শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লক্ষ্মীপুরে টিআর কাবিখা প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির অধীনে টেস্ট রিলিফের ৩শ’ টন (টিআর) ও কাজের বিনিময় খাদ্য প্রকল্পের ৩শ’ টন (কাবিখা) প্রকল্প নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে টিআর কর্মসূচির ৭৬টি প্রকল্প ও কাবিখা কর্মসূচির ৩৬টি প্রকল্প সহ ১১২টি প্রকল্পের মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা, ডিলার সিন্ডিকেট, জনপ্রতিনিধি, সরকারদলীয় শীর্ষ কয়েকজন নেতার যোগসাজসে একটি সিন্ডিকেট টিআর, কাবিখার টাকা ভাগ ভাটোয়ারার মাধ্যমে লুটপাট করে আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। কাঞ্চনপুর হাজির পাড়া থেকে সিএন্ডবির রাস্তা পর্যন্ত মাটি ভরাট ১২টন কাবিখা, বক্তার বাড়ির ব্রিজ থেকে স্কুল পর্যন্ত মাটি ভরাট ৮ টন, সমেসপুর রেনেসা কিন্টার গার্ডেন থেকে মিঝি বাড়ি পর্যন্ত মাটি ভরাট ৮ টন, চন্ডিপুর প-িত বাড়ি ও তেলিবাড়ী সড়ক মাটি দ্বারা নির্মাণ ১০টন, চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদে সোলার স্থাপনের জন্য ১০টন, আল আমিন এতিমখানায় সোলার স্থাপন ৮টন, মেঘনা ব্রিকস পাঞ্জেগানা মসজিদে সোলার স্থাপনের জন্য ৮টনসহ ৩৬টি প্রকল্পে কাবিখার অনুকূলে ৩০০টন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়। চন্ডিপুর ক্রিয়া পরিষদের সামগ্রী ক্রয় ৪টন টিয়ার, ইছাপুর মসজিদ বাড়ির ঈদগা মাঠ উন্নয়ন ২টন টিয়ার, ইছাপুর হাজী বাড়ী মোকতব ১টন, নুনিয়াপাড়া পোস্ট অফিস ১টন, শ্রীরামপুর এবতেদায়ী মাদ্রাসা ১টন, কাঞ্চনপুর চৌধুরী বাজার হাটখোলা বাড়ির বাতরুম উন্নয়ন ২টন, দরগাবাড়ীর ব্রিজের দুপাশে মাটি ভরাট ১টন, খলীফা দর্জার আদম আলীর গাটলা সংস্কার ২টন, নবীগঞ্জ শেখের বাড়ির নামাজের ঘর উন্নয়ন ১টন, শেখপুরা নাজিমের বাড়ির ঘাটলা উন্নয়ন ১টনসহ ৭৫টি টিআর প্রকল্পের জন্য ৩০০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রকল্প সভাপতি জানান, ডিলার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, খাদ্য অফিস, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে বিভিন্ন টেবিলে টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না। প্রতি টনে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা আদায় করছে অফিস খরচ হিসেবে। প্রকল্প বাস্থবায়ন অফিসের সঙ্গে আবার খাদ্য অফিসের একটি রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই সেখান থেকে ফাইল ছাড়া হলেও খাদ্য অফিসে আবার দিতে হয় টাকা। খাদ্য অফিসের সঙ্গে ডিলারদের রয়েছে মধুর সম্পর্ক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় একে অন্যের সহায়ক। খাদ্য অফিস থেকে ডিও দেয়ার পর খাদ্যগুদাম থেকে মাল বের করে আনার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ সিন্ডিকেটের বাইরে চাল ক্রয়ের সাহস কারো নেই। বাধ্য হয়ে চাল গোডাউনে রেখেই বিক্রি করতে হয় ডিলারদের কাছে। ডিলাররা তখন সিন্ডিকেট করে মালের দাম কমিয়ে ফেলে। সরকারি মূল্য প্রায় ৩৬ হাজার টাকা থাকলেও প্রতি টন চালের দাম হয়ে যায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। স্থানীয়দের মধ্যে চন্ডিপুর গ্রামের হান্নান, নারায়ণপুরের ইসমাইলসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষুব্ধ অনেকেই জানান, প্রকল্প সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না। সুবিধা বঞ্চিত বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষোভের সাথে বলেন, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা, ডিলার সিন্ডিকেট, জনপ্রতিনিধি, সরকারদলীয় শীর্ষ কয়েকজন নেতার যোগসাজসে একটি সিন্ডিকেট টিআর, কাবিখার টাকা ভাগ ভাটোয়ারার মাধ্যমে লুটপাট করে আত্মসাৎ করে। বেশির ভাগ স্থানে প্রকল্পের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও তারা জানায়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ক কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, জুন মাস পর্যন্ত কাজ চলবে, মার্কেটে ১২/১৪ টাকার বেশি টিয়ারের চাল বিক্রি হয় না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন