সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পারাপার

| প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : চাঁদপুরে প্রায় ৪০টি চরাঞ্চলের মানুষ উত্তাল পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিচ্ছে নিত্যদিনের প্রয়োজনে। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা এসব চরাঞ্চলবাসী প্রায়শই দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে প্রাণ হারায়। চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে সরকারি কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন নিরাপদ নৌ-যান চালুর দাবি জানিয়ে আসলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। জেলা সদর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও হাইমচর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পদ্মা-মেঘনা নদীর উপকূলে। আর এ ৪ উপজেলায় প্রায় ৪০টি চরাঞ্চল রয়েছে। এসব এলাকার মানুষ দৈনন্দিন কাজে ও চিকিৎসার জন্য জেলা ও উপজেলা সদরে আসতে হয়। তবে যোগাযোগের জন্য একমাত্র বাহন হচ্ছে ইঞ্জিন চালিত নৌকা (ট্রলার)। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু, নারী ও পুরুষ সকলেই ট্রলারে করে নিয়মিত জেলা সদরে আসেন।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলার মেঘনা নদীর সীমানা ৩৬০ দশমিক ১১ কিলোমিটার। এর মধ্যে পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া এ তিন নদীর সংঘমস্থল বড়স্টেশন মোলহেড। এ নদীগুলো তিন দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে মিশে যাওয়ায় এখানে সর্বক্ষন পানির এক বিশাল ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়। এই ঘূর্ণয়¯্রােত এলাকাটিকে জাহাজ চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। সরকারি ভাবেও চাঁদপুরকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূণ নৌপথ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে মোহনার মাঝখানে এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে গোল বৃত্তের আকারে খুটি পুতে দেওয়া হয়। এখান দিয়েই প্রতিদিন চরাঞ্চলের বহু ট্রলার যাত্রী নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দেয়।
গতকাল ৭ জুলাই দুপুরে শহরের মোলহেড ত্রিনদীর মোহনায় গিয়ে দেখা যায় বর্ষার শুরুতেই নদীর স্রোত ও ঢেউ অনেক বেড়েছে। আর এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে মাল ও যাত্রী বোঝাই করে ট্রলারগুলো তাদের গন্তব্য ছুটছে। সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের চরফতেজংপুর ইউনিয়নের মুকেন্দরচর সুরজ খান জানান, প্রতিদিন চরাঞ্চল থেকে কাঁচা তরকারি ও প্রচুর পরিমানে দুধ শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হয় চরাঞ্চলের লোকদেরকে। সবচাইতে সমস্যা হয় গর্ভবতী মায়েদের জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার ক্ষেত্রে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৩নং ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম খান জানান, বর্ষাকাল ছাড়াও সব মৌসুমেই চরাঞ্চলের মানুষ ট্রলারে করে যাতায়াত করেন। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কিছু করার থাকে না। কারণ অন্যকোন বাহন নেই জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা দিলেও অনেক সময় যাত্রী ও মলামালসহ ট্রলারগুলো ডুবে যায়। এ পর্যন্ত অনেক যাত্রী প্রাণ হারিয়েছে এবং ব্যবসায়ীরা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ। তবে আমরা প্রশাসনের কাছে বার বারই দাবি করেছি এসব চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে সরকারি কিংবা ব্যক্তি মালিকানায় নিরাপদ নৌ-যানের ব্যবস্থা করার জন্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন