মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বন্যার পূর্বাভাসে চাঁদপুরে ব্যস্ততা বেড়েছে নৌ-কারিগরদের

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে : চলতি বছর বন্যার পূর্ভাবাস পেয়ে চাঁদপুরের বিভিন্নস্থানে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কারিগররা। বন্যা ছাড়াও সাধারণত প্রতিবছরই বর্ষা এলে এমন ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। বিশেষ করে চাঁদপুর সদরের গ্রামাঞ্চলে ও বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে নৌকা তৈরির কাজ করতে দেখা যায়। গত ক’দিনে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ, বহরিয়া, বিষ্ণুপুর, সফরমালী, দাসাদী, বাকিলা, মতলব উত্তর, হাজীগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার পাশে বসে কাঠমেস্ত্রীরা বিভিন্ন জাতের কাঠ দিয়ে বিভিন্ন সাইজের নৌকা তৈরি করছেন। এসব কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা নিজেদের অর্থায়নে প্রথমে স’মিল থেকে নৌকা তৈরির উপযুক্ত বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ ক্রয় করে আনেন। সেগুলো রোদে শুকিয়ে তারপর তারা ধীরে ধীরে নৌকা তৈরির কাজ করেন। মতলব দক্ষিণ উপজেলার বড়দিয়া আড়ং বাজার ও তার পাশ্ববর্তী মোবারকদী গ্রামের চাঁদপুর-মতলব সড়কের পাশে নৌকা তৈরির সময় কথা হয় কারিগর মন্নান প্রধানীয়া, মাহাবুব ও খোকন মিয়ার সাথে। তারা দু’জন জানায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ভাটার পানি বেড়ে উঠার মধ্যে নৌকা তৈরি করেন। মাপ অনুযায়ী একেকটা নৌকা সর্বচ্চো ৭/৮ হাজার থেকে সর্বনিন্ম ৪/৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়ে থাকে। যেখানে একটি নৌকা তৈরির খরচ হয় ৬ হাজার টাকা, ওই নৌকাটি বিক্রি হয়ে থাকে ৭ হাজার কিংবা সাড়ে ৭ হাজার টাকায়। এতে তাদের আয় হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। একটি নৌকা তৈরি করতে ৩ থেকে ৫ দিন সময় লাগে। আড়ং বাজারের নৌকা তৈরির কারিগর মাহাবুব জানায়, তিনি প্রায় ১৫/১৬ বছর ধরে ওই বাজারে নৌকা তৈরি করে আসছে। যে নৌকাটি তিনি ৫ হাজার টাকা খরচে তৈরি করেন, সেটি সাড়ে ৫হাজার অথবা ৬ হাজার টাকা বিক্রি করে থাকেন। অন্যান্য কারিগরদের তুলনায় তিনি নিজেকে সুক্ষ কারিগর দাবি করে বলেন, দু’ তিন দিনে একটা নৌকা তৈরি করে ফেলেন। মতলব উত্তর উপজেলার সটাকি বাজার, বাংলাবাজার ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার নাগদা বাজার, মাছুয়াখাল বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এখন নৌকা তৈরি এবং বিক্রির ধুম পড়েছে। এ দু’টি উপজেলায় এখন নৌকার ব্যাপক চাহিদা। মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলে বছরের অধিকাংশ সময় একমাত্র বাহন হলো নৌকা। বোরোচর, চরওয়েস্টার, খুনেরচর, বাহেরচর, মহিষমারীসহ ২০টি গ্রামের রাস্তাঘাট বছরের প্রায় ৭ মাস পানির নিচে থাকে। ফলে এসব চরাঞ্চলের মানুষের সকল কাজ নৌকায় যাতায়াতের মাধ্যমেই করতে হয়। এমনকি স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ও নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। এ বছর বন্যার পূর্বাভাস দেখা দেয়ায় চরাঞ্চলের মানুষ আগেই নৌকা কিনে রাখছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন