সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষক ইটভাটার নির্গত গ্যাসে পুড়ে গেছে ৫০ বিঘা জমির ধান

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জয়পুরহাট জেলা সংবাদদাতা : ইটভাটা থেকে নির্গত সালফারযুক্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে কৃষকের ধান। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ভুট্টা আর পাটক্ষেত। ফসল হারিয়ে কৃষকের মাথায় হাত। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে লাভ প্রাপ্তির চেয়ে পাচ্ছে এখন ভাটা মালিকের হুমকি ধামকি। ফলে অভিযোগ করে এখন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রয়েছে আতঙ্কে। জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল জয়পুরহাট সদর উপজেলার শালপাড়ায় (থিপুর মৌজা) হারুনুর রশিদের হারুন ব্রিকস ইটভাটায় ইট পোড়ানোর আগুন বন্ধের দিন ভাটা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ভাটার হোল্ডার ডেবে গিয়ে ড্রেন তৈরি হয়ে সেদিক দিয়ে ব্যাপকভাবে সালফারযুক্ত গ্যাস বের হয়। ভাটা কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারণেই এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্যাস নির্গত হয়ে ভাটার দক্ষিণ অংশের অন্তত ৫০ বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে। এছাড়া কিছু ভুট্টা ও পাট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কৃষক পাকা ধান যখন কেটে যখন ঘরে তুলবে ঠিক তখন এমন ঘটনায় কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করে। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জালাল মন্ডলকে আহŸায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে গত ২৭ এপ্রিল তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছি এবং নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কৃষকের ক্ষতির ব্যাপারে ৯ মেয়ে সভা ডেকেছি। এদিকে গতকাল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে কৃষকের ফসল হারানোর দুর্দশা লক্ষ্য করা যায়। দরিদ্র কৃষক আব্দুর রশিদ তার পুড়ে যাওয়া ফসলের জমিতে দাঁড়িয়ে কেঁদে বলে আমার সব ধান পুড়ে গেছে, এখন আমি কি খাব। কৃষক মীর শহীদ জানান তার ২৬ শতক জমির ধান পুরে গেছে। কৃষক মজিবর, গোলাম মোস্তফা, রোস্তম আলীসহ বহুর কৃষক ক্ষোভের সাথে জানায় আমাদের ধান পুড়েছে, আমরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করে এখন প্রভাবশালী ভাটা মালিক হারুনুর রশিদের রোশানলে পড়েছি। ভাটা মালিক নিয়মিতভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৫০বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৮০০/৯০০মন ধান পুরে গেছে। এছাড়া কিছু ভুট্টা ও পাটের জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জানা যায় গত ৫ বছর আগে কৃষি জমি বেষ্টিত এলাকায় হারুনুর রশিদ ইটভাটা স্থাপন করে। ইটভাটা চালুর পর কয়েক দফা গ্যাস নির্গমনের ঘটনা ঘটে এবং কৃষকের ফসলের হানি হয়। কৃষক অভিযোগ করে প্রত্যেকবার ভাটা মালিক ক্ষতিপূরন দেবার কথা বললেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নি¤œতম ক্ষতিপূরণ দেয় কৃষকদের। ইটভাটার মালিক হারুনুর রশিদ জানান, ঝড়ের কারণে এমন বিপর্যয় ঘটেছে। ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এদিকে ধলাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ফয়েজ উদ্দিন কৃষি জমিতে ইটভাটা বন্ধের আর্জি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন