শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

যশোরজুড়ে সবুজ পাটের সমারোহ উদ্যোগেই ফিরবে সোনালি অতীত

| প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রেবা রহমান, যশোর থেকে : যশোর অঞ্চলের পাটচাষীরা আশায় বুক বেঁধেছে। আবাদ ও উৎপাদন পরিস্থিতি খুবই ভালো। পাটচাষিদের প্রত্যাশা এবার আগেভাগেই সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তৎপর হবে। তারা ন্যায্য দাম পাবে। ফিরে আসবে সোনালী আঁশ পাটের সত্যিকারের স্বর্ণযুগ। যেসব পাটচাষী হতাশায় পাট চাষে অনাগ্রহী ছিল। গতবার একটু ভালো দাম পাওয়ায় তারা এবার পাট আবাদের দিকে ঝুকে পড়ে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী আবাদ হয়েছে। মাঠের চিত্র বলছে পাটের উৎপাদন হবে আশানুরুপ। যশোরের মাঠে মাঠে এখন পাট আর পাট।
পাটচাষিদের কথা, পাট বীজ সংগ্রহ থেকে শুরু করে চাষ, পরিচর্যা, পচন, শুকানো ও বাজারে নেয়া পর্যন্ত কষ্টের সীমা নেই। তারপর যদি দাম না পাওয়া যায় তবে রাগে দুঃখে মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করে। একথাগুলো সংশ্লিষ্টদের মাথায় রেখে মাঠপর্যায়ে তৎপর হয়ে উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত তরতে হবে। তাহলে চাষিরা আগামীতে আরো পাট আবাদ বৃদ্ধি করবে। যশোরের পতেঙ্গালী, চান্দুটিয়া, সুজলপুর, আমদাবাদ, ছাতিয়ানতলার মাঠে মাঠে কর্মরত চাষিরা জানিয়েছেন, নিকট অতীতে এতো পাট আবাদ করতে দেখা যায়নি। যারা আগে একবিঘা জমিতে পাট আবাদ করতো তারা এবার দ্বিগুনেরও বেশী জমিতে আবাদ করেছে। পাটও লকলকিয়ে বেড়ে উঠেছে।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, যশোর জেলায় এক সময় প্রচুর পাট আবাদ ও উৎপাদন হতো। এবার জেলায় মোট ২৭হাজার ৭’৬৯ হেক্টরে পাট আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। বাস্তবে পাট আবাদ হয় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টরে। সংশিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের কথা, সম্ভাবনাময় ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম কৃষির এই খাতটির দিকে সরকার বিশেষ নজর দেয়ায় হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসতে শুরুকরে। আগের চেয়ে পাট উৎপাদন বেশী হওয়ায় পাটকলগুলো সহজে পর্যাপ্ত পাট হাতে পায়। জুট মিলের উৎপাদিত চট, সুতা, কার্পেট ও বস্তা রফতানী করে যথেষ্ট সুগম হয় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর, াজার কর্মকর্তা ও পাট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, পাটের বাজারে কোন নিয়ম নীতি নেই। ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে পাটের দাম। চাষীরা অনেক কষ্টে পাট আবাদ করে ভালো মূল্যের প্রত্যাশা করে। কিন্তু বাস্তবে পাট নিয়ে হতাশা দুর হয় না। মূল্য কম ছাড়াও ওজন কম দেখিয়ে পাট ভিজা, রং ভালো নয় এমন নানা অজুহাতে আর এক দফা ঠকানো হয় সহজ সরল পাটচাষীদের। সার্বিকভাবে পাটের বাজার মনিটরিং করার ক্ষেত্রে সরকারের জোরদার ব্যবস্থাপনা নেই। সরকারের জুট মার্কেটিং বিভাগ থাকলেও মাঠ পর্যায়ে সংশিষ্টদের কোনরূপ নিয়ন্ত্রণ নেই। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয় পাট চাষীরা। মাঝখানে মুনাফা লুটছে আড়তদার ফড়িয়া ও দালালরা।
সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহলের কথা, দীর্ঘদিন পর ঘুরে দাঁড়ানো পাট শিল্প আবার যাতে মুখ থুবড়ে না পড়ে তার সব ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। পাট নিয়ে আশাভঙ্গ ঘটলে আবার গৌরব আর ঐতিহ্যের বিপর্যয় ঘটবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন