সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে : ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের সময় জব্দ অটোরিক্সা বাঁচাতে চালক নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গতকাল শুক্রবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশুলিয়ার বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ অটোরিকসার চালকের নাম শামীম সিকদার (৩৫)। তিনি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার ভাইজোড়া গ্রামের মৃত শাজাহান সিকদারের ছেলে। আশুলিয়ার নরসিংহপুরে মান্নান ভ‚ঁইয়ার বাড়িতে পরিবারসহ ভাড়া থাকেন। বাইপাইলে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আমিনুর রহমান জানান, মহাসড়কে ব্যাটারী চালিত অবৈধ অটোরিকসা জব্দ করা হয় ও ব্যাটারী খুলে রাখার অভিযান চলছিল। তখন চালক শামীম ব্যাটারী ফিরত পেতে অনুরোধ করে। না পেয়ে কোন কিছু না বলে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে এসে নিজের শরীরে কেরোশিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, এর আগেও এই ব্যক্তির (শামীম সিকদার) রিক্সা আটক করে দুই হাজার টাকা নিয়ে ছেড়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তখন চালক কথাগুলো বলছিল। রিকসা আটকের পর ব্যাটারী খুলতে না দেয়ায় ট্রাফিক কনষ্টেবল মনির চালককে লাঠি দিয়ে মারধর করে। রিকসার সামনের লাইট বাড়ি দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। পরে রিকসা ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়ে টাকা দাবি করে ওই কনষ্টেবল। তখন চালক শামীম রিক্সা রেখে চলে যায়। পাশের বগাবাড়ী বাজার থেকে কিছুক্ষন পরে কেরোশিন তৈল কিনে এনে গায়ে গামছা জড়িয়ে তৈল ঢেলে আগুন দেয়ার হুমকি দিয়ে চালক বলে, ব্যাটারীসহ রিকসা ফেরত না দিলে শরীরে আগুন ধরিয়ে মরে যাব। তখন কনষ্টেবল মনির তাকে উল্টো দিয়াশলাই এগিয়ে দিয়ে বলে ‘দে আগুন ধরিয়ে দে’ দেখি তোর কত সাহস। তখন সাথে সাথে শামীম শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাৎক্ষন লোকজন এগিয়ে এসে পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে ফেলে। দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আমিনুর রহমান বলেন, তার রিকশা (শামীম সিকদার) আটকের সময় আমি কাছে ছিলাম না। থাকলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। কনষ্টেবল মনির চালক শামীমকে মারধরে বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেছি কথাগুলো মিথ্যা। কেউ হয়তো এ ধরনের কথা ছড়াচ্ছে। চিকিৎসক ডা. তরুন পাল জানান, অগ্নিদগ্ধ শামীম শিকদারের মুখমন্ডল, দুই হাত, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হলে পুলিশ একটি প্রাইভেটকারে করে তাকে নিয়ে যায়। আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, ঘটনাটি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন