শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শ্রীপুরে অননুমোদিত ব্যাটারির কারখানা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি

| প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : গাজীপুরের শ্রীপুরে চায়না মালিকানাধীন কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই ব্যাটারি উৎপাদনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরিশোধিত ও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে দিনের পর দিন ব্যাটারি উৎপাদন করায় এলাকায় বসবাস করাই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশ রক্ষায় একাধিকবার কারখানা বন্ধের দাবি করে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও জানা যায়। কারখানাতে পুরনো ব্যাটারি ও সীসা গলানোর ফলে বাতাসে ঝঁঝালো গন্ধে এবং বিষাক্ত আবহাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা শ^াসকষ্ট, বমি ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি পরিবেশ দূষনের ফলে বহু গরু ছাগল ও পশুপাখি মারা গেছে।
জানা যায়, পৌর শহরেরর আনসার রোডের চেয়ারম্যান বাড়ী এলাকায় জেলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানী লিমিটেড নামক কারখানাটি গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে অপরিশোধিত ও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ব্যাটারি উৎপাদন করছে।
স্থানীয় কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, বাইরে থেকে পুরনো ব্যাটারি সংগ্রহ করে কারখানার ভেতরে সেগুলো পোড়ানো হয়। কারখানার আশপাশে ফসলি জমি ও বেশ কয়েকটি শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার কারখানা স্থাপনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
কারখানার পার্শ্ববর্তী কেওয়া পূর্বখন্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুমা ইয়াসমিন জানান, কারখানার ভেতরে এসিড ও সীসার ঝাঁঝালো গন্ধে আশেপাশের বাতাস দূষিত হয়। যার ফলে মানুষের শ^াসকষ্ট, পেটে ব্যাথা এমনকি এ পরিবেশে বেশিক্ষণ থাকলে চোখে ঝাপসা দেখা যায়। তিনি বলেন, গত সপ্তাহ খানেক আগে পঞ্চম শ্রেণীর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক একই সময়ে বমি শুরু করেন। নাদিয়া নামে একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিদ্যালয়ে এসে অভিযোগ করেছেন তার মেয়ে বাসায় সুস্থ্য থাকে এবং বিদ্যালয়ে অবস্থান করলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক অভিভাবক কারখানার কারণে সৃষ্ট পরিবেশের জন্য তাদের সন্তানদের বিদ্যালয় থেকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছেন। একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক খলিলুর রহমান জানান, কারখানার আশপাশের গাছ ও লতাগুল্মের পাতা ফুটো হয়ে পড়ে।
এলাকাবাসী রায়হান প্রধান বলেন, পরিবেশ নিয়ম না মেনে কারখানার ভেতর সীসা গলানো হয়। গাছপালাও মরে যাচ্ছে। গত দুই মাসে ঘাস খেয়ে স্থানীয় কৃষক মজিবুর রহমানের তিনটি গরু মারা গেছে। এক বছরে কারখানা আশপাশের মোট আটটি গরু ঘাস খেয়ে মারা গেছে। কারখানার উৎপাদিত পন্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই এমন হয়েছে।
এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে কেউ কথা বলতে চায়নি। কারখানায় কর্মরতরা চীনের অধিবাসী।
পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুরের উপ পরিচালক সোনিয়া সুলতানা বলেন, কারখানাটি অবস্থানগত অনুমতিপত্র নিয়েছে কিন্তু পরিবেশগত কোনো ছাড়পত্র নেয়নি। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে কারখানার বিরূপ প্রভাব নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণেই পরিবেশ ছাড়পত্র আটকে আছে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনা আকতার বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেলে তদন্ত টিম গঠন করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন