শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ভেসে গেছে ৩ হাজার চিংড়ি ঘেরের মাছ

ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : টানা ছয় দিনের ভারী বর্ষণে সাতক্ষীরার অধিকাংশ এলাকা পানির নিয়ে ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে জেলার রোপা আমন ক্ষেত এবং বীজতলা। ভেসে গেছে কয়েক হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুর।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ২০ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করছেন। এজন্য দুই পরিমাণ জমিতে বীজতলা তৈরী করেন। কিন্ত গত কয়েক দিনের অতিবর্ষণে তার বীজতলা কোমর সমান পানিতে ডুবে গেছে। ফলে তিনি রোপা আমন চারা রোপন করা নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। একই অবস্থা তার গ্রামের অধিকাংশ ফসলী জমি। তিনি আরো বলেন, যারা গ্রীষ্মকালিন সবজি চাষ করেছে তাদের সেই সবজি ক্ষেত সম্পুর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গুনাকরকাটি গ্রামের বিশিষ্ট মৎস্য চাষি আব্দুল বারি জানান, গত ৫/৬ দিনের ভারী বর্ষণে তার ২০০ বিঘা চিংড়ি ঘের সম্পুর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে তার অন্তত ২০ লাখ টাকার রপ্তানিযোগ্য বাগদা চিংড়ি এবং ১০ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রকার সাদা মাছ ভেসে গেছে। তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তার ওই চিংড়ি ঘেরে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্ত ঘেরে মাছ ভেসে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
এ উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, একনাগাড়ে গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে তার ইউনিয়নের গাজীপুর, বলাডাঙ্গা ও কাকড়াবুনিয়া গ্রামের অন্তত ৭ হাজার হেক্টর জমির মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে কয়েক কোটি টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে বলে জানান তিনি।
আশাশুনি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সেলিম সুলতান জানান, গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণের ফলে তার উপজেলার অন্তত দেড় হাজার মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। এতে কমপক্ষে ১২ কোটি টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম সরদার জানান, গত কয়েক দিনের বর্ষণের ফলে জেলার প্রায় ৩ হাজারের অধিক চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। সেই সাথে ডুবে গেছে কয়েক‘শ পুকুর। এতে করে ১৫ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজি আব্দুল মান্নান জানান, গত ৬ দিনের ভারি বর্ষণে জেলার বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৮০০ হেক্টর রোপা আমন বীজতলা এবং ২০০ হেক্টর আমন ক্ষেত সম্পুর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। একই সাথে সবজি ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলাতে ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্ত বীজতলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় আবাদ লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হতে পারে বলে জানান তিনি। তাছাড়া এই ভারি বর্ষণে জেলার নিচু এলাকার বহু সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে গ্রী¤œকালিন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ খান জানান, গত ৫/৬ দিনের ভারি বর্ষণে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে বহু মাছের ঘের ও ফসলী জমি। তবে সরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো পর্যন্ত নিরূপন করা সম্ভব হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন