ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা : ‘দেশ, জাতি তথা মুসলিম উম্মাহ আজ এক জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন। এই জটিল পরিস্থিতিতে সঠিক কর্মপন্থা নির্ধারণ আরো জটিল ব্যাপার। তবে পরিস্থিতি যতই ভয়ঙ্কর হোক না কেন তাতে ঘাবড়ানোর কোন কারণ নেই। কেননা আল্লাহতায়ালা এরশাদ ফরমানÑ ‘যারা নিঃস্বার্থভাবে সঠিক পথের সন্ধানে বের হয়, আল্লাহপাক মেহেরবানী করে তাদেরকে সঠিক পথের সন্ধান বাতলে দেন।’ সুতরাং আমরা ঘাবড়াবো না বরং দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সঠিকপন্থা নির্ধারণের জন্যে আল্লাহপাক মেহেরবানী করে আমাদের মাঝে যে, হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.)কে মুজাদ্দেদে মিল্লাত করে পাঠিয়েছিলেন, আমরা তাঁর অনুসরণ করবো।’ গতকাল শুক্রবার বাদ মাগরিব ঝলকাঠির ঐতিহ্যবাহী নেছারাবাদ দরবার শরীফে দুই পর্বে অনুষ্ঠেয় বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ-মাহফিলের ২য় পর্বের উদ্বোধনী ভাষণে হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুরের একমাত্র ছাহেবজাদা, হযরত মাওলানা মুহাম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী হুজুর লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের উদ্দেশে উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি বলেন- ‘হাদীয়ে যামান, মুজাদ্দেদে মিল্লাত হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.) বর্ণিত সপ্ত-নির্দেশনার মধ্যেই রয়েছে সংকট উত্তরণের পথ, রয়েছে ইহ ও পরলৌকিক মুক্তি ও কল্যাণ। সেই সপ্তনীতি হচ্ছে এই ঃ ১. একমাত্র আহলে সুন্নত অল-জামায়াতকে হক ফের্কা বলে বিশ্বাস করা এবং আহলে সুন্নত অল-জামায়াত বিরোধী কর্মপন্থা সর্বতোভাবে বর্জন করা; রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে আয়েম্মায়ে মুজতাহিদীন ও আয়েম্মায়ে তরীকতের অনুসৃত কর্মপন্থাকে কার্যকরী বলে বিশ্বাস করা এবং ইমাম মাহদী আ. এর আগমনের আগ পর্যন্ত হযরতে মুজাদ্দেদে আলফেছানী রহ. এর কর্মপন্থাকে নির্ভুল হিসেবে এ’তেকাদ করা; ৩. ভাবাবেগ দ্বারা পরিচালিত না হয়ে গভীর চিন্তা-ফেকেরের সাহায্যে পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করা; ৪. দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা; ৫. ব্যক্তিগত অথবা দলগত স্বার্থে কোন দল-বিশেষের অন্ধ সমর্থন ও অহেতুক বিরোধীতার পথ বর্জন করা; ৬. বিতর্কমূলক বিষয়ে গবেষক-চিন্তাবিদদের রায়ের ওপর আওলিয়ায়ে কেরামদের রায়কে প্রাধান্য দেয়া এবং ৭. সঠিক পথের রাহনোমায়ীর জন্য বিনীতভাবে আল্লাহপাকের মদদ তলব করা।’
নেছারাবাদী হুজুর আরো বলেন- ‘যতদিন পর্যন্ত মুসলমানরা এই নীতিসমূহের অনুসরণ করেছে, ততদিন পর্যন্ত তারা প্রত্যেক ব্যাপারে খোদার ফযলে সঠিক কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে সমর্থ হয়েছে। সুতরাং দেশ ও জাতিরসমূহ সংকট নিরসণে আমাদেরকেও হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. সূচিত সপ্ত নির্দেশনার অনুসরণ করতে হবে। আমরা যদি যথাযথভাবে তা পালন করি তবে নিশ্চই আমরাও কামিয়াব হবো ইনশাআল্লাহ। উল্লেখ্য, গতকাল শুরু হওয়া নেছারাবাদের এ মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন স্বাগতিক জেলা ঝালকাঠিসহ চট্টগ্রাম-সিলেট-রংপুর-মোমেনশাহী ও রাজশাহী বিভাগ এবং বৃহত্তর ফরিদপুরসহ ৩৪ জেলার প্রায় ২ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আগামী ৬ মার্চ বাদ-ফজর ২য় পর্বের আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবছরের মাহফিল-কার্যক্রম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন