সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নির্মাণ শেষ না হতে ভেঙ্গে পড়েছে সীমানা প্রাচীর

সোনাহাট স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:২৬ পিএম, ২২ মে, ২০১৭


শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় সোনাহাট স্থল বন্দরের বালু ভরাট, সীমানা প্রাচীর ও অব-কাঠামো নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত¡াবধানে বাস্তবায়নাধীন কুড়িগ্রাম সোনাহাট স্থল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রায় ৪৫ বিঘা জমি অধিগ্রহন করে মাটি ভরাটসহ অবকাঠামো নির্মাণ, শেটঘর, ওয়েট স্কেল, ড্রেন নির্মাণ ও সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য সকল কাজের মোট ব্যায় বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। ইতি মধ্যে সম্পন্ন হওয়া সকল কাজের গুনগত মান নিয়ে এলাকাবাসী ও স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, স্থল বন্দরের মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ অনিক ট্রেডিং করপোরেশন মোহম্মদপুর ঢাকার লাইসেন্সে কাজ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সরকার রকীব আহম্মেদ জুয়েল ও আব্দুর রাজ্জাক। সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ৩০ দিনের মাথায় প্রায় ২শ ফিট ওয়াল সম্পূরূপে ভেঙ্গে পড়েছে। গত ১৮ মে বিকেলে এই সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ায় স্থানীয় জনসাধারনের মাঝে সকল অবকাঠামো নির্মাণ কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মাটি থেকে ১৫ ফিট উচ্চতার ওয়াল ভেঙ্গে স্থানীয় কৃষক দেল মোহাম্মদ ও আব্দুল লোকমানের ধান ক্ষেতের উপর পড়েছে। সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ার পর সাব ঠিকাদার ইট, বালু ও নির্মাণ সামগ্রী সরানোর কাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, সীমানা প্রাচীরের ফাউন্ডেশন মাত্র ২ ফিট করে দেয়া হয়েছে এবং নির্মাণ কাজে প্রথম শ্রেনীর ইট ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেনীর ইট। খোয়া ও পিকেট প্রথম শ্রেনীর ইটের হওয়ার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেনীর ইট ও ইটভাটার টুকরো রাবিশ দিয়ে। এগুলো সরবরাহ করেছেন ইট ভাটা মালিক আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা জামাল। এছাড়াও কাজে সিমেন্ট কম দিয়ে বেশি করে ভিটি বালু ব্যবহার করে কাজ করা হয়েছে। মাটি ভরাটের কাজ ভিটি বালু দিয়ে করার কথা থাকলেও এটেল মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মজিদ, রফিকুল ইসলাম, মিজু আহমেদ, জহুরুল হক, মফিজুল ইসলাম জানান, ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে কাজ সম্পন্ন হতে থাকলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। সোনাহাট স্থল বন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো তমিজউদ্দিন জানান, প্রায় ২শ’ ফিট সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়েছে। প্রায় ৪৩ কোটি টাকার কাজের ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সব কাজই নি¤œমানের। কাজের মান নিয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। সোনাহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আপনি কোন কিছু লিখলে সাব ঠিকাদার সরকার রকীব আহমেদ জুয়েল ভাইয়ের সাথে কথা বলেন। স্থলবন্দর নির্মাণ কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী রুবেল আহমেদ সীমানা প্রাচীর ও মাটি ভরাট কাজের ব্যায় বরাদ্দ জানেন না বলে জানান। প্রাচীর ভাঙ্গার বিষয়ে সাব ঠিকাদার জুয়েল সাহেবের সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডিং করপোরশনের প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ওয়াল ধসে পরার বিষয়টি অবগত আছেন বলে জানান। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও বর্গাচাষী দেল মোহাম্মদ ও আব্দুল লোকমান মিয়া জানান, আমাদের পাকা ধান ক্ষেতের উপর ওয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা ঠিকাদারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাই। এ ব্যাপারে সাব ঠিকাদার সরকার রকীব আহমেদ জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নির্মাণ ব্যায়সহ সবকিছুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডিং কর্পোরেশন জানেন। আমি শুধু মাত্র মাটিসহ মালামাল সরবরাহ করি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন