রেবা রহমান, যশোর থেকে
প্রতিবন্ধী নয়নের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার অভিভাবকরা চিন্তিত ছিল। স্কুলে না দিয়ে বাড়িতে রাখতো ছেলেকে। কেননা স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের সাথে তার ছেলে লেখাপড়া করতে পারতো না। সবাই তাকে নিয়ে হাসাহাসি করত। সে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মোহিনীকাটি গ্রামের দরিদ্র ইসরাফিল মোড়লের প্রতিবন্ধী ছেলে। এরই মাঝে গত শনিবার ঝিকরগাছা প্রতিবন্ধী স্কুল উদ্বোধন হয়। নয়ন সেখানে ভর্তি হয়েছে। তার মা জাহানারা খাতুন জানান, তার সন্তানকে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করেছি। এই আশা করছি এই স্কুল আমার ছেলেকে শিক্ষার আলো দেখাবে। আগে সে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। একই কথা জানান, গ্রামের সোহাগ হোসেনে স্ত্রী পারুল খাতুন ও কীর্তিপুর গ্রামের সুমন রানার স্ত্রী হালিমা সুলতানা। তারাও ওই স্কুলে নিজেদের সন্তানকে শিক্ষার আলো দেখানোর জন্য ভর্তি করেছেন। ঝিকরগাছা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন নামে একটি সংস্থা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতায় এই স্কুলটি গড়ে তুলেছেন। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির জানান, প্রথম শ্রেণী দিয়ে স্কুলটির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইচ্ছা আছে ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত এটি বর্ধিত করব। নিজেদের অর্থে এবং সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা নিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করব। মোট ২৫ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে নিয়ে এর কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। যারা এতদিন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। স্কুলটির উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর। ঝিকরগাছা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের সভাপতি সাহিত্যিক হোসেন উদ্দিন হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক পতœী রুনা লায়লা, ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানা, পৌর মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল, ঝিরকরগাছা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ প্রমুখ। প্রধান অতিথি বলেন, প্রতিবন্ধীরাও সমাজের মানুষ। তারা সমাজের বোঝা নয়, বরং প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে প্রতিবন্ধীরাও সমাজ বির্নিমাণে ভূমিকা রাখবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন