শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মিরসরাইয়ে কৃষক আউশ আবাদে ব্যস্ত

| প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : আগাম ভারি বর্ষন, পাহাড়ী ঢল, জলাবদ্ধতা সহ সকল প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে মীরসরাই উপজেলার ১২ হাজার কৃষক এখন আউশ রোপনে ব্যস্ত। ইতিমধ্যে অনেক কৃষক চারা বড় যাবার পর ও জলাবদ্ধতার দরুন রোপন করতে না পারায় এবার অনাবাদি থাকছে অনেক জমি। আবার যাঁরা রোপন করেছেন সেই কৃষকগন ও শংকাং আছে এভাবে বর্ষন অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধতায় রোপনকৃত চারা ও পঁচে যাবে। সব মিলিয়ে মৌসুমী সবজির খরিপ -১ এর লোকসান কাটিয়ে আশংকায় সবাই খরিপ-২ নিয়ে ও।
শত প্রকিকূলতায় ও রমজান মাথায় করে বর্ষন শুরুর এই দিনে মীরসরাইয়ের ১২ হাজার কৃষক পরিবার সম্পন্ন করেছে আউশ চারা রোপন । রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার কষ্টের মাঝেও সোনালী ধানের খুশবোই আবার তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। চৈত্র-বৈশাখে বীজ বোপনের পর জ্যৈষ্ঠের অপেক্ষার প্রহর গুনে কৃষক। প্রকৃতির করুনার বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমার সাথে সাথে চাষ এবং চারা রোপন শুরু করে তারা। গত বছরে সময়মত বৃষ্টি না হওয়ার কারনে আউশের চারা রোপনে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে ছিলেন সাধারণ কৃষক। কিন্তু চলতি বছরে আগাম বৃষ্টি হওয়াতে আগে ভাগে আউশ রোপনে সহজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে আউশ প্রনোদনা আওতায় উচ্চ ফলন শীল নতুন প্রজাতির আফ্রিকার নেরিকা জাতের ধানের বীজ ১০ কেজি ও সারসহ অন্যান্য সামগ্রী বিনা মূল্যে কৃষি অফিস থেকে সংগ্রহ করে জৈষ্ঠের প্রথমে ৬০ শতক ও আউশের অন্যান্য জাতের আরো ৮৪ শতকসহ সর্ব মোট ১৪৪ শতক জমিতে চারা রোপন করেছেন। বর্তমানে বৃষ্টি কৃষদের প্রয়োজন থাকলে ও বেশি বৃষ্টি নিয়ে আবার আশংকা ও প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে কৃষকদের রোপন করা আউশ এর ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই এ বছরও আগের মত হলে আমরা আউশ চাষে খুব ক্ষতির শিকার হবো। এমনিতেই অনেক সবজির ক্ষেত ও এবার নষ্ট হয়ে গেছে আগাম বৃষ্টির জন্য।
ইছাখালীর এলাকার কৃষক নাদের মিয়া বলেন, বিনা মূল্যে ১০ কেজি উপশী জাতের ব্রীধান ৪৮ সংগ্রহ করে জৈষ্ঠের ১৮ তারিখে ৩০শতক জমিতে রোপন করা হয়।এ ছাড়া তিনি মোট ১৬০শতক জমিতে আউশের অন্যান্য জাতের ধানের চাষ করেছেন। বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের পানির হাত থেকে সদ্য চাষকরা ধানের চারাগুলো রক্ষাকরা গেলে আশা করছি ধানের উৎপাদন খুব ভাল হবে। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন মীরসরাইতে এবার ৭৪৫০ হেক্টর আউশ রোপন হয়েছে। অতিরিক্ত ভারি বর্ষন না হলে এবার ১০ হাজার হেক্টর রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এরপর ও ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ হেক্টর রোপা আউশ ও জলাবদ্ধতার শিকার বলে তিনি স্বীকার করেন। এক্ষেত্রে সামনে প্রাকৃতিকতা বেড়ে গেলে আরো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। আবার খরিপ ১ এর মৌসুমি সবজি পন্যতে কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে আনতে খরিপ-২ শুরু করলে সেখানে ও অতিবৃষ্টি ক্ষতির কারন হবে বলে তিনি মন্থব্য করেন।
আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির বলেন গত কয়েক বছরের কৃষিতে ক্ষতির পরিমান পুষিয়ে আনতে না পেরে এখন আমার মতো অনেক কৃষকই এখন সর্বস্বান্ত। তিনি বলেন সরকার আমাদের জন্য ভুর্তুকী বা প্রণোদনা দেবার কথা বললে ও আমরা তেমন কিছুই দেখছি না মীরসরাইতে। এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুল বুল আহমেদ বলেন আমরা সরকারি ভাবে কিছু বীজ ও সার বিতরণ করেছি। এছাড়া কৃষি ঋনের ও ব্যবস্থা রেখেছি।
এদিকে আউশ উৎপাদন বিষয়ে উপ-পরিচালক কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের আমিনুল হক চৌধুরী বলেন,আউশ আবাদ বৃদ্ধির জন্য চট্টগ্রামে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। যেসব খালি জায়গা রয়েছে সে সব জায়গায় আউশ রোপনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বর্তমান সরকার কৃষি বিষয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহন করছেন। যা কোনো সরকার বিগত দিনে এমন উদ্যোগ গ্রহন করেনি। কিন্তু প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাই এখন আশংকা কৃষকদের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন