮ দিন পর বাচ্চা ফুটে। দানাদার খাদ্য ছাড়াও কলমির শাক, বাঁধাকপি ও সবজি জাতীয় খাবার খায় টার্কি মুরগি। ৪ মাস পর থেকে খাওয়ার উপযোগী হয় টার্কি মুরগি। ৬ মাসের মুরগি প্রায় ৬/৭ কেজি পর্যন্ত হয়। ১টি টার্কি মুরগির ওজন প্রায় ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়। এখানে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হয় ৮শ টাকায়। হ্যাচারি মেশিনে দৈনিক ৫০টি বাচ্চা ফুটে। ১ মাস বয়সী বাচ্চা বিক্রি হয় জোড়া সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ খামার থেকে উত্তরবঙ্গের কয়েকজন খামারী বাচ্চা নিয়ে গেছেন। টার্কি মুরগি বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে। আর এ সৌখিন পাখিটি পালনের আগ্রহ হয় জুয়েলের। টার্কি একটি বড় আকারের গৃহ পালিত পাখি। ময়ুরের মতো পেখর মেলতে পারে। জানা গেছে, ১৭শ সালে যুক্তরাজ্য ক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে টার্কি মুরগির জাত উৎপাদন করা হয়। উত্তর আমেরিকা টার্কি মুরগির উৎপত্তিস্থল। ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই টার্কি মুরগি পালন করা হচ্ছে। অনেকটা খাসির মাংসের মতোই এ মুরগির মাংসের স্বাদ। এ মাংসে অধিক পরিমাণে প্রোটিন ও কম পরিমাণে চর্বি রয়েছে। সুস্বাদু এই মুরগির রোগ-বালাই তেমন হয় না। টার্কি মুরগির পাশাপাশি তিতি মুরগি, ফ্রান্সের দেশি মুরগি, বিদেশি কোয়েল পাখি, বিভিন্ন জাতের বিদেশি কবুতরের খামারও গড়ে তুলেছেন জুয়েল। জানা গেছে, দেশের অনুক‚ল আবহাওয়া ও পরিবেশে পশু-পাখি পালন অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজ। আবার কিছু প্রাণী আছে যারা দ্রæত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। আর টার্কি প্রাণী সে রকম একটি সহনশীল জাত, যেকোনো পরিবেশ দ্রæত এরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। আল্লাহর দান টার্কি ফার্মের স্বত্ব¡াধিকারী আজমীর হোসেন জুয়েল জানান, দেশের বাইরে থেকে বাচ্চা এনে টার্কি মুরগির খামার গড়ে তুলেছিলাম। আল্লাহর রহমতে এখন ১ হাজার টার্কি মুরগি রয়েছে আমার খামারে। টার্কির খাবারের জন্য কোনো সমস্যা হয় না। দানাদার থেকে কলমির শাক, বাঁধাকপি বেশি পছন্দ করে। মাংস উৎপাদনের জন্য দানাদার খাবার দেয়া হয়। ওজন হয় প্রায় ১৬ কেজি। আর ডিমের জন্য ৭/৮ কেজি ওজন হয়ে থাকে। টার্কির রোগ-বালাই খুবই কম। বছরের ১১০টির বেশি ডিম দিয়ে থাকে। ডিম থেকে বাচ্চা হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দিতে শুরু করে। ৬ মাসের মেয়ে টার্কির ওজন হয় ৫/৬ কেজি। আর পুরুষ টার্কিগুলোর প্রায় ৮ কেজি। তিনি আরো জানান, টার্কির দাম তুলনামূলক একটু বেশি। চর্বি কম হওয়ায় অন্যান্যের পাখির তুলনায় মাংস খুবই সুসাধু। তবে বাণিজ্যিকভাবে মাংস উৎপাদন এবং টার্কি বৃদ্ধি করা হবে। উপজেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, টার্কি মুরগি এখনো পাখি শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। রোগ-বালাই ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোহামমদ মিলন ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৪:০৬ পিএম says : 0
ভাই মাসে ২০হাজার টাকা আয় করতে হলে কত পিছ টারকি দিয়ে সুরু করতে হবে। plz জানাবেন
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন