রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নড়াইলে ঝড়ে বিধ্বস্ত সাত বিদ্যালয়ের পাঠদান চলে দোকান ও গাছতলায়

প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:৩৬ পিএম, ১৮ মে, ২০১৭

আতিয়ার রহমান, নড়াইল থেকে : কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে দোকানঘরে ও গাছতলায়। অনুক‚ল পরিবেশ না থাকায় ও প্রচন্ড খরতাপে ওই সব বিদ্যালয়ের দুই হাজারেরও বেশী শিক্ষার্থীরা অসুস্থতাসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। যে কারণে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। মেঘ দেখলেই বৃষ্টির পানিতে ভেজা ও ঝড়ের ভয়ে শিক্ষার্থীদের আগাম ছুটি দিতে শিক্ষকরা বাধ্য হচ্ছেন। স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে কালিয়া উপজেলার বুড়িখালী, যাদবপুর পূর্বপাড়া ও দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। মাউলী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতবাড়িয়া, পূর্ব পেড়লি ও পশ্চিম পেড়লি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়ে গেছে। যে কারণে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই সহস্রাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেড়লী ইউনিয়নের দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেডটি ঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়ায় এখন পাটদান চলছে বিদ্যালয়ের সামনের নারিকেল গাছ তলায়। একই চিত্র পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া ইউনিয়নের বুড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টিতে কোন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় পুরাতন টিনসেডের ঘরেই ক্লাস নেয়া হতো। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হওয়ায় বিদ্যালয় থেকে ৩০০গজ দূরে রাস্তার পাশের একটি দোকান ঘরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় যানবাহনের হর্ণ, বাজারের কোলাহলসহ নানা প্রতিক‚লতার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের যাদবপুর পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কালবৈশাখী ঝড়ে উড়ে যাওয়ায় সেখানেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেওয়ার কোন পরিবেশ নেই। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিকল্পভাবে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা পাঠদান চালুর রাখার চেষ্টা করছেন। এছাড়া মাউলী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতবাড়িয়া, পূর্ব পেড়লি ও পশ্চিম পেড়লি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়ে যাওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দক্ষিণ জামরিলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রজ্ঞা পারমিতা বিশ্বাস বলেন, ‘প্রচন্ড রোদে বাইরে ক্লাস নেয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। তাছাড়া নারিকেল গাছের নিচে ক্লাস নেওয়াটাও অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে এখন ভয় পাচ্ছেন। দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে বেকায়দায় পড়েছি।’ পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান বলেন, ‘ভেঙ্গে যাওয়া বিদ্যালয়টি স্থাপনের জন্য ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে আলোচনা চলছে। দ্রæত একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবো।’ কালিয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শেখর কুমার মিত্র বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান চালু রাখতে স্থানীয়ভাবে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি মেরামতসহ ভবন নির্মাণের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন