বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

কুরআন তেলাওয়াত ও নামাজ নিয়ে গ্রিসের বিবৃতির কড়া জবাব তুরস্কের

| প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সপ্তাহের শুরুর দিকে হাজিয়া সোফিয়া মসজিদে কুরআন তেলাওয়াত ও নামাজ আদায় করায় সমালোচনা করেছে গ্রিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে গ্রিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তুরস্ক। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পবিত্র রমজান মাস এবং লাইলাতুল কদরে তুর্কি জনগণকে অভিনন্দন জানায়নি বরং কুরআন শরীফ বিকৃতকরণ করে এবং হাজিয়া সোফিয়াতে প্রার্থনার বিরোধিতা করে। লাইলাতুল কদর মুসলমানদের কাছে ভাগ্য রজনী নামে পরিচিত যা মুসলিম ধর্মীয় ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলোর একটি। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী ৬১০ সালের লাইলাতুল কদরের রাতে কুরআন মাজীদ নবী মুহাম্মদ (সা:) ’র উপর অবতীর্ণ হয়। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে আরো বলা হয়, গ্রিসের সংবিধান অনুযায়ী, ধর্মীয় স্বাধীনতা মৌলিক মানবাধিকারগুলোর একটি বলে পরিচিত অথচ তারা মুসলিমদের সাথে বিরূপ আচরণ করে। ৫৩২ খ্রিস্ট্রাব্দে রোমান সম্রাট জাস্টিনিয়ান কনস্ট্যান্টিনোপলের অধিবাসীদের জন্য এমন একটি গির্জা নির্মাণের নির্দেশ দেন, যেটি আগে কখনো নির্মাণ হয়নি, এমনকি ভবিষ্যতেও হবে না। গির্জাটি নির্মাণে কাজ করেছিল ১০ হাজার কর্মী। হাজিয়া সোফিয়ার নিমার্ণে জাস্টিনিয়ান প্রায় ১৫০ টন স্বর্ণ বিনিয়োগ করেছিলেন। এরপরও ভবনটির কিছু সংস্কার প্রয়োজন ছিল। কেননা গম্বুজটা ছিল একেবারে সমতল এবং ভূমিকম্পের কারণে যা কিছুটা বেঁকে গিয়েছিল। নির্মাণের পর থেকে হাজিয়া সোফিয়া রোমান সাম্রাজ্যের প্রধান গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হত। সপ্তম শতক থেকে সব বাইজেন্টাইন সম্রাটদের অভিষেক হত এখানে। ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে কনস্টান্টিনোপলে বাইজেন্টাইনদের রাজত্ব শেষ হয়। এর দখল নেন অটোমান সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সুলতান মোহাম্মদ এবং হাজিয়া সোফিয়া চারপাশের সকল জনগণ ইসলাম গ্রহণ করে। ফলে গির্জার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। অন্যদিকে মসজিদের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। তখন হাজিয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়। প্রথমে একটি মিনার নির্মাণের মাধ্যমে রূপান্তরের কাজ শুরু হয়। এরপর ক্রস, ঘণ্টা এবং চিত্রকর্মের পরিবর্তন করা হয়। আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৪ সালে হাজিয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে পরিবর্তিত করেন। সংস্কারের সময় পুরোনো বাইজেন্টাইন স্থাপত্য মোজাইক খুঁড়ে বের করা হয়। তবে খুব সতর্কতার সাথে এটা করা হয়েছে, যাতে পরবর্তীতে ইসলামিক যে নিদর্শনগুলো তৈরি হয়েছে সেগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যাহোক, তুরস্কের ধর্মীয় বিষয়ক অধিদপ্তর লাইলাতুল কদর উপলক্ষে ২১ জুন হাজিয়া সোফিয়ারতে কুরআন তেলাওয়াত ও প্রার্থনার আয়োজন করে যা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি প্রচারিত হয়। ২২ জুন গ্রিক বিবৃতিতে বলা হয়, হাজিয়া সোফিয়া একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। কুরআন আবৃত্তি ও নামাজ পড়ার মাধ্যমে এটি একটি মসজিদে রূপান্তর করার প্রচেষ্টা চলছে। যাই হোক, আঙ্কারা তাদের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে এথেন্স মুসলিম সংখ্যালঘু অধিকার সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্লেখ্য, গ্রিসে তুর্কি মুসলিম স¤প্রদায় কর্তৃক নির্বাচিত ইমাম মামলার সম্মুখীন হয়েছিল। গ্রিক কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চলে থেসালোনিকি শহরে মুসলমানদের জন্য রমজানের নামাজ জন্য একটি ঐতিহাসিক মসজিদ ব্যবহার করতে দেয়নি। তাই, গ্রিসের এসব প্রলাপকারী প্রশ্ন মূল্যহীন, এখনো তার রাজধানীতে প্রার্থনা করার জন্য কোনো মসজিদ খোলা নেই, আবার আন্তঃধর্মীয় সংলাপ চায়, তুর্কি মন্ত্রণালয় এও বলেছে। আনাদোলু।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md Firoz Kabir ৭ আগস্ট, ২০১৭, ১০:১৯ এএম says : 0
I want to the Islamic article daily. please sincerely sent my email address
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন