কুমিল্লা উত্তর সংবাদদাতা : কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার অভ্যন্তরে মেঘনা নদীর ভাষানিয়া দড়িরচর, সেনেরচর ও সাপমারা চরেরগাও মৌজার বিশাল বালু মহাল লিজ না দেয়ার জন্য এবং আশপাশের এলাকা থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সাত্তে¡ও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী বালুদস্যু সিন্ডিকেট স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আতাত করে বালু উত্তোলন করছে বলে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে আশপাশের রামপ্রসাদেরচর, বরুইয়াকান্দি, নলচর ও মৈশারচর সহ ১০টি গ্রামের মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ও শত শত একর ধানি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার মহা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এরই মধ্যে রামপ্রসাদেরচরসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার মেঘনা নদীর ভাঙনের কবলে পরে বসতভিটে হারিয়ে এখন নিঃস্ব মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এখান থেকে বালু উত্তোলনের ফলে এই অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন যাবৎ মেঘনা নদী ভাঙনের যন্ত্রনা সইতে হচ্ছে। ফলে নদী ভাঙন থেকে রক্ষার্থে বালুচোরদের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন ফুঁসে উঠছে। বালু উত্তোলন বন্ধ না করলে যে কোন মূহুর্তে বালুদস্যু ও এলাকাবাসীর মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ বাধার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার সরজমিন মেঘনা উপজেলার অভ্যন্তরে মেঘনা নদীর বালু মহালের আশপাশের এলাকায় গেলে এসব তথ্য চিত্র ফুটে উঠে। এলাকাবাসী জানায়, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ভাগিনা ও কিছু আস্থাভাজন লোক বড় বড় ড্রেজার দিয়ে উক্ত মৌজাগুলোর পাশের কোদালিয়ারচর এলাকায় বালু উত্তোলন করছে। তবে তারা দিনের ফাঁকে-ফুকে বালু উত্তোলন করলেও অতি গোপনে রাতে ওই তিনটি মৌজার অভ্যন্তরে ঢুকে বালু উত্তোলন অব্যাহত চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়, গত ৯ এপ্রিল ২০১৭, মেঘনা উপজেলার একটি সমাজসেবী সংগঠন উত্তরণ ক্লাবের সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ মহসিন নদী ভাঙনের কবল থেকে উক্ত গ্রামগুলোকে রক্ষার জন্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরে ১১ এপ্রিল এক শোনানিতে হাইকোর্ট উক্ত বালু মহাল লিজ না দেয়ার জন্য এবং এর আশপাশ থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য সরকারকে ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু ওই বালু সিন্ডিকেট হাইকোর্টের নির্দেশের তোয়ক্কা না করে বালু উত্তোলন অব্যাহত চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েকটি গ্রামের লোকজন তাদের ভিটে-মাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মহাআতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। রিট আবেদনকারী হোসাইন মোহাম্মদ মহসিন ইনকিলাবকে বলেছেন, বালু দস্যুরা খুবই ভয়ঙ্কর যে, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশও মানছে না। তিনি বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার তাদের ভিটে-মাটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব মানবেতর জীবন যাপন করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন