মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

ফুলবাড়ীর আম বাগানে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ

প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৯:৩৭ পিএম, ৪ মার্চ, ২০১৬

মো. আবু শহীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে
শীতের জীর্ণতা সরিয়ে ফুলে ফুলে সেজেছে ঋতুরাজ বসন্ত, কোকিলের কুহু কুহু ডাক, রঙ্গিন-বন ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে, তেমনি দক্ষিণা হাওয়া আর বাতাসে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে গেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আম বাগানগুলো। গাছে গাছে আমের মুকুলের ভরপুর ঘ্রাণ আর প্রকৃতির স্বভাবসুলভ বৈচিত্র্যে বাগানগুলোর ৬০ শতাংশ গাছেই এসেছে মুকুল। বাগান মালিক, কৃষিবিদ ও আম চাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে। আমচাষি ও বাগান মালিকরা বাগানে পরিচর্চা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্চা করে আসছেন তারা। এ উপজেলা ফজলি, মোহনা, রাজভোগ, গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষের উপযোক্ত হওয়ায় চাষিরা নিজ উদ্যোগে প্রথমে বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান সৃজন করলেও বর্তমানে তারা নিজেরাই চারা উৎপাদন করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে সুফলও পেয়েছেন অনেকে। আম চাষে সফল কৃষক উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের সামিউল ইসলাম ও মাদিলা হাট গ্রামের আবুল কালাম  জানান অপেক্ষাকৃত উঁচু এবং ধান চাষের উপযোগী নয় এমন জমিতেই আম বাগান করা হয়। তাই বাড়তি আয়ের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সুবিধাভোগীদের সুফল দেখে  অনেকেই উৎসাহিত হয়ে নিজ উদ্যোগে এমন জমিতে আমের বাগান লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন বলেও তিনি জানান। এভাবে ধীরে ধীরে উপজেলা জুড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে আমবাগান। উৎপাদিত আমের গুণগতমান ভাল হলে চাহিদাও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষককুল। উপজেলার আলাদীপুর, শিবনগর, বাসুদেবপুর এলাকায় আমবাগান বেশি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আম চাষিরা তাদের বাগানের ধরা মুকুল যাতে নষ্ট না হয় এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। আম বাগানের মালিক মহেশপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান জানায় কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আম চাষের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই কথা বলেন, আমচাষি আব্দুল আলীম। তিনি বলেন, যে জমিতে অন্য কোন ফসল হয় না সেখানে আমবাগান করলেই অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, আমের মুকুল আসার আগে ও পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এখানে তা বিরাজমান। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চেও প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমের মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা, এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। আরোও জানা যায় আমের ফলন বাড়াতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়না। সংশ্লিষ্টরা একটু সতর্ক হলেই শতভাগ ফলন পাওয়া সম্ভব। তাই  আম বাগানের সঠিক পরিচর্যা করতে আমচাষিদের সবরকম পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ অঞ্চলে আম ও লিচুর বাম্পার ফলন হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ আশা প্রকাশ করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন