আফতাব চৌধুরী : টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর বনাঞ্চলের ভিতর করাতকল বসিয়ে অবৈধভাবে গাছ কেটে বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে, এ খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের পর টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ ২৫টি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এ সংবাদ পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের নির্দেশও প্রদান করেন।
বন বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীদের যোগসাজসে সখিপুর ছাড়াও সারাদেশে হাজার হাজার অবৈধ করাতকল বসিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই শুধু নয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাস্তার পাশে ও ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে অবাধে। এতে উজাড় হচ্ছে দেশের বনাঞ্চল। লক্ষ করলেই দেখা যায়, সংরক্ষিত বনভূমির সামনের দিকে ২/১টি বড় গাছ আছে আর ভিতরে আছে গাছের গোড়া অর্থাৎ বড় বড় গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে।
বৃক্ষনিধন ও বনাঞ্চল উজাড়ের খবর প্রায়শই পত্র-পত্রিকায় চোখে পড়ে। কিছুদিন আগে এমন একটি খবর প্রকাশিত হয় ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিকে। খবরে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সিলেট বন বিভাগের অধীনে বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সমানে গাছ কাটা চলছে। একশ্রেণীর অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর লোভের কারণে বন থেকে কোটি কোটি টাকার কাঠ ও বাঁশ অবৈধভাবে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সরকার ইতিপূর্বে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও বনজ সম্পদ রক্ষার্থে গাছ কাটা নিষিদ্ধ করেছে। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল। সরকারের এ শিথিলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কিছু সংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশের বনজ সম্পদ উজাড় করে চলেছে এবং সারাদেশের বনাঞ্চলকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যে মুহুর্তে গোটা বিশ্ব সে^াচ্চার সে মুহুর্তে এমন খবর আমাদের জন্য ভীষণ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য বনজ সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের প্রায় ৫ হাজার বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বনাঞ্চল রয়েছে। এ বনাঞ্চল দেশের মোট জমির ৭ ভাগ মাত্র। দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ থাকার কথা ৩০ ভাগ, কিন্তু আমাদের তা নেই। উপরন্তু এ ৭ ভাগ বনাঞ্চল থেকে নির্দয়ভাবে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। যেভাবে বৃক্ষ নিধন ও বনাঞ্চল উজাড়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে বনাঞ্চলের পরিমাণ ৭ ভাগ আছে কি-না, তাতেও যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটানো ছাড়াও বৃক্ষ এদেশের প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশকে বহুলাংশে প্রভাবিত করে। বনভ‚মি বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে, বন্যা, খরা, জলোচ্ছ¡াস ইত্যাদি হতে প্রাণিক‚লকে রক্ষা করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃক্ষ ও বনাঞ্চলের অভাবে প্রায় প্রতি বছরই আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য বনাঞ্চল সম্প্রসারণ করা ছাড়া কোন গতি নেই। আর যদি থেকেও থাকে তাহলে সেটা আমাদের মতো দরিদ্র দেশের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়। বস্তুত বনজ স¤পদের যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণের উপর আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বহুলাংশে নির্ভর করে। অন্য একটি খবরে জানা যায়, সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, সাতগাঁও, জুরী, সিলেটের টিলাগড়, খাদিম নগর এলাকার বনাঞ্চল হতে বন বিভাগের কিছু সংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেও যোগ সাজশে চোরাকারবারীরা কাঠ কেটে অবাধে চোরাই পথে বিক্রি করে চলেছে। হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। চোরাই কাঠের বেশিরভাগই অবৈধভাবে বসানো স’মিলগুলোতে জড়ো করে তা করাতের মাধ্যমে সাইজ করে সড়ক ও নদী পথ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে। বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে দৈনিক ২-৩ লাখ টাকার কাঠ কাটা হয় বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়। এতে সিলেট অঞ্চলের বনাঞ্চল সংকুচিত হয়ে আসছে এবং এভাবে চলতে থাকলে সিলেট বিভাগের বনভ‚মির অস্থিত্ব হুমকির সন্মুখীন হয়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে এক হাজারের মতো স’মিল রয়েছে, যার বেশির ভাগই অবৈধ, কোন কাগজ-পত্র নেই। এছাড়াও নতুন নতুন স’মিলও গজিয়ে উঠছে। আরো জানা যায়, সরকারের স’মিল লাইসেন্স বিধিমালা ১৯৯৮-এর ৮(১) ধারায় সুপষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত ও অন্য যে কোন ধরনের সরকারি বনভ‚মির সীমানার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন স’মিল স্থাপন ও পরিচালনা করা যাবে না (পৌর এলাকা ছাড়া)। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, সরকারের এ বিধিমালা লংঘন করে এক শ্রেণির প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ চোরাই কাঠ ব্যবসায়ী বন বিভাগের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে সরকারের অধ্যাদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অহরহ নতুন নতুন স’মিল বসাচ্ছে। সূত্রমতে, অবৈধ এসব স’মিল বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য এজেন্সির লোকজন মোটা অংকের মাসোহারা পেয়ে থাকে। সিলেট শহর ও তার আশেপাশে অনেকগুলো অবৈধ স’মিল রয়েছে।
সরকার বৃক্ষ রোপণের জন্য ব্যাপক কর্মসুচী গ্রহণ করেছে। বৃক্ষমেলা ২০০৯ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিজন নাগরিককে অন্তত ১টি ফলদ, ১টি বনজ ও ১টি ঔষধী গাছের চারা রোপণ করে ২০১৫ সালের মধ্যে দেশের বনভূমির পরিমাণ ৭ থেকে বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তা তো বাস্তবায়ন হয়ইনি বরং দিনে দিনে বনভূমির পরিমাণ সংকুচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এবং পরিবেশকে সুস্থ, সুন্দর, সবল ও প্রাণিক‚লের বসবাসোপযোগী করার লক্ষ্যে জনগণকে সচেতন করে তোলার জন্য গণমাধ্যমগুলোও যথাসাধ্য প্রচার কার্য চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু লাভ খুব একটা হচ্ছে বলে মনে হয় না। বৃক্ষ রোপণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বনভ‚মি স¤প্রসারণের ব্যাপারে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ হরহামেশা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা উচ্ছেদ করে সকল পর্যায়ের নাগরিককে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে না পারলে শুধু বিবৃতি বা বক্তৃতা দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে না। জানা যায়, বন বিভাগের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বনভ‚মি উজাড় হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেও কোন ফল পাওয়া যায় না। এমতাবস্থায় প্রশ্ন জাগে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিরব বা উদাসীন কেন? তাহলে কি ধরে নেয়া যায়, তারাও এ ব্যাপারে জড়িত? প্রকৃত অবস্থা যা-ই হোক, এর কোনটাই আমাদের জন্য কল্যাণজনক নয়। তাদের দুর্নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ। জানা যায়, বন বিভাগ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় বনাঞ্চল সৃষ্টির জন্য প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে থাকে। বিভিন্ন স্থানে মৌসুমের শেষ পর্যায়ে গাছের চারা রোপণ করা হলেও এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন। এমনকি একটি গাছের চারা রোপণ করার পর একটি বছর অতিবাহিত হলেও এ গাছের চারাটির ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হয় না। যার ফলে বনাঞ্চল সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যয় করা টাকার ১০ ভাগও যথাযথভাবে কাজে আসছে না। রোপণ করা চারা অবহেলা ও অযত্মে অকালে মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা ও রাস্তার পাশে গাছের চারা রোপণ না করেও বিল করে টাকা উঠানো হয় এমন অভিযোগও রয়েছে। সময় মতো বৃক্ষচারা রোপণ না করা, দুর্নীতি-অনিয়ম, অন্যদিকে রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কতটুকু কার্যকর ভ‚মিকা পালন করা হচ্ছে তা ভেবে দেখার ব্যাপার।
মরুর দেশগুলোতেও আজ প্রচুর বৃক্ষচারা রোপণ করা হচ্ছে। বনাঞ্চল সৃষ্টির প্রয়াস চলছে অব্যাহত গতিতে আর তার বিপরীতে অত্যধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত আমাদের দেশে বৃক্ষ নিধন করে বনভ‚মি উজাড় করা হচ্ছে। মানুষের বসবাসের জন্য যেমন বাড়িঘরের প্রয়োজন পরবর্তী পর্যায়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্যও বনভ‚মির প্রয়োজন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানুষের প্রয়োজনে বহু অরণ্য বৃক্ষহীন হয়ে পড়লেও তারা আজ বনাঞ্চল স¤প্রসারণ ও সংরক্ষণের জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। আমরা জানি, গাছ কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে তার বিনিময়ে অক্সিজেন সরবরাহ করে প্রাণিকুলের বাঁচার পথ সুগম করে। গাছ অক্সিজেন সরবরাহ না করলে এ পৃথিবীতে মানুষ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগী, পশু-পাখি কিছুই থাকবে না। বিরাণ হবে সারা পৃথিবী। আমাদের দেশে গাছ-পালার অভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিরূপ ও বৈরী হয়ে উঠছে। এ অবস্থা মোকাবেলা করতে আমাদের অবশ্যই যেখানে সম্ভব গাছের চারা রোপণ করতে হবে। আমাদের অফিস-আদালত, কল-কারখানা, রেল ও সড়ক পথের উভয় পার্শ্বে, বেড়ীবাঁধে, বসতবাড়ির আঙ্গিনায়, সরকারি খাস জমিতে এবং চা-বাগানের অনাবাদী ভ‚মিতে বৃক্ষ রোপণ করে বনাঞ্চল সৃষ্টির প্রয়াস চালাতে হবে। আমরা যদি তা না করি তাহলে শূন্যতার সৃষ্টি হবে, বনাঞ্চলের নিবীড়তা কমবে, সারা দেশ ধূ ধূ প্রান্তরে পরিণত হবে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বৃক্ষরোপণ করে বনাঞ্চল সৃষ্টির ব্যাপারে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে আসছি। সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছি সরকারকে। ছোটকাল থেকেই আমি গাছপালার ব্যাপারে আগ্রহী। ১৯৯৮ সালে বৃক্ষরোপণে আমাকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার হাতে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কার প্রদান করেন। প্রায় ২৫ বছর থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে জাতীয় পত্রিকায় আমার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে। সরকারকে প্রতি বছরই আমি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি লিখিতভাবে। এ কমিটির একজন সদস্যও আমি। আমি গত ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ এবং একই বছরের ৩০ মে দেশ ও জাতীর স্বার্থে বন সংরক্ষণের লক্ষ্যে দেশের অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ এবং করাতকলের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের করাতকল বিধিমালা সংশোধনের আবেদন জানিয়েছি, এর কপি পরিবেশ ও বনমন্ত্রী, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল অফিসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেছি। আমার পরামর্শগুলো নিম্নরূপ:
১) সারাদেশে অবৈধভাবে স্থাপিত সকল করাতকল অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২) বৈধ লাইসেন্সধারী করাতকলে যাতে অবৈধভাবে গাছ কেটে ব্যবহার করা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। কঠোর হস্তে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, চা-বাগান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালত, রাস্তার পাশের গাছপালা সংরক্ষণ করতে হবে।
৩) অবৈধভাবে গাছ কর্তনকারী এবং করাতকলের মালিক ও সাহায্যকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৪) বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৫) প্রতি উপজেলা সদর বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্রে ১ বা ২টি মাত্র করাতকল থাকার বিধান চালু করতে হবে। উল্লেখ করা প্রয়োজন, সিলেট বিভাগেরই কোন কোন স্থানে বা উপজেলায় অথবা শহরে এক কিলোমিটারের ভিতর ৩/৪টি করাতকল বর্তমানে আছে এবং তাদের অবৈধ ব্যবসা এভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
৬) বন বিভাগে সৎ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ, লোকবল বৃদ্ধি এবং তাদের কার্যক্রম মনিটরিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। স্ব-উদ্যোগে সামাজিক বনায়নে সাধারণ মানুষদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৭) আরো বেশি করে নার্সারি স্থাপনে প্রয়োজনে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ এর ব্যবস্থা করতে হবে। কেন্দ্রীয় বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি নার্সারিগুলো হতে প্রচুর গাছের চারা স্বল্পমূল্যে বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, উপরে বর্ণিত পরামর্শগুলো সরকার যথাশীঘ্র সম্ভব বাস্তবায়ন করলে দেশের বনাঞ্চল শুধু রক্ষাই হবে না বাড়তেও থাকবে বনভূমির পরিমাণ। পরিবেশ হবে সুন্দর, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জৈববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে, বন জঙ্গলে পশু-প্রাণির বিচরণ বৃদ্ধি পাবে, দেশ হবে সম্পদশালী।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট; বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার (১ম স্বর্ণপদক) প্রাপ্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন