মুরশাদ সুবহানী, পাবনা থেকে : পাবনায় ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। বিপনী বিতানে ক্রমেই ক্রেতাদের ভীড় বাড়ছে। এই ভীড় আরো বাড়বে রাজধানী থেকে পাবনার লোকজন নিজ জেলায় আসলে। বিশ রমজানের পর থেকেই ঈদ বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার লংঘিত হচ্ছে কিনা সেটা মনিটরিং করছে ভোক্তা অধিকার দপ্তরের কর্মকর্তাগণ। অভিজাত শপিং সেন্টার থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানে ক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে। নি¤œ আয়ের মানুষ আগের মতই সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেটে যাচ্ছেন। অভিজাত দোকান থেকে পছন্দের জিনিস কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। এই মার্কেটে আবার ধনাট্য ব্যক্তিদেরও দেখা যাচ্ছে। তারা টাকা-পয়সার অভাবে নিজের এবং পরিবারে সদস্যদের জন্য কোন পোশাক, জুতা-সেন্ডেল কিনছেন না। বাড়ির কাজের মানুষের জন্যে কিনতেই তাদের এই মার্কেটে পদধুলি পড়ছে। এবার লক্ষণীয় দিক হেেলা পাবনার বাজারে ভারতীয় পোশাকের তেমন আধিপত্য নেই। তবে চীন, থাইল্যান্ড ও দেশের গার্মেন্টেস তৈরী প্যান্ট-শার্টের চাহিদা রয়েছে। এবার ভারতীয় কোন নায়িকার সিনেমা বা সিরিয়ালে পরিধান করা পোশাকের নামে কোনো পোশাক আসেনি। পাখি ড্রেস, ফ্লোর টাচ ঝিলিক, বাহুবলির মতো পোশাকের বিপরীতে এবার বাজার দখল করেছে দেশী পোশাক। তবে ফ্লোর টাচ পোশাক অনেকে স্থানীয় কাটার মাস্টারকে দিয়ে তৈরী করে নিচ্ছেন। পাবনা শহরের শাড়ি-কাপড়ের দোকানে আগের মতই টাঙ্গাইল শাড়ি, পাবনার তাঁতে বুনন শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ হলো পোশাকের দাম বেশী চাওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এটা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, খুব বেশী দাম নেওয়া হচ্ছে না। তাদের বক্তব্য, ব্যবসা চলছে, ব্যাংক লোনের উপর। কর্মচারী বেতন, দোকান ভাড়া, ব্যবসায়ীর নিজের খরচ, বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংকের সুদ, পন্য আনার খরচ সব যোগ করে তাদের যাতে লোকসান না হয় সেই অনুপাতে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা খুব বেশী নয়। পাবনার সেঞ্চুরী মার্কেটের তাল ও ইউরোসের সত্বাধিকারী সুজন জানালেন, এবার শীতের বস্ত্র তুলে শুধু তিনি নন, অনেক ব্যবসায়ী বিক্রি করতে পারেননি। কারণ শীত দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এই সব কাপড়-চোপড় আটকে গেছে। ফলে ক্যাশ টাকা আসেনি। ঈদের সামনে যে সব শার্ট-প্যান্ট তোলা হয়েছে, তা যৌক্তিক দামের মধ্যেই আছে।
পাবনা শহরের নিউমার্কেট, রবিউল মার্কেট, খান বাহাদুর শপিং মল, স্টার কমপ্লেক্স হাজী মার্কেট, হুমায়রা মার্কেট, সেভেন স্টার, এ.আর প্লাজা, নিউ পয়েন্ট, পৌর হকার্স মার্কেট, নিক্সন মার্কেট, আওরঙ্গজেব সড়কের দোকান, মহিলা কলেজ রোডসহ বিভিন্ন অভিজাত মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভীড়। পছন্দের পোশাক কিনতে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ক্রেতারা ঘুরছেন। গতবার ঈদে তেমন দাম-দর করেননি ক্রেতারা এবার দাম-দর করছেন। ব্যবসায়ীর চাহিদা সাথে দাম-দর করে কমানোর চেষ্টা করছেন। অনেকে ব্যবসায়ী চাহিদার চেয়ে কিছু কম দাম রাখছেন। যারা মানছেন না, ক্রেতা সাধারণ সেই দোকান ত্যাগ করে অন্যত্র যাচ্ছেন। ফুটপাতে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ব্যান্ডের জুতা-স্যান্ডেলের দাম আগে স্থিতিশীল ছিল না; এবারও নেই। এরা যার কাছ থেকে যেমন পারেন সেই দামে বিক্রি করছেন। তবে নামী-দামী কোম্পানীর জুতা স্যান্ডেলের শো-রুমে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করছেন। আগের চেয়ে খুব একটা বাড়েনি। অল্প আয়ের মানুষ সব সময় মার্কেটে এসে পোশাক কিনতে হিমশিম খায়। এবারও তাই হচ্ছে। যারা শপিং মলে যেতে পারছেন না তারা ভীড় করছেন ফুটপাতের দোকানে। কাপড়ের দোকানের পাশাপাশি সেন্ডেল, প্রসাধনী ও টেইলার্সের দোকানে ভীড় বেড়েছে। অনেক টেইলার্স শেষ সময় আর অর্ডার নিচ্ছে না।
বিক্রেতারা জানান, প্রায় বিশ রোজা পর্যন্ত তাদের তেমন বেচা-কেনা ছিল না। এখন বেড়েছে। গতবারের চেয়ে এবার কেনা বেচা বেশ ভালো। অনেক সুন্দর সুন্দর ড্রেস উঠেছে ঈদের বাজারে। দামও খুব বেশি নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন